অপমানে_অপমানিত Apomane Apomanito
লেখকঃ Arian Sumon...
6th part...
আম্মুঃ কিরে আবার কাদছিস কেন? সুমনকে পাস নাই?
সঞ্জিতাঃ সব জায়গায় খুজলাম পেলাম না। আমার মনে হয় আমি আর সুমন কে পাব না। ( কাদতে লাগল)
আম্মুঃ কাদিস না মা। দেখছি আমি তো আব্বুকে ফোন দেই ওনি কিছু জানেন কিনা?
ওর আম্মু দিল আব্বুকে কল। সঞ্জিতার এসব শুনে তো খুব রেগে গেল। তিনিও কিছু জানেন না।।
আম্মুঃ নারে তুর আব্বুও জানেনা।
সঞ্জিতা কাদতে কাদতে দৌড়ে রুমে ডুকে গেল।
খাটে শুয়ে শুয়ে কাদতে ছিল। হঠাৎ চোখ গেল টেবিলের উপর। টেবিলে কি যেন একটা রাখা। উঠে গিয়ে হাতে নিল। হাতে নিয়ে দেখে চিঠি। তাও তার জন্যই সুমন রেখে গেছে। সে চিঠিটা খুলল,,
প্রিয়,, বউ
জানি তুমি যখন এই চিঠিটা হাতে নিবা। তখন তোমার চোখ দুটো দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। এ ও জানি যে এখন তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমাকে অনেক মিস করো। আমাকে খুজতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছ। তবুও আমাকে পাচ্ছ না। তুমি তোমার নিজের দোষেই আমাকে হারিয়েছে। একটা কথা মনে রেখো গরীব রাও মানুষ হয়। তাদেরও বাচতে ইচ্ছে করে। আর হ্যা আমি গরীব নই। হয়ত তোমার বাবার সমান নেই। কিন্তু যতটুকু আছে তাতেই আমরা সন্তুষ্ট।। তুমি হয়ত ভাবছ আমি এত কিছু কিভাবে বললাম যেমন তুমি কাদছ আমাকে খুজছ। এগুলো তো আগেই আমি আন্দাজ করতে পারছিলাম। একদিন হলেও তুমি আমার ভালোবাসা ফিল করবা। তুমি পাষান হতে পারো কিন্তু আমি পাষান নই। আমি তোমাকে সত্যিই অনেক ভালোবেসে ফেলছি গো। অনেক ভালোবাসি তোমাকে। আর হ্যা তুমি হয়ত ডিবোর্স পেপার টা ভালো করে দেখনি। পেপারে আমি সাইন করিনি। আমি তোমার অপেক্ষাতে থাকব। যদি চাও আসতে পারো। তোমার জন্য খামের ভিতরে আরেকটা চিরকুট রেখেছি ওইটা খুলে দেখিও।
ইতি
হতভাগা সুমন।
সঞ্জিতা কেদে দিল।
কি করলাম আমি। প্রকৃত ভালোবাসা পেয়েও আমি হারিয়ে ফেললাম। ছি ছি নিজের উপরেই নিজের ঘৃণা হচ্ছে।।
তারপর কাদতে কাদতেই চিরকুট বেড় করল। চিরকুট বেড় করে পড়তেই সঞ্জিতা খুশি হয়ে গেল। কারন চিরকুটে সুমনের বাড়ির ঠিকানা দেওয়া।।
সঞ্জিতা খুশিতে মা মা বলে চিৎকার দিতে লাগল। ওর মা চলে আসল মেয়ের চিৎকার শুনে।
আম্মুঃ কি হয়েছে রে
সঞ্জিতাঃ আম্মু আমি পেয়ে গেছি
আম্মুঃ কি পাইছিস?
সঞ্জিতাঃ আমি সুমনের বাড়ির ঠিকানা পেয়ে গেছি।
আম্মুঃ কোথায় পাইলি
সঞ্জিতাঃ ও আমার জন্য চিঠি রেখে গেছে। চিঠির সাথে চিরকুটে বাড়ির ঠিকানা দিয়ে গেছে।
আম্মুঃ সত্যিই ছেলেটা তোকে অনেক ভালো বাসে রে
সঞ্জিতাঃ আমিও ভালোবাসি। আমি এখনি যাব।
আম্মুঃ না না তুই যাবিনা এখন। অনেক রাত এখন গেলে পথে ঘাটে বিপদ হতে পারে। কালকে সকালে গাড়ি নিয়ে চলে যাইছ।
সঞ্জিতাঃ কিন্তু আমার যে মন মানছে না।
আম্মুঃ কিছু করার নেই। আমি এখন যেতে দিব না তোকে।
সঞ্জিতাঃ ওকে।
আম্মুঃ এখন খুশি তো। তাহলে খেয়ে নে।
সঞ্জিতাঃ না খাব না। তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।
আম্মুঃ তুই না খেলে আমিও খাব না।
সঞ্জিতাঃ আচ্ছা চলো।
তারপর সঞ্জিতা খেতে চলে গেল। খেয়ে রুমে শুয়ে আছে। সুমনের সাথে কাটানো স্মৃতি গুলো ভাবছিল আর হাসতেছিল। এভাবেই ঘুমিয়ে যায়।
অন্যদিকে সুমন সকালে ঘুম থেকে উঠে খেয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়। এভাবেই দিন টা পার করে দেয়। রাতে ঘুমানোর সময় সঞ্জিতার বকা গুলো মিস করে। সঞ্জিতার কথা ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে যায়।
তারপর দিন সকাল হতে না হতেই তিন্নি গাড়ি ছুটে চলে সুমনের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
অন্যদিকে আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে যথারিতি খেয়ে বেড় হয়। তারপর আড্ডা দিতে বেড় হয়।
আড্ডা দেওয়া শেষে বাড়ি ফিরছিলাম এমন সময় তিন্নি এসে হাজির।
তিন্নিঃ কেমন আছ
আমিঃ আমি যে তোর বড় জানিস না?
তিন্নিঃ জানি তো।
আমিঃ তাইলে ভাইয়া ডাকিস না কেন?
তিন্নিঃ তোমাকে আমি ভালোবাসি ভাইয়া ডাকব কেন
আমিঃ তোর ভালোবাসা। আচ্ছা প্রমান দিতে পারবি।
তিন্নিঃ কি করতে হবে বলো
আমিঃ বেশি কিছু না। তো সাথের বান্ধবী আছে না অবনি?
তিন্নিঃ হুম তো
আমিঃ ওরে আমি ভিষন লাইক করি। ওর সাথে লাইন করিয়ে দে।
তিন্নিঃ কিইইইইই তুমি শুধু আমার আর কারো নয়।
আমিঃ তাইলে আলু খা আমি যাই।
তিন্নিঃ আলু খাই না আমি।
আমিঃ কি ভালো বাসা রে আমার জন্য আলুও খেতে পারিস না আবার বলিস ভালোবাসিস?
তিন্নিঃ আলুর সাথে ভালোবাসার কি সম্পর্ক?
আমিঃ এজন্যই তো বলি আবেগ মাথা থেকে সড়াইতে। নাহলে কপালে দুঃখ আছে।
তিন্নিঃ কচু আছে ( আস্তে বলল)
আমিঃ কচু থাকা লাগব না। চল আমার সাথে বাড়ি
তিন্নিঃ কেন যামু?
আমিঃ গেলে আয় বিড়িয়ানি খাইতে পারবি। নাইলে এখানে বসে থাক। আমি গেলাম।
আমি হাটা ধরলাম। তিন্নিও পেছন পেছন হাটা ধরল। জানতাম এ মেয়ে আসবেই। বিড়িয়ানির কথা শুনলে কুকুরও পেছন পেছন আসবে। আর এটা স্বয়ং রুপবতি তিন্নি। ওনার আবার বিড়িয়ানি খুব প্রিয়।।
যাহোক বাড়িতে আসলাম। বাসার ভিতরে ডুকলাম। সবাই দেখি আমাকে দেখে হাসতেছে। ভাইয়া আর ভাবি বেশি হাসতেছে।
আমিঃ কি হলো তোমরা হাসছ কেন?
ভাইয়াঃ তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে।
আমিঃ মানে কিসের সারপ্রাইজ।
ভাবিঃ তেমন কিছু না। শহুরের যে জিনিস টা তোমার সব থেকে প্রিয় সে জিনিস টা এসে গেছে
আমিঃ আমার আবার কি প্রিয়? আরে কি বলছ ঠিক করে বলো তো।
ভাবিঃ আমরা কিছু বলতে পারব না। তুমি রুমে গিয়ে দেখে নাও।
আমিঃ ওকে। আর এইডারে ভালোমতো বিড়িয়ানি খাওয়াইয়া বিদায় করো।
তিন্নিঃ থাক লাগবে না। আমি এখনি চলে যাচ্ছি।
আমিঃ হইছে ভাব দেখাইতে হবেনা। খেয়ে তারপর যা।
ভাবিঃ থামো তোমরা। তুমি যাও রুমে। আমি ওরে খাবার দিচ্ছি।
তারপর আর কি রুমে ডুকলাম। কোথাও কিছু পেলাম না। ভাইয়া আর ভাবির উপর গেল মেজাজ খারাপ হয়ে। হুদাই আমাকে কি কইল না কইল। ধুরর।
কোনো কিছু না ভেবে ডুকে গেলাম ওয়াশরুমে। ওয়াশরুমে ডুকেই দিলাম এক চিৎকার। কিন্তু কোনো আওয়াজ হলো না। কারন আমার মুখ অন্য কেউ দখল করে নিল।
কিছুক্ষন পর ছাড়ল। ছাড়ার পর ভালো করে তাকিয়ে আমি অভাক হয়ে গেলাম এ দেখি সঞ্জিতা। । আমি ভূত দেখছিনা তো।
আমিঃ তু তু তুমি??
সঞ্জিতাঃ হুম আমি চলে আসলাম। কেন কোনো অসুবিধা
আমিঃ না মানে তুমি এখানে কি করো?
সঞ্জিতাঃ আমার শশুর বাড়ি আমি এসেছি।
আমিঃ শশুর বাড়ি মানে
সঞ্জিতা আবার আমার শার্ট এর কলার টেনে আগাইয়া নিয়ে নিজের মুখ আমার মুখের সামনে এনে।
সঞ্জিতাঃ মানে বুঝনা?
আমিঃ ধুর ছাড়ো তো।
ছাড়িয়ে ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসলাম। সঞ্জিতাও বেড় হয়ে আসল।
আমিঃ তোমাকে এ বাড়িতে জায়গা দিছে কে?
সঞ্জিতাঃ কে আবার দিবে শশুর শাশুরি দিছে
আমিঃ বেশি কথা না বলে আমার রুম থেকে বেড় হও।
সঞ্জিতাঃ ওলে আমার জামাই টার দেখি ভিষন রাগ।
এই বলে আমাকে খাটে ফেলে দিয়ে। আমার উপর চড়ে বসল।
আমিঃ আরে কি হচ্ছে টা কি? আমি কিন্তু চিৎকার করব।
সঞ্জিতাঃ ওলে বাবু রে ।
বলেই এক করে নিল। আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। কিছুক্ষন পর ছাড়ল।
সঞ্জিতাঃ এবার রাগ কমছে?
আমিঃ আরেকবার দিলে ভেবে দেখতে পারি।
সঞ্জিতাঃ ওরে আমার সোনা রে। আর দিতে পারব না।
আমিঃ তোমার দিতে হবেনা। আমিই নিয়ে নিচ্ছি।
এইবার আমিই জোর করিয়া করে নিলাম।।
এবার শেষ হতেই। ভাবি এসে দরজায় টুকা দিল।
ভাবিঃ দিনদুপুরে এসব করতে নেই।
আমরা হতভম্ব হয়ে গেলাম। সঞ্জিতা লজ্জা পেয়ে নেমে গিয়ে ওয়াশরুম চলে গেল। আর আমি তো লজ্জায় শেষ।
ভাবিঃ এত লজ্জা পেতে হবেনা। যাও বউকে নিয়ে খেতে এসো।
আমিঃ ওকে তুমি যাও আসছি।।
ভাবি চলে গেল। তারপর আমিও ওয়াশরুমে ডুকলাম। একসাথেই দুজন গোছল করে বেড় হলাম।
তারপর রেডি হয়ে খাইতে চলে গেলাম।
খাবার টেবিলে তিন্নিকেই সবাই খাওয়াচ্ছে। আর আমি বসেই আছি।
আমিঃ আরে হচ্ছে টা কি। সব ওরেই দিতেছ। আমাকে তো কিছু দাও।
আম্মুঃ তুই অনেক খাইছিস। এবার বউমাকে খাওয়াব। তোর দেখতে ইচ্ছা না করলে চলে যেতে পারিস।
আমিঃ ধুর।
তারপর নিজের হাতেই নিজে নিয়ে খেতে লাগলাম। আর সঞ্জিতা মুচকি মুচকি হাসছে। শরির টা জ্বলে যাচ্ছে। খাড়া দেখাচ্ছি মজা।
আমিঃ ভাবি তিন্নি খেয়েছে
ভাবিঃ হুম খাইয়া চলে গেল। আর তোমাকে বলছে বিকালে দেখা করতে।
আমিঃ ওকে আমি জানি।
এটা শুনেই সঞ্জিতার হাসি উড়ে গেল। এবার আমি মজা করে খেতে লাগলাম।
খাওয়া শেষে আমি রুমে শুয়ে আছি। কিছুক্ষন পর সঞ্জিতা আসল। এসে দরজা বন্ধ করল। তারপর শাড়িটা কোমরে বেধে নিল। পুরো দজ্জাল বউয়ের মত শুরু করল।
সঞ্জিতাঃ ওই তিন্নি কে?
আমিঃ তুমি জেনে কি করবা?
সঞ্জিতাঃ আগে বল তিন্নি কে
আমিঃ আমার খালাতো বোন।
সঞ্জিতাঃ ওর সাথে কিসের সম্প র্ক?
আমিঃ আজব তুমি এমন করছ কেন?
সঞ্জিতাঃ বলবি নাকি আমি
আমিঃ আরে বাপরে বউ দেখি খুব রেগে গেছে। থাক রাগেনা বাবু রাগেনা।
সঞ্জিতাঃ তাহলে বল
আমিঃ আরে ওইটা একটা পাগল। আমাদের মধ্যে কোনো সম্প র্ক নাই। ওরে আমি আমার ছোট বোনের মতই দেখি। আর তোমাকে রাগানোর জন্যই খাবার টেবিলে ওভাবে বলছিলাম।
এইবার দেখি বউ আমার রেগে আমার উপর চড়ে বসল
আমিঃ কি করছ মরে যাবো তো।
ও আমার মুখ চেপে ধরল।
সঞ্জিতাঃ আর কোনোদিন এধরনের কথা বলবা না।
আমিঃ ওকে বলব না। পাপ্পি দাও।
সঞ্জিতাঃ দিচ্ছি।
তারপর শুরু হলো। গনহারে পাপ্পি দেওয়া। দিতেই লাগল দিতেই লাগল। থামাথামির কোনো নামই নিচ্ছে না।চলছে চলছেই।
To be continue