অপমানে অপমানিত পর্ব ৩য়। Apomane Apomanito part 3rd। Bangla romantic story..xyz story bd

 অপমানে অপমানিত Apomane Apomanito


3rd part

লেখকঃ Arian Sumon.







পরদিন ছুটির দিন ছিল।  


সকালে ঘুম ভাঙল দরজার ধাক্কার আওয়াজে। দরজা খুলে দেখি বাড়ির কাজের লোক ঢেকেছে খাওয়ার জন্য। আমি বললাম আসতেছি। 


তারপর খাটের দিকে তাকাতেই দেখলাম সঞ্জিতার মায়াবি মুখ টা। একেবারে বাচ্চার মত লাগছে। ইচ্ছে করছে কপালে একটা চুমু দেই। 


আমি ওরে ডাকতে লাগলাম। কিন্তু উঠছে না। তাই ওর গায়ে টাচ করে ডাকিতে লাগলাম। এমন সময় আমার হাত ধরে ফেলল। হাত টা বুকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। দেখতে ভালোই লাগছে।।  


যাহোক আমি হাত ছুটাতে চেষ্টা করলাম। উল্টা ও আমাকে টান মেরে ওর উপর ফেলে দিল। সাথে সাথেই ওর ঘুম ভেঙে গেল।  


আমি তো ভয়ে শেষ ।  আল্লাহ বাচাও আমারে।  এ জীবন মনে হয় গেল।  


ও আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। আমি সোজা খাট থেকে  পড়তে লাগলাম। নিজেকে সামলাইতে না পেড়ে গিয়ে খেলাম একটা টেবিলের সাথে ধাক্কা। সাথে সাথেই কপাল কেটে গেল।  রক্ত বেড় হতে লাগল। 


আর অন্যদিকে সঞ্জিতা    উঠে


সঞ্জিতাঃ এই ছোটলোকের বাচ্চা তোর সাহস তো কম না। তুই আমার গায়ে টাচ করলি। আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন। 


আর আমি কপাল ধরে দাড়িয়ে আছি। 


সঞ্জিতা এসে আমাকে থাপ্পর দিতে যাবে ওমনি আমি কপাল থেকে হাত দু গালে নিয়ে গেলাম। হঠাৎ সঞ্জিতার হাত থেমে গেল। বুঝলাম না কি হলো। চোখের দিকে নজর দিয়ে  বুঝলাম ওনি  আমার কপালের দিকে তাকিয়ে আছে। হয়ত বুঝতে পারছে ওর ধাক্কাতেই। 


সঞ্জিতাঃ এটা কি করে হলো?

আমি একটু সড়ে গিয়ে টেবিল টা দেখিয়ে দিলাম। 

সঞ্জিতাঃ এখানে বস ( খাটে বসিয়ে)


তারপর সঞ্জিতা আলমারি থেকে ফাস্ট বক্স টা নামাল। তারপর


সঞ্জিতাঃ এই নে স্যাভলন লাগিয়ে পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে নে।


আমি গাল থেকে হাত সড়াচ্ছি না। নিচ্ছিও না। এ মেয়েকে বিশ্বাস করা যায় না। যদি থাপ্পর দেয়। 

সঞ্জিতাঃ আরে থাপ্পর দিমুনা। ধর ব্যান্ডেজ কর। 

এবার হাত থেকে নিলাম। 


তারপর সঞ্জিতা ফ্রেস হতে ওয়াশরুমে চলে গেল। আর আমি স্যাভলন লাগানোর চেষ্টা করলাম। এমন সময় মাথায় বুদ্ধি আসল। সঞ্জিতা থাকতে আমি কেন লাগামু। ওরে দিয়েই লাগামু। অপেক্ষা করতে লাগলাম সঞ্জিতার বেড় হবার। 


কিছুক্ষন পর বেড় হলো। এসেই


সঞ্জিতাঃ কি হলো ব্যান্ডেজ করিস নাই কেন?

আমিঃ পারছিনা।

সঞ্জিতাঃ কি পারিস

আমিঃ মাথা নিচু করে বসে থাকলাম।  

সঞ্জিতাঃ দে এদিক দে। 

আমি দিলার ওর কাছে ফাস্ট বক্স ।


তারপর সঞ্জিতা স্যাভলন লাগানো শুরু করল। ও ব্যান্ডেজ করতে লাগল। আর আমার খুশি দেখে কে। আমি তো মহাখুশি। যেখানে থাপ্পর খাইয়া গাল লাল করার কথা ছিল। সেখানে  বউর আদর খাচ্ছি। ভাবতেই খুশিতে  মন ভরে উঠছে। 

ব্যান্ডেজ করা শেষে। 


সঞ্জিতাঃ এত খুশি হওয়ার কিছু নাই। আমি তোকে মেনে নেই নাই। আর আজ যেটা করছিস তার শোধ তো আমি তুলবই।  


আমিঃ এ মেয়ে বুঝল কিভাবে যে আমি খুশি হইছি? ( মনে মনে) 

সঞ্জিতাঃ নিচে আয় এখন সবাই অপেক্ষা করছে নিশ্চয়ই।  

  

এই বলে সঞ্জিতা রুম থেকে বেড়িয়ে গেল। আর আমি তো এখনও শকড।  ভাবতেই কেমন যেন লাগছে যে আমাকে সহ্য করতে পারেনা। সারাদিন শুধু অপমান করে। সেই মেয়েটিই আমারে ব্যান্ডেজ করে দিল।  আল্লাহ মনে হয় মুখ ফিরিয়ে তাকিয়েছে আমার দিকে। 


যাহোক আমি নিচে গেলাম খাওয়ার জন্য। গিয়ে দেখলাম আংকেল আন্টি সঞ্জিতা বসে আছে। আমি গিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসলাম।  


আংকেলঃ কিরে তোর কপালে কি হয়েছে?

আমিঃ ওই তো স


সঞ্জিতার দিকে তাকাতেই দেখি রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। 

আংকেলঃ কি হইল থেমে গেলি কেন? সঞ্জিতা কিছু করছে?

আমিঃ না আব্বু।  ওয়াসরুমে পিচলে পড়ে গেছিলাম। 

আন্টিঃ বেশি কিছু হয়নি তো? 

আমিঃ না না। তেমন কিছু না। হালকা একটু। 

আন্টিঃ ওকে এখন খা। 


আমি খাইতে শুরু করলাম। এমন সময় আংকেল মানে সঞ্জিতার আব্বু,,,,  


আংকেলঃ  শুন একটা কথা বলার ছিল

সঞ্জিতাঃ হুম বলো আব্বু

আংকেলঃ তুদের তো হানিমুনে যাওয়া উচিত। কিন্তু অন্য দেশের ভিষা পাইলাম না। তাই তোদের জন্য কক্সবাজারের হানিমুন যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।  


আমি তো শুনেই অভাক। ওনার মেয়ে আমাকে সহ্যই করতে পারেনা। আবার নাকি হানিমুন করব।  আল্লাহ এ কি হচ্ছে।

সঞ্জিতাঃ এত যলদির কি আছে।  আরো কিছুদিন পর যাই?

আংকেলঃ না তোরা পরশুদিনই যাবি।  আর একবছর পর যেন  আমি নানা ডাক শুনতে পারি। 


এবার আর সহ্য করতে পারলাম না। এত অভাক হলে যা হয় আর কি। কাশি চলে আসল। 

সঞ্জিতা আমার দিকে  রাগি  দৃষ্টিতে তাকাল।  আমি চুপ করে গেলাম। 


আংকেলঃ কি সুমন তোর কোনো সমস্যা নাই তো?

আমিঃ না আব্বু নেই।  ( এ সুযোগ ছাড়ে কে) 

আংকেলঃ তাহলে এটাই কথা রইল। 


আমি খাইয়া রুমে চলে আসলাম। খাবার টেবিলের কথা গুলো মাথায় ঘুরতাছে। সঞ্জিতা তো আমাকে সহ্যই করতে পারেনা। আবার ওর সাথে হানিমুন কেমনে করমু। আবার নাকি এক বছর পর নানা ডাক শুনতে চায়। কিভাবে সম্ভব?


এমন সময় সঞ্জিতা আসল,,,


সঞ্জিতাঃ ওই তুই রাজি হইলি কেন

আমিঃ আপনি তো জানেনই আমি আংকেলের কথা না রেখে থাকতে পারিনা। 

সঞ্জিতাঃ তাই বলে তুই  

আমিঃ হুম

সঞ্জিতাঃ ধুর আমাকে এটা বন্ধ করতে হবে।

আমিঃ পারলে করিয়ে দেখান।   


তারপর থেকে সঞ্জিতা অনেক চেষ্টা করল হানিমুন ট্রিপ টা বন্ধ করার।  কিন্তু কোনোভাবেই পারল না। 


অবশেষে আমার হানিমুনে চলে আসলাম কক্সবাজার।  আগে থেকেই সঞ্জিতার আব্বু সব ব্যবস্থা করে রেখছিল।  


রুমে আসতেই,,,,


সঞ্জিতাঃ তুই এখানে আমার সাথে থাকতে পারবি না। অন্য রুম ভাড়া করে নে

আমিঃ ভেবে দেখেন। 

সঞ্জিতাঃ কি ভাবব।  আমি কোনো ভিতু মেয়ে না যে তেলাপোকা দেখে ভয় পাব।

আমিঃ আমি তা বলিনাই

সঞ্জিতাঃ তো? 

আমিঃ যদি তোমার আব্বু হঠাৎ চলে আসে তখন আর এসে যদি দেখে আমি আর তুমি আলাদা তখন কি হবে? 

সঞ্জিতাঃ ব্লেকমেইল করছিস। 


আমিঃ না বুঝাচ্ছি। 

সঞ্জিতাঃ থাক তুই এ রুমেই থাক। 


রাত্র বেলা খাইয়া বিছানায় শুয়ে আছি। হঠাত সঞ্জিতা,,,,


সঞ্জিতাঃ ওই তুই এখানে শুয়ে আছিস কেন?

আমিঃ তো কোথায় শুব?

সঞ্জিতাঃ নিচে ঘুমা

আমিঃ পারব না। তোর ইচ্ছা থাকলে তুই ঘুমা

সঞ্জিতাঃ কি বললি? তুই আমাকে তুই করে বললি আবার 

আমিঃ হুম বলছি তো কি করবি?  চুপ করে ঘুমাইলে ঘুমা নাইলে রুম থেকে যা। 

সঞ্জিতাঃ তোর সাহস দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে তাই না। তোর সাহস কমানোর ব্যবস্থা করব। 

আমিঃ কি করবা?

সঞ্জিতাঃ চিৎকার করে লোক ডেকে বলব তুই আমাকে কিডনাপ করছিস।

আমিঃ হাহাহাহাহাহহা ( হাসতে লাগলাম)

সঞ্জিতাঃ হাসছিস কেন

আমিঃ সেগুরে বালি। ভূলে যেওনা তোমার আব্বুই সব কিছুর ব্যবস্থা করে দিছে। এখন তুমি চিৎকার করে তোমার আর তোমার আব্বুর মানইজ্জত নষ্ট হবে আমার কিছুই হবেনা।। 


এবার সঞ্জিতা চুপ হয়ে গেল।  আর কিছু না বলে খাটে এসে মাজখানে একটা কোলবালিশ রাখল।  


সঞ্জিতাঃ এই কোলবালিশের এপাশে আসবিনা। বলে দিলাম। 

আমিঃ আপনি না আসলেই হলো। নিজেকে সামলাও। 

সঞ্জিতাঃ ধুর আমি কোনো যাবই না।

আমিঃ মাথায় যেন থাকে। 


সঞ্জিতা আর কিছু না বলে অপরপাশ হয়ে ঘুমিয়ে গেল। 


যাক আজকে টাইট দিতে পারছি। এইটুকু বুঝছি যে একটু হলেও আমাকে ভয় পাইছে আজ। হাহা ভাবতেই হাসি পাচ্ছে আমি সঞ্জিতাকে ধমক দিছি। 


তারপর দিন সকালে উঠেই দেখি সঞ্জিতা পাশে নেই।। এ মেয়ে গেল কোথায়।  চিন্তায় পড়ে গেলাম। যলদি করে উঠে সঞ্জিতাকে খুজতে লাগলাম। রুমে পেলাম না। রুম থেকে বেড় হলাম। বেড় হয়ে দেখি সঞ্জিতা একটা ছেলের সাথে কথা বলছে।  মাথা গরম হয়ে গেল। 


আমি গিয়ে সঞ্জিতার হাত ধরে টেনে নিয়ে আসলাম রুমে।।  রুমে এনেই ঠাসসসস করে একটা থাপ্পর লাগালাম। 

সঞ্জিতাঃ তুই আমাকে থাপ্পর দিলি কেন???( থাপ্পর খেয়ে চোখে পানি চলে এসেছে) 

 আমিঃ জামাই থাকতে পরপুরুষের সাথে কিসের কথা ( রাগি মুডে)  

সঞ্জিতাঃ  আমি কার সাথে কথা বলব না বলব তা আমার ব্যাপার তোর না

আমিঃ আজ থেকে কোনো ছেলের সাথে কথা বলতে দেখে নেই।  থাপরাইয়া সব দাত ফেলে দিব।  

সঞ্জিতাঃ তুই মারবি আমাকে

আমিঃ প্রয়োজন পড়লে মারবই।  মাথায় রাখিস আমি তোর জামাই

সঞ্জিতাঃ আমি তোরে জামাই হিসেবে মানিই না।  তাই বলছি একদম অধিকার খাটাতে আসবিনা 

আমিঃ চুপ করে ফ্রেস হয়ে নে। আর কোনো কথা নাই। 


এই বলে আমি রুম থেকে বেড়িয়ে গেলাম। বিচে চলে আসলাম। একা একাই ঘুরতে লাগলাম। সঞ্জিতার উপর প্রচন্ড জেদ উঠে আছে।। যাহোক দুপুরের দিকে হোটেলে ফিরলাম। গিয়ে দেখলাম সঞ্জিতা শুয়ে আছে। কিছু না বলে ওয়াশরুমে ডুকে ফ্রেশ হলাম। 


তারপর এসে দেখলাম সঞ্জিতা কাপতেছে। ভাবলাম হয়ত শিত লাগছে। মেয়েটার মুখ টা এতই মায়াবি যে রাগ করে থাকা যায় না।  তাই ওর গায়ে কম্বল দিতে গিয়ে ওর হাতে হাত লাগল। আর বুঝতে পারলাম ওর হাত প্রচন্ড গরম। সাথে সাথেই কপালে হাত দিয়ে বুঝলাম ওর গায়ে প্রচন্ড জ্বর।  বুঝতে পারলাম সকালের থাপ্পর টা বেশি হয়ে গেছে ।  সেজন্যই জ্বর এসেছে।  খারাপ লাগতে লাগল। কেন যে এত রাগ দেখাইতে গেছিলাম। নিজের উপরই নিজের জেদ উঠে যাচ্ছে। 

যাহোক আমি পানি পট্টি দিতে লাগলাম। কিন্তু জ্বর কমল না। তাই রাতের দিকে ডাক্তার ডাকলাম। ডাক্তার আসল। ওর পরিক্ষা করল। তারপর যা বলল তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। 


ডাক্তারঃ দেখুন ওনাকে কোনো ওষুধ দিয়ে লাভ নেই। আপনি তো ওনার হাজবেন্ড তাই না?

আমিঃ জ্বী  ডাক্তার

ডাক্তারঃ এ সময় ওনার গরম কিছু দরকার। তা করলেই সুস্থ হয়ে যাবে। আমি কি বুঝাচ্ছি বুঝতে পারছেন তো? 

আমিঃ হুম বুঝছি কিন্তু ওষুধ দিয়ে হবেনা?

ডাক্তারঃ  ওষুধ এর থেকেও এটা বেশি কার্যকরি হবে। 

আমিঃ ওকে। 


তারপর ডাক্তার চলে গেল।  আমি সঞ্জিতার মুখ টা  দেখতে লাগলাম। কি মায়াবি একটা মুখ।  এত রাগ আসে কোথা থেকে কে জানে।  কিন্তু ডাক্তার যা বলে গেল তা এখন কিভাবে করি। সঞ্জিতা কাপছে। কম্বলে কিছুই হচ্ছেনা। কাপছেই। তাই কোনো উপায় না পেয়ে। ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও   ওর সাথে গভীর মিলনে আবদ্ধ হয়ে গেলাম। 


TO BE CONTINUE

Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post