অপমানে অপমানিত পর্ব- ৪। Apomane Apomanito part: 4.. bangla romantic story.. story bd zyz

 অপমানে অপমানিত Apomane Apomanito 


4th part.

লেখকঃ Arian Sumon...







তারপর ডাক্তার চলে গেল।  আমি সঞ্জিতার মুখ টা  দেখতে লাগলাম। কি মায়াবি একটা মুখ।  এত রাগ আসে কোথা থেকে কে জানে।  কিন্তু ডাক্তার যা বলে গেল তা এখন কিভাবে করি। সঞ্জিতা কাপছে। কম্বলে কিছুই হচ্ছেনা। কাপছেই। তাই কোনো উপায় না পেয়ে। ইচ্ছা না থাকা সত্তেও  ওর সাথে গভির মিলনে আবদ্ধ হয়ে গেলাম। 


পরদিন সকালে আমার আগেই সঞ্জিতার ঘুম ভেঙে গেল। সঞ্জিতা ঘুম থেকে উঠে প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও পরে  যখন দেখে নিজের গায়ের জামা পাল্টানো।  তারপরেই বুঝতে পারে রাত্রে কি হয়েছে।। 


সঞ্জিতা এক চিৎকার দিয়ে বিছানা থেকে উঠে দাড়ায়। ওর চিৎকার শুনে আমারও ঘুম ভেঙে গেল। 


আমিঃ কি হইছে চিৎকার দিলা কেন?

সঞ্জিতাঃ তুই আমার সাথে কি করছিস রাতে?

আমিঃ যা করার তাই করছি

সঞ্জিতাঃ কি করছিস?  

আমিঃ  স্বামী স্ত্রী র মধ্যে যেধরনের সম্পর্ক থাকে সেটাই করছি।  

সঞ্জিতাঃ শুয়রের বাচ্চা কুত্তার বাচ্চা তুই কিভাবে করলি আমার সর্বনাশ।  


ও সোজা এসে আমার গালে থাপ্পর দিয়ে বসল দুইটা।  

আমিঃ আরে সমস্যা কি মারছ কেন

সঞ্জিতাঃ তুই আমার সর্বনাশ করলি কেন 

আমিঃ আমি তোমার জামাই। আমার হক আছে এতে সর্বনাশ এর কিছুই নাই।

সঞ্জিতা কাদতে লাগল। 

আমিঃ দেখ আমি যা করছি ভালোর জন্য করছি। তোমার কাল প্রচন্ড জ্বর ছিল। ডাক্তার ডাকার পর ওনি বলল তোমারে ওষুধ দেওয়া লাগবে না ।  এসব করলেই ঠিক হয়ে যাবে। আর দেখ তুমি ঠিক হয়ে গেছ।।  

সঞ্জিতাঃ তাই বলে তুই আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিবি

আমিঃ আমি কোনো সুযোগ নেইনাই। আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি।  


সঞ্জিতা কেদেই চলছে। 


যেহেতু কাজ টা আমি করছি। তাই আমিই ওয়াশরুমে চলে গেলাম। তারপর ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বেড় হয়ে গেলাম। কিছুক্ষন পর খাবার নিয়ে আবার রুমে প্রবেশ করলাম।। গিয়ে দেখলাম সঞ্জিতা কেদেই চলছে। উফফফ কি মেয়েরে বাবা। সামান্য একটুতেই এত কাদতে হয় নাকি। 


আমিঃ এখনও কান্না করছ কেন?

সঞ্জিতাঃ.....

আমিঃ আচ্ছা তুমি আমাকে স্বামী হিসেবে মেনে নাও তাহলেই তো হয়। সর্বনাশ এর কিছু হবেনা।

সঞ্জিতাঃ আমি তোকে জীবনেও স্বামী হিসেবে মেনে নিব না। তুই ছেলে নামের কলঙ্ক।  যে ছেলে মেয়েদের অসহায়ত্বের সুযোগ নেয় সে কাপুরুষ।  তুই একটা কাপুরুষ।  অবশ্য তোর মত ছোটলোকের বাচ্চারা আর পারে কি?

আমিঃ আজাইরা বক বক না করে। খাবার এনেছি খেয়ে নাও। 


এই বলে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলাম।  আর ভালো লাগছিল না। তাই সমুদ্র পাড়ে চলে আসলাম। হাটতেছি হাটতেছি।  নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।  বুঝতে পারিনি।  বারবার অপমান হতে কার ভালো লাগে। সঞ্জিতা কিছু হলেই বাবা মাকে নিয়ে কথা বলে ফেলে। অথচ ও আমার সমন্ধে কিছুই জানেনা। আজ খুব করে আম্মুর কথা মনে পরছে।। 


যাহোক সমুদ্র পাড়ে অনেকক্ষন হাটাহাটি করলাম। তারপর হোটেলে ফিরে রুমে গিয়ে দেখলাম সঞ্জিতা নাই। কি হলো মেয়েটা গেল কোথায়?  ওয়াশরুম বারান্দা পুরো হোটেল খুজলাম কোথাও পাচ্ছিনা। তারপর রুমে এসে বসে আছি এমন সময় হোটেলের একজন স্টাফ আসল।  


স্টাফঃ স্যার আসতে পারি

আমিঃ হুম আসুন

স্টাফঃ স্যার কি মেডাম কে খুজছেন?

আমিঃ হুম

স্টাফঃ ওনি তো চলে গেছেন

আমিঃ কোথায়

স্টাফঃ যাওয়ার সময় জিগাসা করায় বলছেন বাড়ি চলে যাচ্ছি। 

আমিঃ ওহ আচ্ছা তুমি যাও।  


স্টাফ চলে গেল। ও যেহেতু চলে গেছে তাহলে আমি আর থেকে কি করব। আমিও আমার সব গুছিয়ে বেড় হয়ে গেলাম। রিসেপশনে চাবি দিয়া বেড়িয়ে পড়লাম। 


৭ টায় সময় বাসায় পৌছালাম।  বাসায় ডুকতেই আন্টি আংকেল সামনে।


আন্টিঃ কিরে তোদের মধ্যে কি হয়েছে? সঞ্জিতা ওমনভাবে চলে আসল। এখন তুই? 

আমিঃ তেমন কিছুনা। সঞ্জিতা আমার উপর রাগ করেছে তাই রেগে চলে এসেছে।  তা মহারানি কোথায়?

আন্টিঃ নিজের রুমেই আছে।  

আমিঃ ওহ আচ্ছা আমি যাচ্ছি। 


আমি চলে আসলাম রুমে। রুমে ডুকে দেখি সঞ্জিতা কাদতেছে। 


আমিঃ কি হয়েছে তোমার এভাবে চলে আসলে কেন?  আব্বু আম্মু কি ভাবছে এখন?

সঞ্জিতাঃ আমি কি করব না করব তা কি আমি তোকে জিগাসা করব? 

আমিঃ করতেই হবে।  আমি তোমার জামাই   

সঞ্জিতাঃ তুই আমার জামাই। আমি তো মানিই না

আমিঃ যাহোক কান্না থামাও।   

সঞ্জিতাঃ....

আমিঃ আচ্ছা তুমি কি চাও বলো এখন?

সঞ্জিতাঃ আমি চাই ডিবোর্স।  আমি তোর সাথে সংসার করতে পারব না। 

আমিঃ তুমি চিন্তাভাবনা করে বলেছ তো?

সঞ্জিতাঃ হুম আমি চিন্তাভাবনা করেই বলছি।  

আমিঃ ওকে তাহলে কালকেই আমরা ওকিলের কাছে যাব ডিবোর্স  এর জন্য। 

সঞ্জিতাঃ ওকে। 


পরদিন সকালে রুমে শুয়ে শুয়ে বই পড়ছি এমন সময় সঞ্জিতা,,,  


সঞ্জিতাঃ কি হলো যাবিনা?

আমিঃ কোথায়?

সঞ্জিতাঃ ওকিলের কাছে। 

আমিঃ ওহ হ্যা। সরি আমি ভূলেই গেছিলাম। পাচ মিনিট আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি

সঞ্জিতাঃ হুম। 


তারপর ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে চললাম ওকিলের উদ্দেশ্যে। শহরের সব থেকে ভালো ওকিলের কাছে গেলাম।  ওনি দুমাস সময় নিলেন।।  


যাহোক বাড়ি ফিরলাম। সঞ্জিতাকে খুশি মনে হচ্ছে। 


সঞ্জিতাঃ এখন থেকে তুই তোর মত আমি আমার মত

আমিঃ ওকে।  


এরপর থেকে শুরু হলো একা একা চলার পথ। সঞ্জিতার আমি কেয়ার করতে চাইলেও ও সহ্য করতে পারত না। সবসময় আমাকে এড়িয়ে চলত। তবে প্রতিদিনই ডিবোর্স পেপারের কথা বলত। 


যাহোক এভাবেই দেখতে দেখতে মাসখানিক কেটে গেল।  আমারও ফাইনাল পরিক্ষা শুরু হলো। একসময় পরিক্ষা শেষের দিক। 


শেষ পরিক্ষার দিন। পরিক্ষা শেষে ওকিলের কাছে চলে গেলাম। কারন আগের দিন রাতে কল দিয়া বলেছে যে ডিবোর্স  পেপার রেডি হয়ে গেছে। তাই চলে গেলাম আনিতে। পেপার নিয়ে বাড়িতে ফিরলাম।। বাড়িতে ফিরতেই আন্টির সাথে দেখা,,,,


আন্টিঃ কেমন হলো রে পরিক্ষা?

আমিঃ খুব ভালো।  

আন্টিঃ আলহামদুলিল্লাহ।  শেষ ভালো যার সব ভালো তার। 

আমিঃ হুম সঞ্জিতা কোথায়? 

আন্টিঃ   রুমে আছে গিয়ে দেখ। 

আমিঃ ওকে। 


আমি রুমে চলে গেলাম।  রুমে গিয়ে দেখলাম সঞ্জিতা বই পড়ছে। 


আমিঃ কি করছ?

সঞ্জিতাঃ এই তো বই পড়ছি দেখছ না?

আমিঃ হুম দেখছি তো. 

সঞ্জিতাঃ পরিক্ষা কেমন হলো?

আমিঃ ভালোই।  

সঞ্জিতাঃ good boy..

আমিঃ ওহ হ্যা তোমার জন্য সুখবর আছে। 

সঞ্জিতাঃ কিসের?

আমিঃ  ডিবোর্স  পেপার রেডি। 

সঞ্জিতাঃ সত্যিইই????(ও খুশিতে আমার কাছে চলে আসল)

আমিঃ হুম এই তো পেপার ( পেপার দেখিয়ে) 

সঞ্জিতাঃ  দেখি দেখি ( পেপার গুলো আমার হাত থেকে নিয়ে) 


ও দেখে খুশিতে আমাকে জরিয়ে ধরল। পরে বুঝতে পেরে ছেড়ে দিল। 


সঞ্জিতাঃ সরি। 

আমিঃ কোনো সমস্যা নেই। 

সঞ্জিতাঃ ধন্যবাদ।  

আমিঃ এখন তো মহাখুশি?

সঞ্জিতাঃ হুম আমি অনেক খুশি। এবার আমি আমার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করব। 

আমিঃ করিও।  আল্লাহ তোমাদের সুখি রাখুক। ( কান্না পেয়ে গেল)

সঞ্জিতাঃ এ কি তোমার চোখে পানি

আমিঃ ও কিছুনা। এটা সুখের পানি। 

সঞ্জিতাঃ ওহ আচ্ছা। 


তারপর আমি আমার সব কিছু গুছিয়ে নিলাম। গুছিয়ে রুম থেকে বেড় হবার পথে,,,

সঞ্জিতাঃ ওই কোথায় যাচ্ছ? 

আমিঃ আজকের রাত টা আমার আগের রুমে কাটাব সেখানে যাচ্ছি।  

সঞ্জিতাঃ ওহ। 


তারপর আবার পা বাড়াতে যাব আর সঞ্জিতার ডাক।  আমি পিছনে ফিরতেই,,,,


To be continue

Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post