অপমানে অপমানিত পর্ব ১ | Apomane Apomanito part 1 | bangla romantic story | Bangla Golpo StoryBD

 অপমানে অপমানিত Apomane Apomanito


লেখকঃ  Arian Sumon..

1st part...


 

Apomane Apomanito bangla Golpo StoryBD
Apomane Apomanito


ঠাসসসসস ঠাসসসসসস


সঞ্জিতাঃ ছোটলোক ইতরের বাচ্চা তোর সাহস কি করে হয় আমার গায়ে টাচ করার

আমিঃ মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি

সঞ্জিতাঃ খাড়া আজকেই আব্বুকে বলে তোকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর ব্যবস্থা করতেছি

আমিঃ আসলে  আপনি পড়ে যাচ্ছিলেন। ভাবলাম পড়ে গেলে ব্যাথা পাবেন তাই আমি

সঞ্জিতাঃ চুপ ছোটলোকের বাচ্চা।  তোরে কি আমি বলছি ধরতে? 

আমিঃ..... 

সঞ্জিতাঃ তাহলে ধরলি কেন?  ছোটলোকের বাচ্চা 

আমিঃ সরি আপু

সঞ্জিতাঃ আপু??


ঠাসসসসস

সঞ্জিতাঃ ছোটলোকের বাচ্চা তোকে কতবার বলছি আমাকে মেডাম বলে ডাকবি

আমিঃ সরি মেডাম আর হবেনা।  

সঞ্জিতাঃ ওকে এবারের মত ক্ষমা করে দিলাম। আম্মুকে বলে দিছ আমি কলেজে চলে গেছি 

আমিঃ আপনার খাবার রেডি খেয়ে যান

সঞ্জিতাঃ না খাব না। 

আমিঃ না খেয়ে গেলে আন্টি রাগ করবে প্লিজ খেয়ে যান

সঞ্জিতাঃ দেখ তুই বেশি কথা বলিস না। যাহ এখান থেকে। যাহ আমিই যাই


এই বলে সঞ্জিতা বেড়িয়ে গেল বাড়ি থেকে কলেজের উদ্দেশ্যে। 


কি হলো বুঝলেন না তো? বুঝিয়ে দিচ্ছি। সঞ্জিতা মানে মেডাম ওনি এবাড়ির একমাত্র মেয়ে। ওনি আজ সকালে সিড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পিচলে পড়ে যাচ্ছিল। এমন সময় আমি কাছেই ছিলাম। তাই ধরে ফেলছিলাম ওনাকে। তাই কেন ওনাকে ছুইলাম এজন্য ছোটলোক বলে গালি দিল। সঞ্জিতা এবার ইন্টার পরিক্ষা দিছে।।  সঞ্জিতা বাদে এ বাড়ির সবাই অনেক ভালো।  আমি সুমন।  আজ থেকে প্রায় দু বছর আগে আমি এ বাড়িতে আসি। আংকেল মানে সঞ্জিতার আব্বু আমাকে রাস্তা থেকে এখানে নিয়ে আসে। এবং ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি করে দেয়। যদিও ওনি আমাকে কোনো কাজ করতে নিষেধ করছেন।  কিন্তু আমার ভালো লাগেনি বিষয় টা। তাই প্রতিদানে ওনাদের বাড়ির কিছু কিছু কাজ আমি করে দেই। 


এমন সময় আন্টির ডাক। আমি আন্টির সকালের চা নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম ওনার রুমে,,,,


আমিঃ এই নিন আন্টি আপনার চা

আন্টিঃ কতবার বলছি তুই আমাকে আন্টি ডাকবিনা। আমাকে মা বলে ডাকতে

আমিঃ....

আন্টিঃ কিরে তোর গাল লাল কেন?

আমিঃ কই লাল

আন্টিঃ ওইত তোর গাল লাল। কেউ থাপ্পর দিছে তোকে?

আমিঃ আরে কি বলছেন কে মারবে আমাকে? হয়ত কাল রাতে মশায় কামড়াইছে তাই লাল হইয়া গেছে

আন্টিঃ আমি জানি সঞ্জিতা তোকে সহ্য করতে পারেনা ও কিছু করেনি তো?

আমিঃ না না আন্টি ওনি কিছুই করেনি। আপনি খান আমি যাই।  

আন্টিঃ এই দাড়া  

আমিঃ হুম বলুন

আন্টিঃ ভার্সিটি যাবিনা?

আমিঃ না মানে বাড়িতে অনেক কাজ আছে। আজকে আর যাব না

আন্টিঃ তুই ভার্সিটি যা আমি দেখব এসব

আমিঃ না মানে আন্টি

আন্টিঃ কোনো কথা নয় যা রেডি হয়ে ভার্সিটি যা

আমিঃ ওকে।  


বলছিলাম সঞ্জিতা বাদে সবাই ভালো। আংকেল কিছু দিনের জন্য দেশের বাহিরে আছে।  ওনি থাকলেও এমনি করত। 


যাহোক আমি আমার রুমে গিয়ে রেডি হলাম। তারপর কিছু খেয়ে ভার্সিটি চলে গেলাম।  


ভার্সিটি তে আমার একমাত্র বন্ধু তানভির।  তানভিরের সাথে দেখা হয়ে গেল,,,,,


তানভিরঃ কিরে কেমন আছিস

আমিঃ ভালো তুই কেমন আছিস?

তানভিরঃ আমিও ভালো।। 

আমিঃ ক্লাসের সময় হয়ে গেছে চল ক্লাসে যাই।

তানভিরঃ হুম চল।


তারপর ক্লাসে চলে গেলাম।। ক্লাস করলাম। ক্লাস শেষে হেটে হেটে বাড়ি ফিরছি এমন সময় নজর গেল একটা রেস্টুরেন্ট এ।  দেখলাম সঞ্জিতা সেখানে বসে বসে ছেলেদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।।  আর যাদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে একটা ছেলেও ভালো না। 


যাইহোক আমি বাড়ি চলে গেলাম। গিয়ে দুপুরে খেয়ে একটু বিশ্রাম নিলাম। তারপর কিছু কাজ বাকি ছিল সেগুলো করতেছিলাম।  এমন সময় সঞ্জিতা বাসায় ডুকল,,,


আমিঃ মেডাম আমার কিছু কথা ছিল শুনবেন?

সঞ্জিতাঃ বল কি বলবি

আমিঃ আপনি বাসায় মিথ্যা কথা বলে যে বাহিরে ছেলেদের সাথে আড্ডা দেন তা কিন্তু ঠিক নয়।  আন্টি আংকেল জানতে পারলে খুব দুঃখ পাবে

সঞ্জিতাঃ ওই আমি কি করব না করব তা আমার ব্যাপার তোরে কি কইছি বেশি কথা বলতে? 

আমিঃ না মানে

সঞ্জিতাঃ চুপ ছোটলোকের বাচ্চা একদম চুপ। আমার কোনো কাজে  বেশি কথা বলবিনা। 

আমিঃ মাথা নিচু করে নিলাম। 

সঞ্জিতাঃ যা নিজের কাজ কর গিয়া


আমি চলে আসলাম সামনে থেকে।  তারপর নিজের কাজেই মন দিলাম।।  কাজ করলাম। তারপর রাতে পড়ায় মন দিলাম। তারপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।  তারপর দিন খুব সকালে ঘুম ভেঙে গেল ফোনের শব্দে। চোখ খুলে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি আংকেলের কল,,,


আমিঃ আসসালামু আলাইকুম আংকেল কেমন আছেন?

আংকেলঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম। আমি ভালো তুই কেমন আছিস?

আমিঃ জী আংকেল আমি ভালো। 

আংকেলঃ শুন আমি আজকেই দেশে ফিরছি  ৪ টায় পৌছাব।  গাড়ি নিয়ে এয়ারপোর্ট হাজির হয়ে যাইছ

আমিঃ ওকে আংকেল। আমি আন্টিকেও জানাচ্ছি।

আংকেলঃ হুম জানাইছ তবে সঞ্জিতা কে জানাইতে নিষেধ করিস

আমিঃ কেন?

আংকেলঃ ওর আজকে জন্মদিন ওরে সারপ্রাইজ দিব।  আর হ্যা তোকে ফোন দেওয়ার মুল কারন হলো বাড়িটা সুন্দর করে সাজানোর ব্যবস্থা করিস

আমিঃ ওকে।  


তারপর ফোন কেটে দিয়ে যলদি আন্টির রুমে চলে গেলাম। গিয়ে দেখলাম আন্টি ঘুমাচ্ছে।   এখন বুঝলাম    আংকেল কেন আন্টিকে কল দেয়নাই। যাহোক আমি আর আন্টিকে ডিস্টার্ব না করে ।  আমার কাজ আমি শুরু করে দিলাম। ফুল সহ যা কিছু আছে অর্ডার দিলাম।  সকাল ৯ টা সঞ্জিতাকে দেখলাম বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেল। তারপর আমি বাড়ি সাজাতে শুরু করলাম।


এমন সময় আন্টি আসল।  

আন্টিঃ কিরে বাড়ি সাজাচ্ছিস কেন?

আমিঃ আংকেল আসতেছে।  আর আজকে নাকি সঞ্জিতার জন্মদিন তাই বাড়ি সাজাতে বলছে

আন্টিঃ  কই আমাকে তো বলেনি

আমিঃ আপনি ঘুমাচ্ছিলেন তাই আপনাকে ফোন দেয়নি। সকালে আমাকে ফোন দিছে

আন্টিঃ ওহ। তো কখন আসছে

আমিঃ ৪ টা বাংলাদেশে পৌছাবে

আন্টিঃ গাড়ি নিয়ে যাইছ।

আমিঃ জ্বী । 

আন্টিঃ চল আমিও তোকে সাহাজ্য করি

আমিঃ না আন্টি আপনি অসুস্থ আমিই পারব

আন্টিঃ একটু করলে কিছু হবেনা। 


তারপর আমরা সবাই মিলে বাড়ি সাজালাম। বিকাল ৪ টায় আংকেল কে এয়ারপোর্ট থেকে আমি গিয়ে নিয়ে আসলাম।  


এবার আমরা সবাই সঞ্জিতার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। বাড়িভর্তি মেহমান। সঞ্জিতা আসতে আসতে রাত করে ফেলল। সঞ্জিতা এসব দেখে অভাক হয়ে গেল। সঞ্জিতা ওর আব্বুকে দেখে দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরল। আর সারপ্রাইজ এর জন্য ধন্যবাদ দিল।।  এরপর কেক কাটা হলো। 

সবশেষে আংকেল একটা ঘোষনা দিল,,,, 

আংকেলঃ  আগামি ৩০ তারিখ রোজ শুক্রবার আমার বন্ধু আরিফের ছোট ছেলের সাথে আমার মেয়ের শুভ বিবাহ ঠিক করেছি। আপনাদের সবাইকে দাওয়াত রইল। 

এটা শুনে সবাই আরো খুশি হয়ে গেল। অনুষ্ঠান আরো আনন্দময় হয়ে উঠল। কিন্তু সঞ্জিতা রুমে চলে গেল। 


যাহোক সেদিন দিন টা কেটে গেল। পরদিন সকালে,,,, 


আংকেলঃ সুমন আজ থেকে তোর দায়িত্ব বেড়ে গেল

আমিঃ কেন

আংকেলঃ আমার মেয়ের বিয়ের সমস্থ দায়িত্ব তোর উপর দিলাম। সবকিছু দেখাশোনা তুই করবি

আমিঃ ইনশাআল্লাহ আংকেল। আমি আমার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করব। 

আংকেলঃ আমি জানি তুই পারবি।  


তারপর শুরু হলো বিয়ের প্রস্তুতি। সব বাজার করে নিলাম। সঞ্জিতাকেও খুব খুশি খুশি লাগছে। আর বাড়ির সবাই তো খুব খুশি।। 

তারপর আসল বিয়ের সেইদিন। সব মেহমান উপস্থিত। সঞ্জিতা কনে সেজে অপেক্ষা করতে লাগল। সবাই বর আসার অপেক্ষায় আছে। কিন্তু এমন সময় সব থেমে গেল। বরের বাড়ি থেকে ফোন এসেছে মেয়ে নাকি ভালো না এদিক সেদিক ছেলেদের সাথে ঘুড়ে বেড়ায়। তাই তারা এ বিয়ে করাবে না। আংকেল অনেক বুঝানোর চেষ্টা করল। কিন্তু বুঝল না। সবাই ভেঙে পড়ল। বিয়ে বাড়িটা শ্মশানের মত হয়ে গেল।  


হঠাৎ আংকেল আমার হাত ধরে আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেল,,,,


আংকেলঃ সুমন তুই আমার মানইজ্জত বাচা বাবা প্লিজ

আমিঃ আমি কিভাবে

আংকেলঃ তুই সঞ্জিতাকে বিয়ে করে নে

আমিঃ কিন্তু সঞ্জিতা তো আমাকে সহ্য করতে পারেনা

আংকেলঃ দেখবি বিয়ের পর ও ঠিক হয়ে যাবে। তুই প্লিজ আমার মানইজ্জত বাচা।  এ বিয়ে না হলে আমার মানইজ্জত সব ধুলায় লুটিয়ে যাবে।

আমিঃ আচ্ছা আচ্ছা  আংকেল আমি রাজি। 

আংকেলঃ তুই আমায় বাচালি বাবা।  


তারপর আমাকে একটা পাঞ্জাবী পড়ানো হলো। বিয়ে করে নিলাম সঞ্জিতাকে। এখন আল্লাহ জানে আমার কপালে কি আছে।।  


এখন বাসর ঘরের সামনে দাড়িয়ে আছি।  যাহোক ভয় কাটিয়ে ভিতরে ডুকলাম। 


To be continue

Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post