গল্প - আতঙ্ক বিরাজ

 গল্প - আতঙ্ক বিরাজ

লেখক - রিফাত আলী সাঈদ

আতঙ্ক বিরাজ রিফাত আলী সাঈদ
আতঙ্ক বিরাজ




সকাল বেলা ছাদে বসে বই পড়তে ছিলাম । এমন সময়

(ছোট ভাই )রাফি : ভাইয়া জানো পাশের বাড়ির রহিম চাচা করোনা আক্রান্ত হয়েছে ।

আমি : ও (আতঙ্কিত হয়ে) । তুমি কিভাবে জানলে

রাফি : রহিম চাচা পরীক্ষা করেছিলো । তার ফলাফল পজেটিভ এসেছে । পুলিশ আর প্রশাসনের লোক এসে থাকে নিয়ে গেলেন চিকিৎসার জন্য । আব্বুকে বলতে শুনলাম ।

বলে রাফি নিচে চলে গেল


আজ তিন মাস হতে চলল । সারাদেশ জুড়ে লকডাউন চলতেছে । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অফিস, আদালত , যানবাহন সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । জরুরী প্রয়োজনে বাড়ি থেকে কেউ বের হতে পারছে না কেউ । সাধারণ মানুষের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে । নতুন একটি ভাইরাস , " করোনা ভাইরাস " যা সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে । 


কিছুদিন পর 

আম্মু : এই পাশের বাসার রহিম ভাই নাকি মারা গেছেন

আব্বু : কি বলো কখন মারা গেলেন " ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন" ।

আম্মু : এই তো কিছুক্ষণ আগে । প্রশাসনিক ভাবে নাকি তাকে দাফন করা হবে । তার লাশের আসে পাশে নাকি কাউকে যেতে দিচ্ছে না । এমনি কি পরিবারের সদস্যদের ও না । 

আব্বু : তাইতো শোনতেছি , যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে তাদের জানাজা নামাজে কিংবা দাফনে কাজে পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন কেউকে অংশ নিতে দিচ্ছে না । সরকারি ভাবে কয়েকজন লোক এসে তাদের সমাহিত করতেছে ।

আম্মু : জানি না দেশে কি রোগ আসলো । যার কোন চিকিৎসা কিংবা ওষুধ নেই । 

আব্বু : হাঁ এভাবে যে কতোদিন চলবে একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন ।


বিকেলবেলা 

রাফি : আম্মু খেলতে যাই 

আম্মু : না । বাসায় খেলা করো । বাহিরে বের হওয়া যাবে না ।

রাফি : একটু যাই । সারাদিন বাসায় থাকতে ভালো লাগছে না আর ।

আম্মু : দেখতেছো না বাহিরে করোনা ভাইরাসে ছড়িয়ে পড়েছে ।

রাফি : কিন্তু সবাই তো বাহিরে বের হচ্ছে ।

আম্মু : তুমি যাবে না মানে যাবে না । যাও রুমে যাও ( রেগে )


সারাদিন বাসায় থাকতে থাকতে ছোট বাচ্চারা বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে । তারা বুঝতে পারছে না যে , আগে মত আর মাঠে কেও খেলতে বের হয় না । সব কিছু আর আগের মত নেই , সব কিছু পরিবর্তন করে দিয়েছে ওই করোনা ভাইরাস । বড়রা অনেকে লকডাউন মানতেছে না । স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাফেরা করছে না । আগের মত স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে চাচ্ছেন । মুখে মাস্ক ব্যবহার না করে পকেটে নিয়ে বেরাচ্ছে । পুলিশকে দেখলে মুখে মাস্ক পড়তেছে । 


জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে অনেক ডাক্তার এবং পুলিশ সহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা । এর মাঝেও করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন অনেক ডাক্তার সহ বাহিনীর সদস্যরা । তবুও জীবনের মায়া ত্যাগ করে কাজ করে কাজ করে যাচ্ছে তারা ।


লোকডাউনে বন্ধ হয়ে গেছে শ্রমিকদের কাজ কর্ম । কাজ না করলে তারা খাবে কি এই হতাশায় ভেঙে পড়েছে অনেকে শ্রমজীবী । কিছুদিন পর জানা গেল , " সরকার বিনামূল্যে খাবার তুলে দিচ্ছে সাধারণ অসহায় মানুষের মুখে " । আবার সম্পদশালী ব্যক্তিরা অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে অনেকেই । তাঁরা অর্থ দিয়ে সাহায্য করছে সাধারণ মানুষকে ।


এভাবে দেখতে দেখতে কেটে গেল এক বছর ।

এই এক বছরে পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছু । এই এক বছর ধরে বন্ধ আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । পড়ালেখায় দূর্বল হয়েগেছে অনেক শিক্ষার্থী । তারপর ও বিনা পরীক্ষায় উপরের ক্লাসে প্রমোশন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় । অন্যদিকে অনেকে হারিয়েছে আপনজন। অনেকেই হারিয়েছে বাবা কে , অনেকে হারিয়েছে মা কে , আবার কেউ ভাই বোনকে হারিয়ে ফেলেছে । 

করোনা ভাইরাস এ মারা গেছে লক্ষ লক্ষ মানুষ । 

বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাস এর টিকা আবিষ্কার করলেও । টিকার মাধ্যমে তেমন মাত্রায় পাওয়া যাচ্ছে এর প্রতিকার । তবুও আজও চেষ্টা করে যাচ্ছে বিজ্ঞানীরা ।


             চীন থেকে সূচনা

    শুরু হলো রচনা

            ঘটলো কতো ঘটনা

    সাবজেক্ট তার করোনা

            যাবে কিনা যাবে না

     আল্লাহ ছাড়া জানে না 

            খারাপ এখন জামানা 

     আমারা হলাম সিয়ানা

            যতই করি বাহানা 

     কবর হবে ঠিকানা 

           মাটি হবে বিছানা 

      সাড়ে তিন হাত সীমানা 


আজো বিরাজ করছে করোনা ভাইরাস এর আতংক । কেউ যানে না এই আতঙ্ক থেকে কবে মুক্তি পাবে সকলে । তবে সকলের আশা খুব তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবে এই আতঙ্ক থেকে । আবার ফিরে পাবে সেই আগের স্বাভাবিক জীবন ।




_____★★★____ সমাপ্তি ____★★★_____


Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post