লেডি কুইন পর্ব ১০ | Leady Queen part 10 | storyBD.xyz

 লেডি কুইন 

পর্ব ১০ 

লেখা: Meherab Kabbo 


শুভ্র আশফা গেইট দিয়ে ঢুকে গাড়িটা থামিয়ে দাঁড়ালো ।  আরোহী ছুটে এসে অবাক হয়ে চেয়ে পড়লো।  আরোহী  মুখে হাসি ফুটে উঠলো কারণ মেহেরাব গেইট দিয়ে ঢুকছে।  শুভ্র আশফা মেহেরাবের সামনে দাঁড়িয়ে 

-এতদিন কই ছিলি আসার নাম নেই কোনো।

-গ্রামের বাড়িতে গেছিলাম।  আব্বু অসুস্থ ছিলো দেখতে। 

আশফা বলে উঠলো 

-তাই বলে কি না জানিয়ে যেতে হবে৷  একবার তো ফোন দিলে পারতেন? 

-আমি হঠাৎ করেই চলে গেছি।ক্ষ্যাতে কাজ করতে যেয়ে ফোনটা পড়ে যায়৷যার জন্য যোগাযোগ করতে পারিনি।  


আরোহী এসেই মেহেরাবে হাত ধরে টেনে পাশে নিয়ে গেলো।  শুভ্র আশফা অবাক হয়ে গেলো।  লিমন অরিন কুহু চলে আসলো।  মেহেরাব মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে আর মনের ভেতর ভয় কাজ করছে।  মেহেরাব বলে উঠলো  

-আমাকে প্লিজ মারবেন না।  আমি ভার্সিটিতে আসছি ছাড়পত্র নিতে।  নিয়ে চলে যাবো আর কখনো এই ভার্সিটির ত্রি সীমানায় পা দিবো না।  

আরোহী মেহেরাবের হাত দুটো ধরে 

-এই ভার্সিটি ছেড়ে কোথা ও যেতে হবে না৷  আমি রিয়েলি সরি।  আমার ভূল হয়ে গেছে।  আমাকে কি মাফ করা যায় না।  

মেহেরাব আরোহীর এমন কথা শুনে হতভম্ব।  চোখ তুলে আরোহীর দিকে তাকিয়ে হা হয়ে গেছে।  আরোহীর চোখের কোণে পানি জমে আছে৷  মেহেরাব এ কাকে দেখছে। যার দু চোখে শুধুই হিংস্রতা দেখা যেতো সে এতটা চেঞ্জ কিভাবে হলো৷  আরোহী আবার ও বলে উঠলো 

-জানি আমার এই অন্যায়ের ক্ষমা নেই।  আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না তুই প্লিজ আমাকে মাফ করে দে।  

-আরে কি বলছেন আপনি এসব। আমার মতো ক্ষ্যাত ছেলের কাছে মাফ চাইছেন কেন?  আসলে কপাল জোড়ে বেঁচে আছি৷  মাফ চাইতে হবে না। মানুষ মাত্রই তো ভূল করে।  

-ক্ষমা করিসনি আমাকে। 

-করে দিয়েছে তো।


Lady Queen



নেহা এসে আরোহীর পাশে দাঁড়িয়ে 

-এই তুই কই ছিলি এতদিন।  কত খুঁজছি । তোর খবর আছে।  

মেহেরাব নেহার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো।   আরোহী বলে উঠলো

-নেহা ঠিক ভাবে কথা বল।  

-আরোহী তোর আবার কি হলো।  আমরা সেম ক্লাসে পড়ি ওকে তো তুই করে বলতে পারি।  

হৃদয় এসে মেহেরাবকে জরিয়ে ধরে

-দোস্ত সরি রে৷  মাফ করে দে।  তোর সাথে অনেক বড় অন্যায় করেছি৷  রাগ করে থাকিস না।  সরি দোস্ত৷। 

মেহেরাব হা হয়ে গেলো। হৃদয় মেহেরাবকে ছেড়ে দিয়ে 

-রাগ করে থাকবি। আচ্ছা কান ধরো উঠ বস করছি । 

হৃদয় কান ধরে উঠবস করা শুরু করে দিলো৷  মেহেরাব হৃদয়কে থামিয়ে দিয়ে 

-তুই কি পাগল হলি নাকি।  বন্ধুর উপর কি রাগ করে থাকা যায়।  

-তুই তো রেগে আছিস।  এতদিন কই ছিলি। 

-গ্রামের বাড়িতে।  

আরোহী বলে উঠলো

-তোদের কথা শেষ হলে যা।  মেহেরাবের সাথে আমার কথা আছে। 

আরোহীর কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে গেলো।  ভার্সিটিতে একটা কার ঢুকলো।  আরোহী মেহেরাবের হাত ধরে নিয়ে গাড়িতে উঠালো।  মেহেরাব ভয় পেয়ে গেলো।  আশফা আরোহীকে বলে উঠলো

-ওকে নিয়ে কই যাস। 

-ওর সাথে আমার দরকার আছে।  একান্তই।  

গাড়ি ভার্সিটি থেকে বেড়িয়ে গেলো।   কুহু লিমনকে বলে উঠলো 

-বেচারার কপাল পুড়ছে। 

-কি জানি কি করে? 

-আরোহী কি করতে চায়।  এতদিন পাগলের মতো খুজলো আজকে আবার নিয়ে গেলো। 

-বুঝতে পারছি না। 


নেহা হৃদয় এক অপরের দিকে তাকালো৷ তারপর 

-মেহেরাবকে তো আরোহী চোখেই দেখতে পারে না।  তাহলে আজ হঠাৎ। 

-হ্যা।  আচ্ছা আরোহী মেহেরাবের কিছু করবে না তো। 

-কেন ও কি করবে। 

-ওকে তুমি চেনো৷  কাউকে মারতে দু বার ভাবে না। 



আশফা শুভ্রকে বললো 

-আমার কাছে ব্যাপারটা ঘোলাটে লাগছে। 

-হ্যা আমার কাছে ও।  ওকে তো ভার্সিটির কেউ চোখে দেখতে পারতো না।  তাহলে সবাই এই ক দিনে এত চেঞ্জ কিভাবে হলো।  

-কোনো তো রহস্য আছে। 

-রহস্য থাকুক আর যায় থাকুক মেহেরাবকে যে অপমান করবে তাকে ছেড়ে কথা বলবো না।  



গাড়িটা বেশ দূরে চলে আসলো।  মেহেরাব গাড়ির দরজা থেকে একটু দূরে বসে 

-দেখুন আমি আপনার ব্যাপারে কিছু বলবো না।  আমাকে প্লিজ মারবেন না।  আমি ভার্সিটি ছেড়ে চলে যাবো।  

আরোহী মুচকি হেস 

-আরে তুমি এত ভয় পাচ্ছো কেন?  আমি তোমার কিছু করবো না।  

-দেখুন আমি তো বলছি এই শহর ছেড়ে চলে যাবো আর কখনো আসবো না।  

-মেহেরাব এবার কিন্তু আমার রাগ উঠবে।  আমি তোমার সাথে একান্তই কথা বলতে চায়।  তুমি ভয় পেয়ো না।  


গাড়িটা এসে নদীর পাড়ে এসে থামে।  আরোহী গাড়ি থেকে নেমে  মেহেরাবকে নামিয়ে নদীর কিনারায় যেয়ে বেঞ্চের উপর যেয়ে বসে।  মেহেরাব পাশে দাড়িয়ে থাকে।  আরোহী মেহেরাবের দিকে তাকিয়ে 

-বসো।  দাঁড়িয়ে আছো কেন? 

মেহেরাব ঘাবড়ে যায়।  মনে মনে ভাবে তাহলে কি এবার নদীর পানিতে ফেলে মারবে আমাকে।  

আরোহী এবার রাগি লুকে মেহেরাবের দিকে তাকিয়ে 

-বসতে বলছি তোকে৷  চুপচাপ বোস এখানে।

মেহেরাব ভয় পেয়ে যায়। আরোহীর পাশে দূরত্ব রেখে বসে।  আরোহী এবার হাসিমুখে 

-এটা আমার প্রিয় জায়গা।  এখানে এসে বসে থাকতে খুব ভালো লাগে। তবে একা থাকি।  কিন্তু আজ তোমাকে নিয়ে আসছি কেন জানো।  

মেহেরাব আরোহীর মুখের দিকে তাকিয়ে পড়লো।  আরোহীকে চিনতে মেহেরাবের কষ্ট হচ্ছে।  আগের আরোহী এখনের আরোহীর সাথে পার্থক্য আছে অনেক।  গাড়ির ভেতর যেমন হিংস্রতা দেখছিলো মেহেরাব সেদিন আজ তার কিছু নেই।  আরোহী মেহেরাবের মুখের সামনে তুরী বাজিয়ে 

-আমি তোমাকে ভূল বুঝে মারতে চেয়েছি।  তুমি আসলে অনেক ভালো একটা ছেলে৷  তোমার কিছু নেই তবুও মানুষের জন্য কত কি করলে।  আমি তোমাকে না জেনে শুনে মারতে চেয়েছি।  তার জন্য নিজের কাছে নিজেকে ঘৃণা করতে হচ্ছে।  তুমি কি আমাকে সত্যি ক্ষমা করে দিয়েছো।  


মেহেরাব আরোহীর দিকে ফিরতেই চোখ বড় বড় করে দিলো৷  আরোহীকে ডাক্কা মেরে বেঞ্চ থেকে ফেলে দিলো 



(Waiting for next part)

Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post