লেডি কুইন পর্ব ১৬ | Leady Queen part 16 | storyBD.xyz - Bangla Romantic Love Story | Bangla Golpo

লেডি কুইন Lady Queen

পর্ব ১৬ 

লেখা: Meherab Kabbo 



আরোহী কুহুকে জিঙ্গেস করে 

-সেদিন নদীর পাড়ে তোরা গিছেলি 

-হ্যা। 

-সেখানে কোনো গাড়ি বা লোকেজন ছিলো তুই আমাকে বলিসনি কেন? 

-ওর ভূলে গেছিলাম।  

-তুই কি জানিস মেহেরাব আমাকে বাচানোর জন্য ডাক্কাটা মেরেছিলো।  গুলিটা ওর হাতের পাশ দিয়ে ঘেঁষে গেছে।  

-তাহলে মেহেরাব তোকে গাড়িতে করে তোর সাথে। আর লোকগুলোই বা কারা।  

-আমার ও একই প্রশ্ন কারা ছিলো সেদিন।  আমার বিপদে এভাবে ছুটে আসলো।  

-বুঝতাছি না।  



গাড়ি থেকে কিছু লোক নেমে মেহেরাবকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।  মেহেরাব গাড়ির ভেতর বলতে লাগলো 

-কারা আপনারা আমাকে কেন?  তুলে নিয়ে যাচ্ছেন

-চুপচাপ বোস।  বেশি বকবি তো মাথায় গুলি করে দিবো৷ 

মেহেরাব ভয় পেয়ে চুপচাপ বসে থাকে।  


আরোহী ফোনটা বের করে মর্জিনা খাঁনকে ফোন দেয় ।  (মর্জিনা খান আরোহীর মা) ফোনটা রিসিভ করেই 

-my sweetheart how are you? 

-তুমি যতদ্রুত কালের ভেতর দেশে চলে এসো৷  

মর্জিনা খান অবাক হয়ে 

-কেন? কি হয়েছে৷ 

-তোমাকে ছাড়া এই ডিলে সাইন করবে না৷ । 

-হোয়াইট কার এত বড় সাহস।  আমার কুইনকে রেখে আমাকে প্রয়োজন। 

-বুঝতে পারছি না।  তুমি চলে এসো।  

-ঠিক আছে।  আমি কালকেই দেশে ফিরছি৷  

-লাভ ইউ মম 

-লাভ ইউ টু কুইন৷  

ফোনটা কেটে দিলো।  কুহু বলে উঠলো 

-আন্টি দেশে ফিরলে কি হবেনে।  

-কেন?

-আন্টি তো তোর থেকে বড় কুইন ছিলো।  সে আসছে জানলে শহর ছেড়ে সব পলাবে।  

আরোহী হেসে উঠলো  আর বললো 

-হ্যা পালিয়ে যাক।  এখানে কোনো অন্যায়কারীদের জায়গা নেই৷  



গাড়িগুলো এসে থামলো একটা বাসার সামনে।  বাড়িটার লাইটিং এ বাড়িটাকে সেই সুন্দর দেখতে৷  মেহেরাব বাড়িটার সৌন্দর্য দেখে হা হয়ে যায়।  মেহেরাবকে নিয়ে বাড়িটার ভেতরে ঢুকে৷ কলিংবেল চিপলো৷  দরজাটা খুলে দিলো।  মেহেরাব অবাক হয়ে গেলো ড্রইংরুম দেখে৷  মেহেরাবকে বসতে পড়লো।  মেহেরাব ভাবছে আমাকে এখানে কেন তুলে আনা হলো। এনে বা এখানে কেন? মেহেরাব সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলো আরোহী সামনে দাঁড়িয়ে আছে।  আরোহীর আঙ্গুলের ইশারায় সবাই ড্রইংরুম থেকে চলে গেলো৷  মেহেরাব ঢোক গিললো৷  আরোহী মেহেরাবের দিকে রাগি দৃষ্টিতে  তাকিয়ে  

-হিরো হতে চেয়েছিলি তাই না।  তোর হিরো হওয়া আমি আজ বের করবো। 

মেহেরাব নার্ভাস হয়ে 

-মা মা মা মা নে। 

-তুই আমাকে বলিসনি কেন  ?  নদীর পাড়ে সেদিন ঘটে যাওয়া কাহিনী। 

-আ আ আ আমি তো ব ব ব বলতে চে চে চেয়ছিলাম আ আ আপনি ত শুনেননি।  

কুহু এক গ্লাস পানি এনে মেহেরাবের সামনে ধরে

-খেয়ে নে৷  আর এত ভয় পেতে হবে না। 


মেহেরাব পানি নিয়ে ঢক ঢকঢক করে খেতে লাগলো।  



নেহা ছুটে গেলো হাসপাতালে।  বসে আছে হৃদয়।  নেহা হৃদয়ের সামনে দাঁড়িয়ে 

-কি অবস্থা এখন আন্টির। 

-অপারেশন করাতে হবে। কিন্তু সম্পূর্ণ টাকা জোগাড় হয়নি।  

-তুমি চিন্তা করো না।  তুমি যাও আন্টির কাছে বসো  আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলে দেখছি কি করা যায়? 

-কোনো কাজ হবে না।  

-তোমাকে যা বলছি করো।  আর তুমি আমাকে লেট করে না বললে পারতা।  

নেহা চলে গেলো ডাক্তারের কাছে।  ডাক্তারের সাথে কথাবার্তা ফাইনলান করে নিলো।  




শুভ্র আশফা ফুটপাতের পাশ দিয়ে হাটছিলো৷ হঠাৎ করে একটা বাচ্চা ছেলে এসে 

-ভাইজান দশটা টাকা দেন?  পেতে এখনো কিছু পড়েনি। মা ও না খেয়ে আছে।  আজ কেউ একটা টাকা দেয় নাই।  

আশফা শুভ্র অবাক হয়ে গেলো ছেলেটার কথা শুনে।  আশফা বললো

-তোমার বাবা নেই? আর দশটাকা দিয়ে কি খাবার কিনবা।  

-বাবা তো ছোট থাকতেই মারা গেছে।  আমার এই দুনিয়ায় মা ছাড়া কেউ নেই।  মায়ের খুব জ্বর কদিন বাসা থেকে বের হয়নি কাজে যেতে পারেনি৷  যা ছিলো সব শেষ।  দশটাকা দিয়ে দুটো বন রুটি কিনবো আর দু টাকার চিনি কিনবো।  

শুভ্র বলে উঠলো

-ডাক্তার দেখাও নি তোমার মা কে? 

-ডাক্তার দেখাতে গেছিলাম টাকা ছাড়া মা কে দেখবে না।  ফিস চায় তাদের।  

-ঠিক আছে চলো আমাদের সাথে।  

 বাচ্চা ছেলেটাকে নিয়ে গেলো।  



মেহেরাবের পানি খাওয়া শেষে কুহু বলে উঠলো 

-তুই সেদিন হাসপাতালে সত্যি কথাটা বললে তোকে আর আমরা ভূল বুঝতাম না।  

আরোহী মেহেরাবের দিকে এগিয়ে 

-হিরো হতে চেয়েছিলি।  গুলিটা যদি তোর লাগতো 

-মরে যেতাম।  

আরোহী ঠাস ঠাস করে মেহেরাবের গালে চড় বসিয়ে দিয়ে 

-মরার কথা আমার সামনে বলবি না।  তুই ক্লাবে কাজ করিস কেন ?  

-না করলে খাবো কি ?  অনেক কষ্টে পার্ট টাইম জবটা পেয়েছি আপনি তা কেড়ে নিলেন। 

-তুই আমাকে এই কথাটা তখন না বলে ম্যাডাম ম্যাডাম বলতেছিলি কেন?

-ম্যাডাম না বললে তো চাকরিটা যেতো।  ওখানের তো এটাই নিয়ম।  চেনা জানা কেউ থাকলে ও একই ভাবে কথা বলতে হবে৷  হাসি তামাশা বাইরে বসে৷ কাজের ভেতর না।  

-হুম তোকে আর ক্লাবে কাজ করতে হবে না।  তুই আমার সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করবি।  

মেহেরাব অবাক হয়ে 

-মানে?  না আমি পারবো না।  

-কি পারবি না বল।  তুই তো জানিস আমি কি করতে পারি৷  

-না আমি কোনো মেয়ের সিকিউরিটি গার্ড হবো না।  মাফ করবেন?  এর থেকে আমি কোন কাজ করবো না।  


মেহেরাব কথাটা বলে দরজার দিকে যেতে যাবে কুহু বলে উঠলো 

-দাঁড়া।  আমাদের অনুমতি ছাড়া তুই এখান থেকে যেতে পারবি না।  


মেহেরাব মনে মনে বলতে লাগলো আল্লাহ তুমি আমাকে বাঁচাও এই চুন্নির থেকে৷। 



ডাক্তার নার্স বেডে ঢুকে হৃদয়ের মা কে নিয়ে অপারেশন থিয়েটার এ নিয়ে গেলো।  হৃদয় অবাক হয়ে গেলো।  নেহা এসে হৃদয়ের হাতে একটা পিসকেপসন আর কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে 

-এইগুলো ব্যস্ত নিয়ে এসো লাগবে।  আর হ্যা ভেঙ্গে পড়ো না আমি তো আছি।  

হৃদয় কি বলবে বুঝতে পারছে না।  হৃদয়ের চোখ বেয়ে পানি ঝড়লো।  নেহা বলে উঠলো 

-ব্যস্ত যেয়ে নিয়ে এসো।  যাও।  

হৃদয় বলে উঠলো 

-তোমার এই ঋণ আমি কখনো শোধ করতে পারবো না।  

-হুম করো না। কিন্তু সারাজীবন আমার সাথে থেকো।  

হৃদয় নেহার হাত দুটো ধরে 

-হুম থাকবো।  

-এখন তো যাও ঐ গুলো নিয়ে এসো।  

হৃদয় চলে গেলো।  



শুভ্র আশফা বাচ্চা ছেলেটাকে সাথে নিয়ে কিছু খাবার কিনলো। ডাক্তার নিয়ে ছেলেটার সাথে বাসায় গেলো।  ডাক্তার ছেলেটার মাকে দেখে ওষুধ লিখে দিলো।  বাচ্চা ছেলেটার চোখে পানি।  ছেলেটার মা বলে উঠলো

-কে তোমরা?  আমার মতো গরীবের জন্য এত কিছু করলে। 

-আমরা আপনার ছেলে মেয়ের মতো।  এটা তো আমাদের কর্তব্য।  এখানে এক মাসের বাজার সদয় আছে এটা দিয়ে দিব্যি চলে যাবে আপনাদের।  আর ছোটুকে স্কুলে পাঠায়েইন।  কোনকিছুর প্রয়োজন হলে আমাদের কাছে ছোটুকে পাঠিয়েন।  


মহিলাটা কেঁদে দিয়ে

-তোমাগো দোয়া করি বেচে থাকো সারাজীবন তোমরা।  আল্লাহ তোমাগে ভালো করুক।  


আশফা আর শুভ্র চলে আসলো।




আরোহী বলে উঠলো

-মনে মনে গালি দিচ্ছিস 

-ক কই না তো।  

-কুহু ওর রুমটা দেখিয়ে দে কাল থেকে ও আমার সাথে থাকবে৷  

-ঠিক আছে।  

মেহেরাব কি করবে বুঝতে পারছে না।  মেহেরাব ভাবতে লাগলো একথাটা কে ওকে বললো।  কিভাবে জানলো।  আমার তো কোনোই কথা শুনতে রাজি ছিলো না।  যাক ভালোই হয়েছে এতদিন যে ভূলটা নিয়ে ছিলো তা ভেঙ্গে গেছে।  


মেহেরাবকে রুম দেখিয়ে দিলো।  মেহেরাব রুমে গেলো। দরজা আটকিয়ে দিলো।  ওয়াশরুম থেকে  ফ্রেশ হয়ে বের হলো।  দরজা ধাক্কানোর শব্দ শুনে দরজা খুললো।  কুহু রাগি দৃষ্টিতে চেয়ে আছে।  কুহু বলে উঠলো 

-কতক্ষণ থেকে দরজা ধাক্কাছি খুলিসনা কেন? 

-ওয়াশরুমে ছিলাম শুনতে পায়নি। 

-এর পর থেকে যেনো আর দরজা না লাগানো হয়।  লাগালে তোর ঠ্যাং ভেঙ্গে দিবো।  খেতে আয়।  

-আমি এখন খাবো না। 

-কি বললি?  আরোহী আসলে কি হবে জানিস তো।  

-ঠিক আছে চলেন।  

মেহেরাব কুহুর পিছন পিছন গেলো।  ডাইনিং টেবিলে বসলো।  আরোহী মেহেরাবের সামনে।  কুহু বলে উঠলো

-আরোহী শখ করে আজ বিরিয়ানি রান্না করছে খেয়ে বল কেমন হয়েছে।  

মেহেরাব মনে মনে খুশি হলো।  মুখে খাবার নিয়ে থেমে গেলো। কুহু আরোহীর দিকে তাকালো।  কুহু বললো -কি হয়েছে 

মেহেরাব খাবারটুকু গিলে 

-কিছু না।  খুব সুন্দর হয়েছে।  

আরোহী হেসে বললো 

-আরেকটু দি খা। 

-না আর লাগবে না। 

আরোহী মেহেরাবের দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকালো মেহেরাব বললো 

-দেন?  খুব টেস্টি হয়েছে।  

Lady Queen লেডি কুইন


মেহেরাব সবটুকু খেয়ে নিজের রুমে চলে গেলো।  কুহু খাবার মুখে নিয়ে থেমে গেলো.  আরোহী বললো 

-কি হয়েছে?

-আমার পেটে কেমন করছে আসছি।  তুই খাওয়া শুরু কর।  


কুহু খাবার মুখে নিয়ে দৌড় দিলো।  আরোহী খাবার নিয়ে মুখে দিলো।  খাবারটা ভেতরে যাওয়ার আগেই মুখ থেকে ফেলে দিয়ে ঝালে চিল্লাইতে থাকলো।  

মেহেরাব রুমের ভেতর বসে নিজের চুল নিজে টেনে ছিঁড়ছে।  আর ঝালে ছিছাচ্ছে জোরে  জোরে।  


মেহেরাবের  কাধে কারো হাতের স্পর্শ পেলো।  পিছন ফিরতে অবাক হয়ে গেলো 


( Waiting for next part


Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post