ডিভোর্স পর্ব ১। Divorce part 1। Bangla romantic sad story | StoryBD.xyz

 ডিভোর্স DIVORCE 


1st part.

লেখকঃ Arian Sumon.




সোফায় বসে আছি।  তখনি আমার পাঁচ  বছর বয়সী মেয়েটা এসে বলল,,


সাইফাঃ বাবা আম্মু কি আর আসবেনা আমাদের কাছে?

ওর এমন প্রশ্নে আমি বিব্রত অবস্থায় পড়ে গেলাম।  কি উত্তর দিব ভেবে পাচ্ছিলাম না। 


ওরে কাছে টেনে নিলাম। কপালে চুমু দিলাম।

আমিঃ তোমার আম্মু বাবার সাথে রেগে আছে। খুব যলদিই তোমার আম্মু আবার আমাদের কাছে চলে আসবে। আমি নিয়ে আসব।

সাইফাঃ আমি আম্মুর সাথে কথা বলব। 

আমিঃ এখন না মামুনি। কালকে তোমাকে তোমার আম্মুর কাছে নিয়ে যাব। 

সাইফাঃ সত্যি বাবা?

আমিঃ হুম সত্যি।  তোমার বাড়ির পড়া শেষ করেছ?


ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বুঝলাম যে শেষ করেনি। 

আমিঃ আচ্ছা চলো আজকে বাবা তোমাকে সাহাজ্য করব। 


ও খুশি হয়ে গেল।।


আমি খুশি ছিলাম না।কারন  জান্নাত আর আমার মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটতে চলেছে।  আজকেই সকালে ওকিল নোটিশ পাঠিয়েছে।  কালকে আদালত হাজির হতে হবে। এ কথা মেয়েকে কিভাবে বলব। চোখ দিয়ে পানি চলে আসল। 


সাইফাঃ বাবা তুমি কাঁদতেছ?

আমার ধ্যান ভাঙল।


আমিঃ কই নাতো। চলো টেবিলে চলো।


"

"

"


পরদিন সকালে কলিং বেলের আওয়াজে ঘুম ভাঙল। উঠে এসে দরজা খুলতেই দেখলাম দুধওয়ালা এসেছে দুধ দিতে।  দুধ রেখে দরজা বন্ধ করে রুমে গেলাম।  

গিয়ে দেখি সাইফা ঘুম থেকে উঠে বসে আছে। 


সাইফাঃ আম্মু এসেছে বাবা??

এটা শুনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।

আমিঃ  না মামুনি। 

ওর হাসি মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেল। বুঝলাম মন খারাপ হয়ে গেছে।  


আমি ওর কাছে গেলাম।


আমিঃ মামুনির মন খারাপ হয়ে গেছে নাকি?  তারাতারি ফ্রেশ হয়ে নাও। তোমার আম্মুর কাছে যাব।

সাইফাঃ সত্যি বাবা?

আমিঃ হুম।

সাইফাঃ এই আমি ইউ গেলাম আর আসলাম। 

খুশিমনে ওয়াশরুমে চলে গেল। 

"

"

"


সাইফাকে নিয়ে বেড় হলাম।  আমার পরিচয় টা দিয়ে নেই।  আমি সুমন। একটা  কোম্পানির ম্যানেজার।  সাইফা হলো আমার একমাত্র মেয়ে।। বাকি টা গল্পের সাথে থাকলেই বুঝতে পারবেন।  


কিছুক্ষন পর গাড়ি একটা রেষ্টুরেন্ট এর সামনে পার্ক করলাম।  সাইফাকে নিয়ে ভিতরে গেলাম। 


আগে থেকেই আমার বন্ধু শাওন ভিতরে ছিল। আমার একমাত্র বন্ধু।বিপদ আপদের সাথি।   


যাহোক খাইতে বসলাম।  খাবার অর্ডার করলাম।

শাওনঃ  সাইফার কি করবি?

আমিঃ  ও তো বারবার  জান্নাতের কথা বলতেছে। আম্মুর কাছে যাব বলে বায়না ধরে। 

শাওনঃ তোদের মধ্যে এমন টা হবে ভাবতেও পারিনি। 

সাইফা আপন মনে খাচ্ছে। 

আমিঃ দেখা যাক আজকে কোর্ট কি বলে। যদিও আমার পক্ষ থেকে কোনো ভূল নেই। 

শাওনঃ জান্নাত এমন কিভাবে করতেছে। অন্তত মেয়েটার কথা তো ভাবতে পারত। 

"

"


খাওয়া শেষে কোর্টে চলে আসলাম।  একটা বেঞ্চে শাওন আমি আর সাইফা বসে আছি। 


কিছুক্ষন পর দেখলাম জান্নাত তার বাবা মায়ের সাথে আসল। 

"

"

সাইফা জান্নাতকে দেখেই তার কাছে দৌড়ে চলে গেল আম্মু আম্মু ডাকতে ডাকতে। 


জান্নাত সাইফাকে কোলে তুলে নিল। চুমুও খেল।  সাইফা আর ওর কোল থেকে নামল না।  


যাহোক কিছুক্ষনের মধ্যেই কোর্ট এর কার্যক্রম  শুরু হলো।

"

"

"


কোর্ট সবকিছু বলতে সাইফার কথা বিবেচনা করে আমাদের কে ছয় মাসের সময় দিল। এর মধ্যে যদি সবকিছু ঠিক হয় তাহলে  তো হলোই। নাহলে বিচ্ছেদ হবে।  আরো সিদ্ধান্ত হলো। সাইফা এ ছয় মাসের এক মাস আমার কাছে এক মাস জান্নাতের কাছে থাকবে। যদিও জান্নাতের বাবা মা এখনই ডিভোর্স করিয়ে নিতে চেয়েছিল ।   

প্রথম মাস সাইফা জান্নাতের কাছে থাকবে কোর্ট রায় দিয়েছে। 


কোর্ট এর বাহিরে এসে সাইফা আমার কাছে আসল। 

আমি ওরে কোলে তুলে নিলাম। 


সাইফাঃ  বাবা  তুমিও চলোনা আমাদের সাথে নানার বাড়ি। 

আমিঃ না মামুনি তুমি যাও। বাবার অফিসে কাজ আছে তো তাই এখন যেতে পারব না। তবে কথা দিচ্ছি তোমাকে প্রায়ই দেখতে যাব। 


সাইফার মন খারাপ হয়ে গেল। 

আমিঃ একদম মন খারাপ করে থাকবানা। তাহলে কিন্তু বাবা কষ্ট পাবো। 

সাইফার কপালে চুমু দিলাম। 

আমিঃ বাবাকে চুমু দিবানা?

সাইফা আমার গালে চুমু দিল। 


তখনি জান্নাত এসে জোড় করেই সাইফাকে নিয়ে গেল। সাইফা কান্না করে দিল।  মেয়েটাকে যেতে দিতে ইচ্ছে করতেছিল না।  

চোখ দিয়ে পানি বেড়িয়ে গেল। শাওন আমাকে শান্তনা দিতে লাগল। 

"

"

"

বাসায় আসলাম।  


কিছু ভালো লাগছেনা।  বারবার সাইফার কান্নার মুখটা চোখে ভাসতেছিল। 

কখন যে নিজের চোখ থেকেও পানি ঝড়া শুরু হলো বুঝতেই পারিনি।  


ভাবতেই পারছিনা এরকম পরিস্থিতি আমার জীবনে আসবে। তাও জান্নাত করবে।  পুরান স্মৃতি গুলো ভাসতেছে চোখে। জান্নাতের সেই পাগলামি।  বারবার ভালোবাসি বলাটা। 


১০  বছর পূর্বে,,,,


গরীব ঘরের সন্তান আমি।গ্রাম থেকে ইন্টার পাশ করে ঢাকায় এসেছি। বাবা মায়ের স্বপ্ন আমি অনেক বড় হব। সেটা পূরনের জন্যই ঢাকায় আসলাম। পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে গেলাম।  একটা ম্যাসে উঠলাম। 

"

"


প্রথমদিন ক্লাসে গিয়ে  ক্লাস করলাম কয়েকজন ফ্রেন্ড হলো। যেহেতু বাবা কৃষক তাই চিন্তা করলাম কয়েকটা টিউশনি নিয়ে যদি নিজের খরচ নিজে চালাইতে পারি তাহলে কিছুটা কষ্ট কমবে আব্বুর।  সে লক্ষে টিউশনি খুজতে লাগলাম।।

বিজ্ঞপ্তি দিলাম।  আলহামদুলিল্লাহ পেয়েও গেলাম।  পরদিন ঠিকানামতো সেই বাড়িতে গেলাম।অনেক বড় বাড়ি। বুঝাই গেল যে অনেক বড় লোক। 


দাড়োয়ানের কাছে পরিচয় দিতেই ভিতরে নিয়ে গেল। ড্রয়িং রুমে বসতে বলল। 


কিছুক্ষন পর একজন আসল। বুঝলাম ঈনিই এ বাড়ির মালিক।  আমি সালাম দিলাম। ওনি উত্তর নিলেন।


ওনিঃ দেখো বাবা আমার বড় মেয়েটা পড়াশোনা করে। কিন্তু ছোট জন পরতেই চায়না।  আশা করি তুমি ওরে ভালো করে পড়াইতে পারবা।

আমিঃ আংকেল আমি পুরো চেষ্টা করব।  


ওইদিন আরো কিছুক্ষন কথা বলে চলে আসলাম।ছাত্রী বাসায় ছিল না তাই তার সাথে দেখা হলো না।।


পরদিন সময় মতো  চলে গেলাম পড়াইতে। ও হ্যা আমার ছাত্রীর নাম হলো সিনথিয়া।  ষষ্ঠ শ্রেনিতে পড়ে।


সিনথিয়াঃ আচ্ছা আপনাকে আমি কি বলে ডাকব?

আমিঃ ভাইয়া বলে ডাকলেই চলবে?

সিনথিয়াঃ  আপনার ফ্যামিলি তে কে কে আছে?

আমিঃ বাবা মা ছোট ভাই আর বোন। 

সিনথিয়াঃ ঢাকায় কেন এসেছেন।

আমিঃ পড়াশোনা করতে

সিনথিয়াঃ তাহলে করুন না আমাকে কেন জ্বালাইতে চলে আসলেন।


ওর কথা শুনে আমি বেয়াক্কল হয়ে গেলাম। ধমক দিলাম। ভয় পেলোনা। যাহোক ওইদিন কোনোরকমে  পরিয়ে বাসায় আসলাম।


পরদিন,,,


TO BE  continue   

Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post