গল্প - চাচাতো বোন যখন বস Cacato Bon Jokhn Boss
লেখক - Writers Rifat Ali Sayed
Part - 11
★★★ [ অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ ] ★★★
ওখানে আর এক মুহূর্ত না থেকে
ছাদ থেকে নিচে নেমে আমার রুমে চলে গেলাম
!
!
!___________________________________________
রুমে এসে কিছু ভালো লাগছে না ।
সব কিছু অন্ধকার মনে হচ্ছে ।
খুব কষ্ট হচ্ছে আমার । মনে হচ্ছে
আমার বুকটাকে কে যেন কুড়াল দিয়ে আঘাত করতেছে । এই মুহূর্তে যদি সৃষ্টিকর্তা আমাকে দুনিয়ার জীবন থেকে তুলিয়ে নিতো তাহলে হয়তো কিছুটা হলেও শান্তি পাইতাম ।
( আপনি যখন মৃত্যুর জন্য কামনা করবেন । মনে হয় এই মুহূর্তে আপনার মৃত্যুটা হলে আপনি অনেক যন্ত্রনার হাত থেকে রেহাই পাবেন । কিন্তু তখন হাজার বার চাইলেও আপনার মৃত্যু হবে না । কারণ এইটা মৃত্যুর বৈশিষ্ট্য বলতে পারেন , এটাই বাস্তব । তাই সেই মুহূর্তে মৃত্যুর জন্য কামনা না করে । আপনি ধৈর্য ধারণ করুন । যে সমস্যায় ভুগছেন , সেই সমস্যা সমাধান করার জন্য চেষ্টা করুন ।
আল্লাহ বলেন -
" নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলগণের সাথে রয়েছেন " ( সূরা আল-বাকারা , আয়ত ১৫৩ )
আল্লাহ অন্যান্য আয়াতে আবারো বলেন -
" তুমি সু-সংবাদ দাও ধৈর্যশীলগণকে " ( সূরা আল-বাকারা , আয়াত ১৫৫ )
এবার গল্পে ফিরি -
চোখ দিয়ে শুধু পানি পরতেছে ।
পাশে দেখি ঘুমের ওষুধ রাখা । দুইটা ঘুমের ওষুধ খেয়ে খাটের উপর শুয়ে পড়লাম ।
আমি : আমি তো তোমাকে ইচ্ছে করে ভালোবাসিনি । আমি যে নিজের অজান্তেই তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি স্বর্ণা । আমি তোমাকে কখনো ভুলতে পারবো না স্বর্ণা । কোন দিন ও না । তুমি আমার ভালোবাসা গ্ৰহন করো আর না করো কিন্তু আমি তোমাকে আজীবন ভালোবেসে যাবো । ( কান্না করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানি না )
অন্যদিকে স্বর্ণা
স্বর্ণা : এ তো দেখি আমাকে ভুল বোঝে চলে গেল । ধুর আমি এক পাগল । আবেগের বশে ওকে চড় মারলাম । আমি চড় মারলাম এই ভালোবাসা বলতে এতো দিন দেরি করলো তাই একটু রখগ হয়েছিলো । আর সাঈদ আমাকে ভুল বোঝে কান্না করতে করতে চলে গেল । এই সাঈদ দাঁড়া ( সাঈদ এর পিছনে যেতে লাগলো )
সিঁড়ি থেকে নেমে যে সাঈদ এর ঘরের দিকে পা বাড়াবে তখনি
ছোট আম্মু : কি রে তুই রাতে বেলা ছাদে কি করছিলি ( রাতে পানি খেতে উঠে দেখে স্বর্ণা ছাদের সিড়ি থেকে নামতে । আর সাঈদ কে দেখে নাই )
স্বর্ণা : না মানে এমনি গিয়েছিলাম আম্মু । ঘুম আসছিলো না তাই ( তুতলিয়ে )
ছোট আম্মু : ঘুম আসছিলো না তাই বলে একা একা ছাদে গেছিস । আচ্ছা চল আমি তোকে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছি
স্বর্ণা : না না আম্মু লাগবে তুমি যাও
ছোট আম্মু : হাজার বার লাগবে চল
জোর করে ছোট আম্মু স্বর্ণা কে নিয়ে গিয়ে শুয়ে দেয় ।
ছোট আম্মু : এখন চুপ করে চোখ বন্ধ করে থাক দেখবি ঘুম চলে আসবে
স্বর্ণা : হুম ( চোখ বন্ধ করে )
ছোট আম্মু : স্বর্ণার মাথা হাত বুলাতে থাকে ।
স্বর্ণা : ( এখন কি ঘুম ধরে ধুর । এই স্বর্ণার তো এখন সাঈদ এর জন্য মন উতলা হয়ে উঠেছে । এই স্বর্ণা যতক্ষণ সাঈদ এর কাছে যাবে না ততক্ষণ এই স্বর্ণার মন শান্ত হবে না । কিন্তু না ঘুমানো পর্যন্ত আম্মু ও আমার ঘর থেকে যাবে না , মনে মনে )
খানিকক্ষণ পর
ছোট আম্মু : পাগল মেয়ে কোথাকার । ঘুম আসছে না । এখন কি সুন্দর তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লো ( মুসকি হেসে )
তারপর ছোট আম্মু স্বর্ণার গায়ে কাঁথা তুলে দিয়ে । ছোট আম্মু নিজের রুমে চলে যায় ।
কিছুক্ষণ পর
স্বর্ণা : যাক বাবা অবশেষে আম্মু নিজের রুমে চলে গেল । না আর দেরি করা যাবে না সাঈদ এর রুমে যাই ।
তারপর স্বর্ণা নিজের রুম থেকে বেরিয়ে সাঈদ এর রুমে চলে যায় । স্বর্ণা সাঈদ এর রুমে গিয়ে দেখে সাঈদ ঘুমিয়ে পড়েছে ।
স্বর্ণা : আমি তো জানি ছেলেরা কান্না করে না 🤔। আর এই তো কান্না করতে করতে মুখের কি হাল করেছে এত তাড়াতাড়ি । না আমি মনে হয় সাঈদকে বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি । ( স্বর্ণা নিজেই নিজেকে গালি দিতে থাকে আর মন খারাপ করে ফেলে )
স্বর্ণা নিজের রুমে না গিয়ে সাঈদের বুকের উপর মাথা রেখে , সাঈদকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে 🤗🤗 ।
( বন্ধুরা এতো দেখি " ওমা গো টুরু লাভ " 😲😲)
সকালে বেলা
আমি : সকাল বেলা বুকের উপর ভারি কিছু অনুভব করতেছি । তারপর চোখ খুলে দেখি 😲😲 । স্বর্ণা আমার বুকের উপর মাথা রেখে আমাকে জড়িয়ে শুয়ে আছে । স্বর্ণাকে দেখে আমার তো মাথা ঘুরতেছে । কালকে রাতে ভালোবাসার কথা বলার কারণে আমাকে থাপ্পর মারলো আর আজ সকালে আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে । আমার মাথায় কিছুতেই ঢুকতেছে না , মাথা ঘুরছে । ( মনে মনে এই কথা গুলো ভাবতে ছিলাম )
আমি : স্বর্ণা এই স্বর্ণা ( আসতে করে ডাকলাম )
স্বর্ণা : ( কোন সাড়া নেই )
আমি : স্বর্ণা ( ঝাকি দিয়ে )
স্বর্ণা : ওম ( আরো ভালো করে জড়িয়ে ধরে )
আমি : এই স্বর্ণা ( এবার জোরে ধাক্কা দিয়ে )
স্বর্ণা : ওম কি হয়েছে ডাকতেছিস কেন ( জেগে উঠে , রেগে বলল )
আমি : তুই আমার রুমে কখন আসলি । আর আমার বুকের উপর শুয়ে কেন
স্বর্ণা : কাল রাতে আসছি । আর আমার ইচ্ছা হয়েছে শুয়েছি তোর তাতে কি হ্যা । ( রেগে ) আমাকে ঘুমাতে দে ( আবার আমার বুকে শুতে শুতে )
আমি : তাই তো তুই যেখানে ইচ্ছে ঘুমাবি , আমি বলার কে ( অন্য মনস্ক হয়ে ) । ( সজাগ হয়ে ) তোর তাতে কি মানে, আমার বুকের উপর তুই শুবি কেন হ্যা । আর তুই কাল রাত থেকে আমার ঘরে আমার বুকের উপর শুয়ে ছিলি ( অবাক হয়ে )
স্বর্ণা : হ্যা কাল রাত থেকে ছিলাম তো কি হয়েছে । আর এই বুকটা শুধু মাত্র আমার সম্পত্তি । আমার যখন ইচ্ছে ঘুমাবো ।
আমি : কাল রাতে থেকে এখানে আছিস । কেও যদি দেখে ফেলে কি হবে বুঝতে পারছি । আমার বুক তোর সম্পত্তি হলো কবে থেকে হ্যা ( একটু রেগে )
স্বর্ণা : ( সাঈদের মাথার চুল শক্ত করে ধরে নিজের ঠোঁট দিয়ে সাঈদ এর ঠোঁট দুটো চেপে ধরলাম 🙈)
আমি : স্বর্ণার কাহিনী দেখে আমার চোখ কপালে উঠে গেছে । আমি স্বর্ণার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি । ( স্বর্ণা এমন ভাবে শক্ত করে ধরেছে । আমি ছাড়ার চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না )
পাঁচ মিনিট পর স্বর্ণা ছেড়ে দিলো
আমি : কি হলো এটা ( অবাক হয়ে + হাঁপাতে হাঁপাতে )
স্বর্ণা : তোকে একটু আদর করলাম ( মুসকি হেসে হাঁপাতে হাঁপাতে )
আমি : তুই আমাকে আদর করার কে । তুই তো আমাকে ভালোবাসিস না ( অভিমান করে )
স্বর্ণা : চুপ ( সাঈদের মুখে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করে দিয়ে ) । কে বলেছে আমি তোকে ভালোবাসি না
আমি : কালতে তো তুই
স্বর্ণা : তুই তো আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিলি না । আমি তো তোকে খুব ভালোবাসি সাঈদ । খুব ভালোবাসি
আমি : তাহলে রাতে আমাকে থাপ্পর দিলি কেন ( খুশিটা গোপন রেখে , অভিমান করে )
স্বর্ণা : মারবো না তো কি করবো । যানিস আমি তোকে সেই ছোট বেলা থেকেই ভালোবাসি । আমি সারাক্ষন এটাই ভাবি , তুই কখন এসে বলবি , স্বর্ণা আমি তোমাকে ভালোবাসি । কিন্তু তুই এই ভালোবাসার কথাটা বলতে কতদিন পর এসে বললি । তাই একটু রাগ হয়েছিল ।
আমি : সেই কথাটা তো মুখে বলেই তো মারার কি দরকার ছিল ( মন খারাপ করে )
স্বর্ণা : ( সাঈদের দুই গালে চুমু দিয়ে ) আচ্ছা সোনা আর মারবো না ।
আমি : ঠিক আছে ( মুসকি হেসে ) । এখন আমার উপর থেকে ওঠ । নিজের রুমে যা কেও যদি দেখে খারাপ ভাবে
স্বর্ণা : কে কি ভাবে আমার তাতে কিছু যায় আসে না । দেখলে দেখুক , আমাদের বিয়েটাও তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে ( মুসকি হেসে )
আমি : তাড়াতাড়ি বিয়ে করা খুব ইচ্ছে তাই না ( মুসকি হেসে স্বর্ণা কে জোরে জড়িয়ে ধরলাম )
স্বর্ণা : একদম না । তুই যতদিন নিজে যোগ্যতায় কোন চাকরি না পাবি ততদিন পর্যন্ত বিয়ে হবে না ।
আমি : ঠিক আছে মহারানী ( মুসকি হেসে )
স্বর্ণা : হুম এখন আমাকে ছাড় । আমি আমার রুমে যাবো
আমি : ভালোই তো লাগতেছে এভাবে । অন্য রুমে যাওয়ার কি দরকার ( দুষ্টুমি হাসি দিয়ে স্বর্ণা কে আরো জোরে চেপে ধরলাম আমার বুকে)
স্বর্ণা : তুই খুব অসভ্য হয়ে গেছিস
আমি : তাই বুঝি তাহলে রাতের বেলা আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমালে কোন দোষ নেই । আর আমি জড়িয়ে ধরলেই দোষ ।
স্বর্ণা : আমি তোকে জড়িয়ে ধরবো , আদর করবো । যা ইচ্ছে তাই করবো । তুই শুধু আমার সম্পত্তি । তাই আমার পুরো অধিকার আছে বুঝলি
আমি : তোর যদি আমাকে আদর করার অধিকার থাকে । তাহলে আমারো তোকে জড়িয়ে ধরার অধিকার আছে ।
স্বর্ণা : আগ্গে না মহারাজ । আগে বিয়ে তারপর অধিকার পাবেন ।
আমি : এটা কেমন বিচার । তুই জড়িয়ে ধরতে পারবি আর আমি পারবো না ।
স্বর্ণা : এটাই ঠিক । ছাড় এখন আমি আমার রুমে যাই । আম্মু আর বড় আম্মু মনে হয় ঘুম থেকে উঠে গেছে ।
আমি স্বর্ণা কে ছেড়ে দিলাম । স্বর্ণা আমার বুকের উপর থেকে উঠে গেল । স্বর্ণা দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে
স্বর্ণা : তবে মাঝে মাঝে জড়িয়ে ধরতে পারবি
আমি : কাকে জড়িয়ে ধরতে
স্বর্ণা : আমাকে
আমি : ও , আমি তো মনে করেছিলাম অন্য কোন মেয়েদের জড়িয়ে ধরতে ( রাগানোর জন্য )
স্বর্ণা : অন্য কোন মেয়েকে নিয়ে চিন্তা করলে খুন করে ফেলবো । ( রেগে কথাটা বলে চলে গেল )
আমি দরজার দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলাম । নিজেকে আজ খুব খুশি মানুষ মনে হচ্ছে । বাবা মা পরে যাকে বেশি ভালোবেসেছি । তাকে আমি পেয়ে গেছি । নিজের মনের মধ্যে এক অন্য ধরনের আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে । সে আনন্দ লিখে বুঝানো সম্ভব নয় ।
তারপর আমি বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম ।
★
★
★★★ ( ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন ) ★★★
গল্পটা যদি ভালো লাগে । তাহলে👇👇
পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন
✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
