LOVE is nOt LoVe। Bangla sad story - storybd.xyz

 LOVE IS NOT LOVE

লেখকঃ Arian Sumon..



আমি গল্প লিখি সবাই জানে। মোটামোটি অনেকেই আমাকে চিনে। তো একদিন একটা মেসেজ আসে।  


শান সাহাঃ ভাই একটা কথা বলব রাখবেন??

আমিঃ হুম বলেন

শান সাহাঃ আমার জীবনের একটা গল্প লিখে দিবেন প্লিজ।

আমিঃ কি রকম??

শাম সাহাঃ আমার লাইফের ভাই

আমিঃ ওকে বলুন চেষ্টা করব। 

শান সাহাঃ এভাবে তো বলতে পারব না। ফোনে বলি??  নাম্বার টা দিন

আমিঃ হুম। ০১৭৬৪০৭****

শান সাহাঃ ওকে কল দিচ্ছি। 


একটু পর ওনি কল দেয়। এবং বলতে শুরু করে,,,


আমি শান।  মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে।

তো একদিন ফেসবুক নিউজফিডে ঘুরাঘুরি করতেছিলাম।

এমন সময়েই একটা মেসেজ রিকুয়েস্ট আসে। যাহোক চেক করে দেখি মেয়ের আইডি। নাম অবন্তিকা   । আমি তো তখন আকাশে উড়তেছিলাম। একটা মেয়ে আমাকে রিকুয়েস্ট দিছে ভাবতেই পারছিনা। 


মেসেজ দেখে তো আরো বেশি অভাক। লিখা আছে ঃ রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করুন।


খুশির ঠেলায় টিপ পড়িয়া একসেপ্ট হয়ে যায়। 

সাথে সাথেই মেসেজ আসে,,,


অবন্তিকাঃ কেমন আছ?? 

আমিঃ মোটামোটি দিন কাল চলে যাচ্ছে।

অবন্তিকাঃ ওহ আচ্ছা। 

আমিঃ আচ্ছা আপনি কে চিনলাম না তো।

অবন্তিকাঃ এত তারা কিসের আস্তে আস্তে চিনে ফেলবেন। 

 আমিঃ এখন বললে সমস্যা কি?

অবন্তিকাঃ সমস্যা নেই। তবে পরে বলব।  ওকে এখন গেলাম। টা টা।good night...

আমিঃ Oh hlww...শুনবেন তো।


নাহ আর রিপ্লাই দিল না।  


নানা চিন্তা মাথায় ঘুরতে লাগল। কে কোথায় থাকে। আমাকে কেন মেসেজ দিল। এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে যাই। 

"

"

পরদিন আবার রাতে মেসেজ আসল,,


অবন্তিকাঃ আচ্ছা আপনি এমন কেন

আমিঃ কি করলাম?

অবন্তিকাঃ এত অপরিচ্ছন্ন থাকেন কেন

আমিঃ Oh hlw...আপনি কে বলুন তো। 

অবন্তিকাঃ ভালোবাসি।

আমিঃ what???

অবন্তিকাঃ হুম ভালোবাসি

আমিঃ কাকে??

অবন্তিকাঃ আপনাকে অনেক বেশি

আমিঃ ওকে বাই। ভালো থাকবেন।

অবন্তিকাঃ কেন কি হইছে

আমিঃ কিছুনা আপনি আর মেসেজ দিবেন না।


এই বলে মোবাইল রেখে দিলাম। চিন্তা করতে লাগলাম। মেয়েটা কে?? দেখতে চাইব নাকি? আমি অপরিচ্ছন্ন থাকি না কি করি  মেয়েটা জানল কিভাবে,,

"

"

তো কয়েকদিন পর কলেজ থেকে ফিরতেছিলাম।  


এমন সময় পেছন থেকে একজন শান বলে ডাক দিল। ডাক শুনে পিছন ঘুরে দেখি।  আমার খালাতো বোন সামিয়া। সাথে আরেক টা মেয়ে,,


আমিঃ কিরে কেমন আছিস??

সামিয়াঃ ভালো ভাইয়া।  তুমি কেমন আছ?

আমিঃ ভালোই। 

সামিয়াঃ ভাইয়া এ হচ্ছে বড় আপুর ননদ পৌলমী

আমিঃ ওহ হাই কেমন আছেন

পৌলমীঃ ভালো।

সামিয়াঃ আচ্ছা আজ আসি। ভাইয়া পরে কথা হবে।

আমিঃ ওকে।।


রাতে ওই আইডি থেকে আবার মেসেজ আসল,,,


অবন্তিকাঃ হেলো কেমন আছেন?

আমি সিন করে রেখে দিলাম।

অবন্তিকাঃ আরে কথা বলছেন না কেন?

আমিঃ আপনি কে সেটা বলুন

অবন্তিকাঃ বলছি এত রাগেন কেন

আমিঃ বলেন

অবন্তিকাঃ আমি পৌলমী। ঐ যে বিকালে সামিয়ার সাথে ছিলাম।

আমিঃ ওহ আপনি তো এসবের মানে কি?

পৌলমীঃ বিশ্বাস করেন আমি সত্যিই আপনাকে ভালোবাসি।

আমিঃ দেখুন এসব ভালোবাসা টালোবাসা আমি বিশ্বাস করিনা। তাই এসব বাদ দেন

পৌলমীঃ কেন?

আমিঃ এমনি। আর সব থেকে বড় কথা হলো আপনার সাথে আমার যায় না। আপনি হচ্ছে ধনীর মেয়ে। আর কোথায় আমি। 

পৌলমীঃ এত কথা বলেন কেন। আমি টাকা পয়সা লাগবেনা। আমি শুধু তোমাকে চাই। 

আমিঃ সরি।  আমি ভালোবাসতে পারব না। 

পৌলমীঃ দেখা করি? প্লিজ


উত্তর দিলাম না। বেড় হয়ে গেলাম অনলাইন থেকে। 

ঘুমিয়ে গেলাম ভাবতে ভাবতে।


পরদিন সকালে মেসেজ চেক করে দেখি। অনেক বার আই লাভ  ইউ বলেছে। সাথে আরো কিছু।


যাহোক কলেজে চলে গেলাম। কলেজ থেকে বেড় হতেই।  সামিয়ার বড় বোন  সাদিয়ার কল আসল,,,


সাদিয়াঃ হেলো শান কোথায় তুই?

আমিঃ আপু আমি এইমাত্র কলেজ থেকে ফিরলাম। 

সাদিয়াঃ ওহ আচ্ছা সোজা আমাদের বাড়িতে চলে আয়।

আমিঃ কেন?

সাদিয়াঃ আয় তুই কথা আছে। 

আমিঃ আচ্ছা আসতেছি। 


কলেজ থেকেই সোজা আপুদের বাসায় গেলাম।

বাসায় যেতেই আপু এসে আমাকে ছাদে নিয়া গেল। গিয়ে দেখি সেখানে সামিয়া পৌলমী।


আমিঃ আপু এখানে এনেছ কেন?

সাদিয়াঃ তোর সমস্যা কি ওরে না করছিস কেন?

আমিঃ আপু তুমিও?

সাদিয়াঃ দেখ ভাই ও তোকে সেই বিয়ের সময় দেখেই ভালোবেসে ফেলছে। 

আমিঃ তো আমি কি করব??

সাদিয়াঃ ভালোবাসবি। দুজন একত্রে হবি। এটাই আমি চাই

আমিঃ আপু কোথায় ও আর কোথায় আমি??  

সাদিয়াঃ ওসব বাদ দে। বিয়ের সব দায়িত্ব আমি নিলাম।

আমিঃ ওকে আমি ভেবে দেখি

সাদিয়াঃ আজকে রাতেই যেন শুনি তুই রাজি।

আমিঃ দেখি। 


সেদিন রাতে অনেক ভাবলাম। কিন্তু মন কিছুতেই সায় দিচ্ছিল না। আসলে আমি মধবিত্ত পরিবারের ছেলে আর পৌলমীর বাবা অনেক বড় লোক।।  কিছুতেই মিলাইতে পারছিনা। 


পরদিন কলেজ শেষ করলাম। কলেজ থেকে বাসায় ফিরছি।  রাস্তাতেই দেখি সামিয়া আর পৌলমী দাঁড়িয়ে আছে। 


বুঝে গেলাম কেন এসেছে। এড়িয়ে চলতে গেলাম। পৌলমী এসে রাস্তা আটকালো 


আমিঃ দেখো আমি এসব পারব না। সরি।

পৌলমীঃ পারবানা মানে কি? পারতেই হবে। নাহলে

আমিঃ নাহলে কি?

পৌলমীঃ নিজেকে শেষ করে দিব।

আমিঃ পাগলামি করবেন না প্লিজ

সামিয়াঃ ও তোমার জন্য এত পাগল। তুমি বুঝতেছ না কেন। জানো কাল সারারাত আমাকে একটুও ঘুমাতে দেয়নি। খালি তুমি কি বলবা এটা বলছে। প্লিজ ভাইয়া রাজি রয়ে যাও।

আমিঃ আরে  বুঝিস না কেন?


এমন সময়েই পৌলমী একটা ব্লেড হাতে নেয়। এবং আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই  হাতে একটা পোছ দেয়। সাথে সাথেই রক্ত বেড় হয়ে আসে।


আমি গিয়ে ওর হাত টা ধরলাম। আর সাথে সাথে ঠাসসস করে একটা চড় মারলাম। 


ভাগ্য ভালো ছিল কাছেই একটা ফার্মেসি ছিল। সেখান নিয়া ওয়াশ করিয়ে বেন্ডেজ করিয়ে দিলাম।  তারপর বাসায় পাঠিয়ে দিলাম। 


রাতে শুয়ে শুয়ে এসব ভাবছি। সাদিয়া আপু কল দিল ধরলাম


সাদিয়াঃ তুই কি মানুষ? একটা মেয়ে তোর জন্য এতকিছু করে ফেলল। তারপরও রাজি হইবিনা??

আমিঃ চুপ করে আছি

সাদিয়াঃ যা তুই থাক তোর ইগো নিয়ে। 


এই বলে কেটে দিল। 


আমি ভাবতে লাগলাম নাহ। আর মানা করা যায়না। মেয়েটা আসলেই আমাকে ভালোবাসে।অনেক বেশিই ভালোবাসে।।


আমি রাজি হয়ে যাব ঠিক করলাম। তাই ফেসবুকে ডুকলাম। ডুকতেই দেখি পৌলমীর মেসেজ,,


পৌলমীঃ আর কি করলে বুঝবা বলো???

আমি রিপ্লাই দিলাম,,

আমিঃ আর কিছু করতে হবেনা। আমি রাজি। 

পৌলমীঃ কি সত্যিইইইইই

আমিঃ হুম।

পৌলমীঃ I LOVE YOU বলো

আমিঃ I LOVE YOU... I LOVE YOU SO MUCH POWLOMI...

পৌলমীঃ ভালোবাসি ভালোবাসি এত ভালোবাসি তোমাকে যে কল্পনাও করতে পারবানা।  কাল দেখা করবা প্লিজ

আমিঃ ওকে। কলেজ ছুটির পর।।


শুরু  হলো লুতুর পুতুর প্রেম করা। সেদিন রাত ৪ টা পর্যন্ত প্রেম করছি। 


পরদিন কলেজ ছুটির পরেই ওর সাথে ঘুরতে চলে যাই। অনেক ঘুরাঘুরি করলাম। 


এভাবেই প্রেম দিন দিন গভীর হচ্ছিল। একসময় কেউ কাউকে ছাড়া একমুহুর্ত থাকতে পারতাম না। সবসময় ফোনে অথবা ফেসবুকে কানেক্ট থাকতাম। 


এমনি একদিন  কালি পুজার সময়,,,,


আমার উপর একটা কাজের ভার পরে। যার ফলে আমি একটু  ব্যস্থ ছিলাম। পৌলমী আমাকে কল দেয়। ধরি,,,


পৌলমীঃ হ্যা বাবু কি করো

আমিঃ আমি একটু ব্যস্থ আছি পরে কথা বলি ওকে।


এটা বলেই রেখে দিলাম। পরে কাজ শেষ করে ফ্রি হয়েই ওরে কল দিলাম।  ও কল ধরল,,,


পৌলমীঃ কেন কল দিছ? আমি কে তোমার

আমিঃ আরে বাবু বলছিলাম তো একটু কাজ করতেছিলাম। সরি 

পৌলমীঃ না লাগবেনা। যাও

আমিঃ সরি সরি সরি

পৌলমীঃ হবেনা। ৫০ বার I LOVE YOU বলো

আমিঃ ওকে বলছি।  পুরো ৫০ বার I LOVE YOU বললাম। 

পৌলমীঃI LOVE YOU TOO

আমিঃ একবারই শেষ??

পৌলমীঃ হুম

আমিঃ ঠিক আছে এর প্রতিশোধ আমিও নিব। 

পৌলমীঃ  নিতে পারলে নিও।।


বেশিদিন লাগল না।  কয়েকদিন পরেই ও ওর বাবা মায়ের সাথে বেড়াতে যায়। তখন আমি কল দেই আর ও ব্যস্থ বলে। যার ফলে পরে আমিও ওর মুখ দিয়া ৫০ বার I LOVE YOU বলাইছি। 


যাহোক এভাবেই আমাদের দুষ্টুমিষ্টি প্রেম কাহিনি চলতে লাগল। 


এর মধ্যেই পৌলমী ওর বড় বোনের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিল। আপুরা মিল করে আমাদের বিয়ে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করতে লাগল।  


একদিন পৌলমী আমাকে কল দিয়ে বলল,,


পৌলমীঃ জানো আজকে  না একটা ছেলে আমাকে প্রপোজ করেছে

আমিঃ তো কি রাজি হয়ে যাও। 

পৌলমীঃ হুর কি বলো

আমিঃ কি আর বলব। 


এর কয়েকদিন পরেই শুরু হয়ে যায় অবহেলা।  পৌলমীকে কল দিলে পেতাম না।  ব্যস্থ বলত। মাঝে মাঝে কথা হতো। 

ভালোবাসার মরন হয়। 


তো একদিন,,,

আমিঃ পৌলমী কি হয়েছে তোমার 

পৌলমীঃ শান তুমি আমাকে ভূলে যাও

আমিঃ মানে

পৌলমীঃ বলছি তুমি আমাকে ভূলে যাও। আমি আর পারছিনা

আমিঃ কিসব বলছ

পৌলমীঃ আমি আর পারছিনা।  আমার সাথে তোমার যায় না। আমি আর পারব না ভূলে যাও আমাকে

আমিঃ আমি পারব না। পৌলমী মজা করো না তো। ভালো লাগছেনা

পৌলমীঃ ফাজলামি না। যা বলছি সিরিয়াসলি বলছি। আমি আমার মতো একজন পেয়ে গেছি তুমি আর আমার সাথে যোগাযোগ করবানা। 

আমিঃ তাহলে এতদিন যেগুলো ছিল??

পৌলমীঃ ওগুলো আবেগ ছিল। আবেগে জীবন ছিল না। so good bye...

আমিঃ পৌলমী...


কোনো উত্তর না দিয়াই ফোন কেটে দিল। এর পর আবার ফোন দিলাম ধরল না।  


কি থেকে কি হয়ে গেল।  চোখ দিয়া পানি বেড় হতে শুরু করল। ইচ্ছে করতেছিল মরে যাই। 


রাত টা কোনোরকম কাটিয়ে তারপরদিন আবার কল দিতে শুরু করলাম কোনো লাভ হলো না। নাম্বার ব্লক করে দিল। আইডি থেকেও ব্লক করে দিল। 


আমি দিশেহারা হয়ে যাই।  একসময় সুইসাইড করার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু পারিনি  কারন পরিবারের বড় সন্তান। বড় সন্তান মানেই অনেক দায়িত্ব কর্তব্য।


পৌলমীকে ভূলতে চেষ্টা করতে লাগলাম। পারলাম না। এখনও কাদি প্রায় রাতেই।  ওরে না পাওয়ার ব্যাথা টা প্রচুর। তার উপর আমি  নিজে তো ওরে বলিনি যে ভালোবাসি। ও নিজেই এসেছে। নিজে থেকে এসে নিজেই আমাকে ফেলে দিয়ে চলে গেল। 


শান ভাই....


THE END

সমাপ্তি

Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post