মন্ত্রীর মেয়ে (The ministers daughter)
লেখকঃ Arian Sumon..
6th part.
![]() |
আমিঃ এ কি আপনারা এখানে???
সঞ্জিতার আব্বুঃ তোমার জন্যই অপেক্ষা করতেছিলাম।।
আমিঃ কি দরকারে এখানে এসেছেন সেটা বলুন।
সঞ্জিতার আব্বুঃ তোমার আর আমার মেয়ের বিয়ের কথা বলতে
আমিঃ আমার আর আপনার মেয়ের বিয়ে মানে? বুঝলাম না।
সঞ্জিতার আব্বুঃ দেখ বাবা যা হবার হয়ে গেছে। তোমরা তো দুজন দুজন কে ভালোবাসো। এখন বিয়ে করে নাও।
আমিঃ আমি আপনার মেয়েকে ভালোবাসি না। এবং বিয়েও করব না। আপনি আসতে পারেন।
সঞ্জিতার আব্বুঃ ভালোভাবে বলছি কথা কানে যায় না? তুমি জানো আমি কে??
আমিঃ সেটা কি আমার থেকে ভালো কেউ জানে নাকি। গত তিন বছর আপনারে রিসার্চ করেছি। সেগুলো যদি ফাস করি তাহলে আপনার আর মন্ত্রী গিরি থাকবেনা।
সঞ্জিতার মাঃ বাবা প্লিজ এমন করোনা। এখানে আমার মেয়ে আমাদের পুরো পরিবারের মানইজ্জত মিশে আছে। বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাও।
আমিঃ সরি আন্টি সম্ভব না।
সঞ্জিতার আম্মুঃ কারন ওনার মতো নিচ প্রকৃতির মন্ত্রীর মেয়েকে আমি বিয়ে করব না। আপনি মানইজ্জত বাচাইতে চান?? আপনাদের মানইজ্জত আছেই কতটুকু? একটু খোলামেলা হাটুন মানুষের সাথে মিশুন দেখবেন মানুষ আপনাদের কোন চোখে দেখে
সঞ্জিতার আব্বুঃ আপনার ছেলে কিন্তু বেশি কথা বলতেছে। ( আব্বুকে বলল)
আব্বুঃ এই সুমন থাম বাবা।
আমিঃ না থামব না ওনাদের যেতে বলো। আমার গা জ্বলে যাচ্ছে।
সঞ্জিতার আম্মুঃ ওনি দোষ করেছে। আমার মেয়ে তো কিছু করেনি। আমার মেয়েকে কেন শাস্তি দিচ্ছ?
আমিঃ আপনার মেয়েও করেছে। বাবা মন্ত্রী বলে। সেটা ক্ষমতা দেখিয়ে সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। আর আপনার বড় ছেলে তো আমার বোনের জীবন টাই নষ্ট করে দিছে।
সঞ্জিতার আম্মুঃ কি করেছে আমার ছেলে?
আমিঃ সারা শহরে সন্ত্রাসী ছড়িয়ে দিছে। আজ থেকে তিন বছর আগে আমার বোনের পিছন লেগেছিল। যার ফলে আব্বু আপুকে বিয়ে দিয়ে দেয়। আপুর ডাক্তার হবার স্বপ্ন টা পূরণ হয়নাই।
কেউ কিছু বলছেনা।
আমিঃ আপনারা এখন আসতে পারেন। যদি না যান তাহলে আমি এখন মিডিয়াতে কল করে সব জানিয়ে দিব যে শিক্ষামন্ত্রীর মেয়ে অবৈধ প্রেমে প্র্যাগনেন্ট।
সঞ্জিতার আব্বুঃ তুই কিন্তু...
থামিয়ে আমি বললাম।
আমিঃ বেশি কথা বলবেন না। নাহলে পাবলিক করে দিব।
সঞ্জিতার আব্বুঃ আমি তোকে দেখে নিব।
এই বলে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল।
আমি সোফায় বসে পড়লাম। সব শান্ত। সবাই চলে গেছে।
আব্বুঃ এসবের মানে কি সুমন???
আমিঃ কিসের?
আব্বুঃ তুই ওনার মেয়ের সাথে???
আমিঃ ঠিকি আছে। আমার বোনের জীবন নষ্ট করেছে আমিও করে নিলাম।
আব্বুঃ কাজ টা ঠিক করেছিস?
আমিঃ ঠিকি আছে। আমিও বুঝিয়েছিলাম বুঝেনাই।
আম্মুঃ কিন্তু মেয়েটা কি দোষ করেছে।
আমিঃ সব দোষ ওর বাবা আর ভাইয়ের অনেক খেলেছে সাধারন জনগনের সাথে। এবার বুজবে নিজের গায়ে লাগলে কেমন লাগে।
আব্বুঃ দেখ বাবা আমি বলি কি । তুই মেয়েটাকে বিয়ে করে ফেল। যাই হোক মেয়েটার পেটে তো তোরই বাচ্চা। আমাদের বংশধর।
আমিঃ না আব্বু। আমাকে কেউ বুঝাইতে আসিওনা।
আমি উঠে রুমে চলে গেলাম। গিয়ে ফ্রেশ হয়ে শুইলাম। এখন শান্তি লাগছে। তিন বছর আগের প্রতিশোধ নিতে পেরেছি। অনেক অন্যের মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। অন্যের জীবন নিয়া খেলেছে। এখন বুঝবে ঠেলা। কত ধানে কত চাল হাড়ে হাড়ে টের পাবে।
কিন্তু কেন জানিনা সঞ্জিতার জন্য কষ্ট হচ্ছে। কেমন জানি টান অনুভব করছি।
বিকালে,,,
আপুঃ ভাই কি করছিস??
আমিঃ এই তো ফেসবুক চালাচ্ছি।
আপুঃ তোর সাথে আমার কথা আছে।
আমিঃ বলে ফেল।।
আপুঃ জরুরি কথা। এদিকে মনোযোগ দে?।
আমিঃ হুম বল।
আপুঃ তুই সঞ্জিতাকে ভালোবাসিস??
আমিঃ ......
আপুঃ কি হলো বাসিস???
আমিঃ না তো।
আপুঃ মিথ্যা কেন বলছিস?
আমিঃ আরে তুই এসব নিয়া লাগছিস কেন?
আপুঃ আমি যা বলেছি তার উত্তর দে
আমিঃ জানিনা ভালোবাসি কিনা। কিন্তু টান অনুভব করি।
আপুঃ তার মানে ভালোবাসিস। শুন একটা কথা বলি। ওরে বিয়ে করে নে
আমিঃ তুইও শুরু করলি?
আপুঃ হুম করলাম। ওর ভাই আর বাপের জন্য সঞ্জিতাকে কেন কষ্ট দিচ্ছিস? ও তো কোনো দোষ করেনাই। আর সব থেকে বড় কথা হলো ওর পেটে তোর বাচ্চা।
আমিঃ সম্ভব না। আমি ভুলিনি তিন বছর আগের কথা। ওরা কিভাবে তোর স্বপ্ন টা নষ্ট করেছিল। শুধু ক্ষমতার বলাই দেখিয়ে। এখন বুঝুক।
আপুঃ তুই আমার কথা শুনবি না?
আমিঃ না শুনব না।
আপুঃ যাহ তোর সাথে কোনো কথা নাই।
আমিঃ আরে তুই
আপু চলে গেল রুম থেকে।
বুঝতেছিনা। আমার আব্বু আম্মু আমার আপু আমার সাথে না থেকে ওনারা মন্ত্রীর মেয়ের জন্য আমার সুপারিশ করছে। ধ্যাত ভালো লাগেনা।
বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলাম। দোকানে বসে চা খাচ্ছি। শাওন আর তুষার এসে জয়েন করল।
তুষারঃ কিরে শুনলাম।মন্ত্রী সাহেব তোদের বাসায় এসেছিল।
আমিঃ না এসে যাবে কোথায়?
শাওনঃ জবরদাস্ত হয়েছে। আমাদের সব কাজ শেষ। এখন শুধু ব্লাস্ট হবার সময়।
আমিঃ ওর মন্ত্রী গিরি ছুটাব। শালা দুর্নীতিবাজ চোর। জনগনের টাকা মাইরা বড়লোক হইছে।।
শাওনঃ এবার। বুঝবে জনগন কি জিনিস।
আমিঃ হ্যা।
ওদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরলাম। খেয়ে ধেয়ে শুইতে গেলাম। একটা জিনিস খেয়াল করলাম।বাসায় কেউ আমার সাথে কথা বলেনা। কি হলো বুঝতেছিনা। ওনারা এমন করতেছে কেন?
পরদিন
রাস্তায় হাটছি এমন সময় একটা গাড়ি আমার কাছে এসে থামল। আমিও দাঁড়িয়ে গেলাম। সঞ্জিতা গাড়ি থেকে নামল। নেমে এসে আমার হাত ধরে নিয়ে গাড়িতে উঠাল। তারপর গাড়ি নিয়ে গেল একটা নির্জন জায়গায়।
তারপর ,,,
আমিঃ এখানে এনেছ কেন???
সঞ্জিতাঃ আমাকে কি পেয়েছ খেলার পুতুল???
আমিঃ মানে??
সঞ্জিতাঃ আব্বুর ভাইয়ার পাপের জন্য তুমি আমার সাথে এমন করলে কেন?? আমি কি দোষ করেছি??
আমিঃ তোমার দোষ নেই। সব দোষ তোমার ভাই আর বাবার।।
সঞ্জিতাঃ তো আমার সাথে এমন করছ কেন???
আমিঃ তোমার ভাই আমার বোনের সাথে করেছে। আমি তোমার সাথে কার তার সমান সমান করলাম।
সঞ্জিতাঃ কই ভাইয়া কি তোমার বোনকে প্র্যাগনেন্ট বানাইছিল? নাকি ধর্ষণ
ঠাসসসস
আমি থাপ্পর দিলাম সঞ্জিতাকে।
আমিঃ চুপ একদম চুপ। আমার বোনকে নিয়ে খারাপ কথা বলবিনা। একদম খুন করে ফেলব।
সঞ্জিতাঃ মারো আরো মারো। আমি তো খেলার পুতুল তাই তুমি আমাকে ব্যবহার করলে। কিন্তু আমি তো সত্যি ভালোবাসি তোমাকে ( কেদে কেদে)
আমিঃ আমি বাসিনা। বায় ভালো থেকো।
আমি হাটা ধরলাম। চলে আসলাম সেখান থেকে। কেমন যেন লাগতেছিল। মন বলছে যাইছ না।সুমন যাইছ না। কেন এমন হচ্ছে বুঝতেছিনা। আমি তো ওরে ভালোবাসি না। তবুও এমন লাগছে কেন।।
যাহোক বাসায় ফিরলাম। বাসায় ফিরে শুয়ে আছি। এমন সময় মেইল আসল।
মেইল ওপেন করে দেখি। গতকাল যে ইন্টার্ভিউ দিয়েছিলাম। চাকরিটা হয়ে গেছে। খুশির উপর আরেকটু খুশি। চলে গেলাম ড্রয়িং রুমে। সবাইকে বললাম। কিন্তু কেউ কোনো সারাশব্দ করল না।
আমিঃ হচ্ছেটা কি কেউ কথা বলছ না কেন??
কেউ কিছু না বলে সবার মতো চলে গেল। আমি রুমে চলে আসলাম। এমন করছে কেন বুঝতেছিনা।। মনে হচ্ছে আমি অনেক বড় কোনো ভূল করে ফেলছি। যার কারনে কথা বলেনা।
যাহোক সেদিনের মতো খাইয়া ঘুমাইলাম।
আমিঃ সঞ্জিতা তোমার কিছু হতে পারেনা। আমি তোমার কিছু হতে দিব না। তুমি শুধু আমার।
সঞ্জিতা আমাকে পাবেনা তাই আত্বহত্যা করেছে। বিষ খেয়েছে। এখন ইমার্জেন্সি তে আছে।
আমিঃ সঞ্জিতা চোখ খুলো প্লিজ। এই দেখ আমি চলে এসেছি। তোমাকে নিয়ে যাব।
না চোখ খুলছেনা। আমার দুচোখ বেয়ে অঝর ধারায় পানি ঝরছে। কেন ওর সাথে এমন করতে গিয়েছিলাম। আপন করে নিলেই তো পারতাম। এখন নিজের দোষেই সঞ্জিতাকে হারাতে যাচ্ছি।
সব দোষ আমার।
হে আল্লাহ আমার সঞ্জিতা যদি বেচে না থাকে। তাহলে আমি বাঁঁচব কিভাবে?? আল্লাহ তুমি আমার সঞ্জিতাকে ফিরিয়ে দাও।
আমি মসজিদে চলে গেলাম। দু রাকাত নফল নামাজ পড়লাম। সঞ্জিতাকে ফিরে পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে লাগলাম।
আবার ফিরে আসলাম হাসপাতালে। কেবিনে সামনে যেতেই ডাক্তার সাহেব বেড় হলো।
আমিঃ ডাক্তার সাহেব কি অবস্থা আমার সঞ্জির???
ডাক্তারঃ sorry she is no more...
আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
আমিঃ নাহহহহহহহ ডাক্তার এটা হতে পারেনা। আমি বেচে থাকতে আমার সঞ্জিতার কিছু হতে পারেনা। আপনি আবার চিকিৎসা করুন।
ডাক্তারঃ দেখুন পাগলামি করবেন না। আল্লাহর জিনিস আল্লাহ নিয়ে গেছে। কেদে কি লাভ। নিজেকে শক্ত করুন।
আমিঃ নাহহহহহহহহ আমার সঞ্জিতার কিছু হতে পারেনা।
To be continue
