পরিপূর্নতায় তুই পর্ব-১। Poripurnotay Tui part 1 | bangla sad story - storybd.xyz

 পরিপূর্নতায় তুই( Poripurnotay Tui) 


1st part..

লেখকঃ Arian Sumon...




আম্মুঃ যাচ্ছিস যা। কিন্তু বাজে কিছু করিস না। 

আমিঃ করব না আম্মু। তোমরা চিন্তা করিওনা। 

আম্মুঃ চিন্তা কি আর স্বাদে করি। একটা মেয়ের জন্য তুই তোর জীবন টাকে যেভাবে নষ্ট করতেছিলি। 

আমিঃ থাক না ওসব কথা।

আব্বুঃ হুম তোমার ওসব কথা বন্ধ করো।  জীবনে এমন চড়াই উতরাই থাকবেই। যে এসব পাড় করতে সেই হলো প্রকৃত মানুষ। 

আমিঃ আচ্ছা আমি বেড় হচ্ছি। দোয়া করিও আমার জন্য।  

আব্বুঃ ওকে। নিজের যত্ন নিস।  

আমিঃ ওকে বায়। 


আমি বাসা থেকে বেড় হলাম। উদ্দেশ্য টাঙাইল যাব অফিসের কাজের জন্য। বাহিরে আমার বন্ধু রাকিব অপেক্ষা করতেছিল গাড়ি নিয়ে। আমি গিয়ে উঠতেই ও গাড়ি স্টার্ট করল। ভাবছেন যাচ্ছি  অফিসের কাজে বন্ধু আসল কোথা থেকে? আসলে রাকিব আমার ছোট বেলার বন্ধু।  ভাগ্যবশত দুজন একটা কোম্পানিতেই চাকরি করি। অবশ্য রাকিব আমার ও আরো আগে থেকে কাজ করতেছে। আমি মাত্র দু মাস হলো জয়েন করছি।  যাহোক আমি সুমন।  বাকি সব গল্পের সাথে থাকলেই বুঝতে পারবেন। 


বিকালে গিয়ে পৌছালাম টাঙাইলে। অফিসের লোক এসে আমাদের নিয়ে গেল একটা বাসায়। 


লোকটিঃ স্যার আপনারা এখানে থাকবেন।  আর কিছু দরকার হলে আমাকে বলবেন।।

রাকিবঃ তুমি কে?

লোকটিঃ আমি এখান কার দাড়োয়ান। 

রাকিবঃ ওকে।  তুমি যাও। 

লোকটিঃ আচ্ছা। 

ওনি চলে গেল। 


রাকিবঃ কিরে কেমন লাগছে

সুমনঃ ভালোই। 

রাকিবঃ ফ্রেশ হয়ে নে। 


তারপর দুজন ফ্রেশ হলাম।  আমরা বসে আছি। এমন সময় দরজায় কলিং বেল বাজল।  


আমিঃ তুই বস  আমি দেখতেছি।


আমি উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেখতেই দেখি দাড়োয়ান দাড়িয়ে আছে। 


আমিঃ আরে আপনি???

দাড়োয়ানঃ এই নিন আপনাদের খাবার। 

আমিঃ দিন। ( আমি নিলাম)  

দাড়োয়ানঃ ওকে স্যার আমি আসছি। কিছু লাগলে ডাক দিবেন।  


ওনি চলে গেল। আমি দরজা লাগিয়ে রুমে গেলাম। 


তারপর দুজন রাতের খাবার খেয়ে ঘুমালাম।  


সকালে দুজন গেলাম অফিসে।  অফিসের সব কিছুই দেখতে লাগলাম।  কিন্তু একাউন্টিং অফিসার নেই। 

ম্যানেজার কে ডাকলাম,,,


ম্যানেজারঃ জ্বী স্যার বলুন

আমিঃ ওনি কোথায়??  

ম্যানেজারঃ ইয়ে মানে স্যার  ওনি অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি আছে  

আমিঃ বুঝলাম না। বুঝিয়ে বলুন।

ম্যানেজারঃ আসলে স্যার এর দায়িত্বে আছে একজন মহিলা।  ওনি দুদিন ধরে অসুস্থ।  

আমিঃ অসুস্থ নাকি অফিসে না আসার প্ল্যান।  আজকেই লোক দিয়ে ওনার বাসায় খবর পাঠান। 

ম্যানেজারঃ  ওকে স্যার।  


সেদিনের মত কাজ শেষে বাসায় ফিরলাম। 

রাকিবঃ তুই ওমন কেন করলি

আমিঃ আমি আবার কি করলাম।

রাকিবঃ একটা মানুষ অসুস্থ হতেই পারে। তাই বইলা এমন করবি নাকি

আমিঃ আরে ধুর। দেখ গিয়া অসুস্থতার নামে দিব্বি মজা করতেছে।  মেয়েদের তো তুই চিনিস না।  

রাকিবঃ চল খাব। ক্ষুদা লাগছে  

আমিঃ ওকে। 


পরদিন  অফিসে,,,,


আমিঃ মেয়েটি কি এসেছে??

ম্যানেজারঃ না স্যার।

আমিঃ কিইই কেন? 

ম্যানেজারঃ ওনি সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আসলে ওনি প্রেগন্যান্ট

আমিঃ কে বলল

ম্যানেজারঃ কাল যে লোক পাঠিয়েছিলাম ও এসে বলল।

আমিঃ ওকে আপনি যান।   আর ওনার যদি টাকা পয়সার দরকার হয় তাহলে দিয়ে দিয়েন।  

ম্যানেজারঃ আচ্ছা স্যার। 


সেদিনের মত বাসায় ফিরলাম।।  


মন টা  খারাপ করে বসে আছি। 

রাকিবঃ কিরে তোর মন খারাপ মনে হচ্ছে  

আমিঃ কই নাতো। 

রাকিবঃ আমি দেখতে পাচ্ছি। আবার মিথ্যা কেন বলিস

আমিঃ আসলে মেয়েটার কথা ভেবে কষ্ট লাগছে। 

রাকিবঃ কোন মেয়েটারে???

আমিঃ আরে অফিসের একাউন্টিং অফিসারের পোষ্ট এ যে মেয়েটা আছে। 

রাকিবঃ ওহ আচ্ছা।  কেমন কষ্ট?

আমিঃ একটা মেয়ে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার সময় কত কষ্ট পায় তাই নারে? 

রাকিবঃ তা তো পায়। 

আমিঃ মায়ের কাছে আমরা খুব ঋণী। 

রাকিবঃ বুঝতে পারছি। এক কাজ কর। আন্টিকে কল দিয়া কথা বল।  

আমিঃ হুম।


আমি আম্মুকে কল দিলাম। 


আম্মুঃ কেমন আছিস বাবা

আমিঃ আমি ভালো।  তুমি কেমন আছ? আব্বু কেমন আছে?

আম্মুঃ আমরা ভালো। ওখানে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো?

আমিঃ না আম্মু। আমি একদম ঠিক আছি। 


তারপর আরো কিছুক্ষন কথা বললাম। তারপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমালাম। 


পরদিন অফিসে গেলাম। অফিসে কাজ করতেছি। 


এমন সময় কেউ আমার কেবিনের দরজায় নক করল। এবং মেয়েলি কন্ঠে বলল


=> ভিতরে আসব স্যার???

আমিঃ জ্বী আসুন।  


আমি এক ধ্যানে কাজ করতেছি।  


মেয়েটিঃ স্যার আমি দুঃখিত। আসলে আমি একটু অসুস্থ ছিলাম। তাই গত তিন দিন অফিসে আসতে পারিনি। 


এবার আমি মুখ তুলে তাকালাম।  তাকিয়ে আমি পুরো অভাক। দাড়িয়ে গেলাম।  কারন এ টা তো আর কেউ নয়। স্বয়ং সঞ্জিতা। যে আমার জীবন টা আলোকিত করে রেখেছিল   দুই বছর।  


আমিঃ তু তু তুমি???  

সঞ্জিতাও অভাক হয়ে আছে।  

সঞ্জিতাঃ তুমি এখানে??

আমিঃ হুম আমি।  বলছিলাম না পৃথিবী টা খুব ছোট আমাদের দেখা হয়ে যাবে। 

সঞ্জিতাঃ দুঃখিত আমি আপনাকে তুমি করে বলে ফেলছি।  আমি আসছি।


এই বলে সঞ্জিতা আমার কেবিন থেকে বেড়িয়ে গেল।  


আমি বসে পড়লাম। এই শকড এখনও কাটছে না।  আমি কি দেখলাম।  কখনো ভাবতেও পারিনি বছর খানিক পর এভাবে সঞ্জিতাকে দেখতে পারব। 


আমি ম্যানেজার কে ডাক দিলাম। ম্যনেজার আসল। 


ম্যানেজারঃ স্যার ডেকেছেন?

আমিঃ হুম।  একটু আগে যে মেয়েটা আমার রুমে আসল। 

ম্যানেজারঃ জ্বী ওনিই হলো একাউন্টিং অফিসার। নাম সঞ্জিতা। 

আমিঃ ওহ আচ্ছা।  আপনি যান। 

ম্যানেজারঃ দরকার হলে ডাকবেন। 


আমি কিছু ভাবতে পারছিনা।  ও প্র্যাগনেন্ট। তার মানে ওর বিয়ে হয়ে গেছে।  ভাবতেও পারছি না। সঞ্জিতা এত নিচ। আমার সাথে এভাবে প্রতারনা করেছে। 


অফিসের আর কোনো কাজই করতে পারলাম না। অফিস ছুটি হতেই গাড়ি নিয়া বেড় হলাম। 


কিছুক্ষন যাওয়ার পর দেখি সঞ্জিতা হেটে যাচ্ছে। মনে হয় বাসায় যাচ্ছে।  আমি গাড়ি টা ওর সামনে নিয়া রাখলাম।  

তারপর নেমে ওর সামনে দাড়ালাম। 


সঞ্জিতাঃ পথ আটকে দাড়িয়েছেন কেন? 

আমিঃ গাড়িতে উঠো। আমি এগিয়ে দিচ্ছি  

সঞ্জিতাঃ সরি স্যার আমি পারব না। 

আমিঃ উঠতে বলছি আমি উঠ। 

সঞ্জিতাঃ আমার বাসা কাছেই। হেটে যেতে পারব। আমি চলে যান

আমি হাত ধরে জোর করেই গাড়িতে বসিয়ে দিলাম।  


তারপর আমি গিয়ে গাড়ি চালাতে শুরু করলাম। আসলে ওর কষ্ট আমার সহ্য হয়না।  আগেই হতোনা। এখনও হচ্ছে না। 


দুজনই চুপ করে আছি। কিছু ক্ষন পর আমিই মুখ খুললাম,,,,


আমি; তোমার স্বামী কি করে??? 

সঞ্জিতাঃ....

আমিঃ কি হলো উত্তর দিচ্ছ না কেন?

সঞ্জিতাঃ গাড়ি থামান। 

আমিঃ কেন?

সঞ্জিতাঃ থামাতে বলছি থামান। 


আমি গাড়ি থামাইলাম। তারপর সঞ্জিতা নেমে গেল। 


আমিঃ কোথায় যাচ্ছ

সঞ্জিতাঃ আমার বাসা এখানেই। আর হ্যা খবর দার আমার পিছু করবেন না। 


এই বলে ও চলে গেল। আমি হাটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। 

তারপর রাতে বাসায় শুয়ে আছি।   কিছুতেই সঞ্জিতার মায়াবি মুখটা চোখ থেকে সড়াতে পারছিনা।  খালি ভেসে উঠছে। অন্যদিকে ভিষন কষ্ট লাগছে।  যাকে আমি আমার মন প্রান দিয়ে ভালোবেসে ছিলাম। সে এখন অন্য কারো হয়ে গেছে। শুধু অন্য কারো নয়। মা ও হতে চলেছে।  


ভিষন মনে পড়ছে অতিতের সঞ্জিতার সাথে কাটানো স্মৃতি গুলো।  কতই না ভালো ছিলাম ওর সাথে।


TO BE CONTINUE

Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post