লেডি কুইন পর্ব ২৪| Leady Queen part 24 | storyBD.xyz

 লেডি কুইন 

পর্ব ২৪ 

লেখা: Meherab Kabbo 




শুভ্র আশফা হৃদয় নেহা কুহু হেসে উঠলো ।  আরোহী আইলের উপর দিয়ে দৌড়াতে যেয়ে পা পিছলে পড়ে যায়।  মেহেরাব পিছনে তাকিয়ে হেসে দিয়ে 

-হাই হাই ছোট একটা হাতির বাচ্চা ক্ষেতের ভেতর পড়ে গেলো।  সব ধান শেষ হয়ে গেলো।  

আরোহী মেহেরাবের দিকে রাগি দৃষ্টিতে  তাকিয়ে উঠতে যাবে কিন্তু পাড়ে না।  আরোহী বললো আমার মাজাটা গেলো।  



আশফা শুভ্রকে বললো

-সতর্ক না হলে যা হয়।  

-হ্যা তুমি তো পা দেওয়ার আগেই ক্ষেতের ভেতর ঢুকে যাবে।  

হৃদয় বলে উঠলো 

-আশফা তো পা দেওয়ার আগেই যাবে।  নেহা তো নামার আগেই বিলের মাঝখানে চলে যাবে।  


শুভ্র হৃদয় হাসলো।  আশফা নেহা রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে 

-তোকে 

শুভ্র হৃদয় দৌড়। আইলের উপর দিয়ে দৌড়াচ্ছে।  বেশ কিছুদূর যেতে না যেতে চারজনে পা পিছলে পড়ে যায় ধানের উপর।  


আরোহী মেহেরাব হেসে উঠলো ।  মেহেরাব বললো 

-কৃষকরা যা ও একটু ভালো ফসল ঘরে তুলতো তা ও পারবে না।  দুঃখ হচ্ছে।  


মেহেরাব আরোহীর কাছে যেয়ে সামনে বসে 

-কেমন লাগে এখন? 

-তোকে এখন কিছু বলবো না। আগে তোল আমাকে 

-কেন?  আমি কেন তুলতে যাবো নিজেই উঠুন।  

-এই কুহু তুই দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছিস৷  এদিকে আয় তোল আমাকে 

-না আমি যাবো না।  আমি ও যদি পড়ে যায়।  



আশফা নেহা বলে উঠলো 

-ও মা গো আমার মাজা গেলো রে।  

শুভ্র হৃদয় হাতে ভর দিয়ে উঠে দাড়ালো। মাজাটা এদিক ওদিক করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে 

-বলেছিলাম না পারবা না।  

নেহা  হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো 

-তুলো আমাকে।  

হৃদয় নেহার হাত ধরে উঠালো।  শুভ্র আশফাকে।  মেহেরাব আরোহীকে তুললো কিন্তু আরোহী আবার বসে পড়লো।  মেহেরাব জিঙ্গেস করলো 

-কি হলো?

-পারছি না।  

-আগে মনে ছিলো না।  এতটুকু আইলের উপর দিয়ে দৌড়াতে পারবেন না।  ন্যাকামি যতসব।  

মেহেরাব আরেহীকে কোলে তুলে নিলো।  সবাই অবাক হয়ে চেয়ে পড়লো।  নেহা আশফা শুভ্র হৃদয়কে বললো 

-তোমার বন্ধুর থেকে শিখে আসো।  আমাকে তো নিতে পারতা কোলে তুলে। 


শুভ্র হৃদয় বললো 

-আটার বস্তাকে কোলে নেওয়া।  আমাকে তো খুজে পাওয়া যাবে না।  


আশফা নেহা রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে পড়লো। সাথে সাথে কোলে তুলে নিলো৷ 


আরোহী মেহেরাবের গলা জরিয়ে ধরলো।  মেহেরাব সামনের দিকে তাকিয়ে হাঁটছে।  আরোহী তাকিয়ে আছে মেহেরাবের দিকে।  কুহু পিছনে ধীরে ধীরে হেটে আসছে।  সবাই স্যালো ঘরের কাছে যেয়ে নামিয়ে দিলো কোল থেকে।  স্যালো মেশিন চলতাছে। ইট দিয়ে ছোট্ট একটা হাউস বানানো।  সেখানে পানি পড়ছে।  সেখান থেকে বিলের সব জায়গায় পানি যাচ্ছে।  আশফা নেহা আরোহী কুহু নেমে পড়লো।  পানি হাতে নিয়ে ছেটাছিটি করছে।  শুভ্র হৃদয় মেহেরাবকে ভিজেয়ে দিলো।  

গোসল শেষ এ সবাই বাসায় ফিরলো।  সবাইকে খাবার দিলো।  খাবার খেলো। বিকালে সবাই গ্রামে ঘুরতে বের হলো।  রাত হতে না হতে সবাই মিলে ডাব চুরির মিশনে গেলো।  ডাব গাছের নিচে যে গাছে উঠবে সে আগে থেকে দাঁড়িয়ে ছিলো।  গাছে উঠে ডাব পেরে রশি দিয়ে বেঁধে নিচে নামিয়ে সবাই খেলো।  



এভাবে কেটে গেলো ১০ দিন।  গ্রামের সবার থেকে বিদায় নিয়ে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হলো সবাই

লেডি কুইন পর্ব ২৪ 


মেহেরাবকে নিয়ে শুভ্রের বাসায় গেলো শুভ্র।  শুভ্রের মা দরজার কাছে অপেক্ষা করছিলো ওদের জন্য। ওদের দেখে মুখে হাসি ফুটলো।  শুভ্রের মা জিঙ্গেস করলো 

-তোদের কোন অসুবিধা হয়নি তো 

-না মা।  খুব ভালো লেগেছে গ্রাম।  

শুভ্রের মা মুচকি হেসে 

-যা ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নে।  

-মেহেরাব তুই যা আমি আসছি একটু । 

শুভ্রের মা জিঙ্গেস করলো 

-কই যাবি। 

-এই তো সামনে। 

মেহেরাব ভেতরে চলে গেলো।  শুভ্র গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।  চার রাস্তার মোড়ে গাড়ি থামালো।  নেহা আশফা হৃদয় দাঁড়িয়ে আছে।  ওদের কাছে যেয়ে 

-আমরা যা মনে করেছিলাম সব টাই ভূল।  

-হ্যা।  গ্রামের লোক ওকে খুব ভালোবাসে। খুব শোনে ওর কথা।  

-তা ঠিক বলেছিস।  ভালবাসা দিয়ে সবাইকে জয় করে নিছে।  তবে একটা জায়গায় খটকা লেগে আছে। 

-কোথায় 

-মেহেরাবের বাবা কিন্তু বাসায় নেই।  

-হ্যা সে তো তার গ্রামে গেছে ধান আনতে খটকার কি আছে? 

-ওকে নেই যখন ওর বাবা যখন ফিরবে তখন ওকে না জানিয়ে আমরা যাবো।  

-ঠিক আছে।  


কথা বলে যে যার বাসায় চলে গেলো ।


পরেরদিন মেহেরাব বাদে সবাই এক জায়গায় হলো।  আরোহী বসে আছে লিমন এসেই 

-কেমন লাগলো গ্রাম 

-সেই লেগেছে।  তুই আর অরিন তো গেলি না।  

-কাজ ছিলো তো তাই যায়নি। 

-বুঝি রে।  তবে গেলে তোদের ভালে হতো মিস করলি অনেক কিছু।অরিন কোথায়?

-ও তো মামার বাসায় গেছে। আর আসবে না নাকি? 

আরোহী অবাক হয়ে 

-কেন?

লিমন মনটা খারাপ করে 

-ওর মামা ওর জন্য ছেলে ঠিক করেছে। আর তার সাথেই আগামি সপ্তাহে বিয়ে।  

-কি বলিস কি? এত বড় ছ্যাকা।  ছেলে কি করে? 

-কানাডা থাকে।  বিয়ে করে নিয়ে চলে যাবে।  

কুহু হেসে দিয়ে 

-ভালো হয়েছে একদম।  বিয়েটা শান্তি মতো খেতে পারবো

 লিমন কুহুর দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকালো কুহু কাজ আছে বলে চলে গেলো।  আরোহী লিমনকে বললো 

-কিছু অপূর্ণতা থাকা ভালো।  সবকিছু পাওয়া ঠিক না।  তুই ওকে পছন্দ করতিস কিন্তু কখনো বলতে পারলি না।  হয়তো ও তোকে পছন্দ করে না।  আর যদি ও করতো তবে একবার হলে ও তোকে মনের কথাটা বলতো।  

-হুম। 

-যে তোকে ভালোবাসে তাকে তুই খোঁজ দেখবি ভালোকিছু পাবি৷ 

-আচ্ছা আমি যায় একটা কাজ আছে।  

-যা কিন্তু একাকিত্ব কে কাছে টেনে নিস না।  

-আর না।  আমার একটু কাজ আছে। 

-ওকে যা।  

লিমন চলে গেলো।  


আশফা নেহা শুভ্র হৃদয় আসলো।  আরোহী কে বললো 

-কিছু শুনেছিস। 

-না তো কি হয়েছে? 

-একদল গোষ্ঠী আমাদের শহরে হামলা করে ওদের আয়ত্তে নিবে।  তারপর ধীরে ধীরে দেশটাকে। 

আরোহী অবাক হয়ে 

-তোরা কই থেকে জানলি। 

-আসার টাইম একটা লোককে কথা বলতে শুনছিলাম।  আর তো কিছু দিন।  

-আসুক তবে কোনো ষড়যন্ত্রে করে পারবে না।  হয় মরবে না হয় হাসপাতালের বেডে।  

-হুম কুইন যেখানে আছে সেখানে কোনো চিন্তা নেই।  

-মেহেরাব কই? 

-ভোরে বেরিয়েছে আসার কোনো খোজ নেই।  

আরোহী উঠে দাঁড়িয়ে 

-চল তোদের আজকে কিছু একটা দেখায়। 

সবাই অবাক হয়ে 

-কি? 

-ফলো মি 


আরোহীর সাথে গাড়ি নিয়ে সবাই গেলো।  আরোহীর গাড়ি পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে পড়লো।  সবাই বেশ অবাক। পার্কে আবার কি?  আরোহী গাড়ি থেকে নেমে সামনের দিকে তাকালো দেখলো কুহু ও এসেছে।  আরোহী অবাক হয়ে 

-তুই এখানে।  না বলে চলে এসেছিস।  তোকে তো খুজলাম পেলাম না। 

-আমাকে একজন ফোন করে আসতে বললো।  

-কে?

-চিনি না 

-তুই চিনিস না তাকে চলে আসলি ।  বললিও না যদি কোনো বিপদ হতো। 

-আসলে একা আসতে বলছে। যদি কাউকে বলি তাহলে তোকে মেরে ফেলবে। 

সবাই কুহুর কথা শুনে হা হয়ে গেলো।  আরোহী বলে উঠলো  

-কার এত বড় বুকের পাটা।  আমাকে নিয়ে তোকে ভয় দেখায়।  চল তো।  


সবাই পার্কের ভেতর ঢুকলো।  পার্কের পাশ দিয়ে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা দাঁড়িয়ে আছে।  সবার হাতে ফুল বেলুন। একজন একজন এসে ওদের হাতে একটা একটা করে ফুল ও বেলুন দিচ্ছে সবাই অবাক হয়ে গেলো।  বেলুনে লেখা ওয়েলকাম।  একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে বেলুন হাতে বেলুনের গায়ে সংকেত দেওয়া ডানে।  এভাবে বেশ দূর এগোতে লাগলো।  পার্কের মাঝখান গোল হয়ে ছোট ছেলেমেয়েরা বসে আছে।  সবাই এগিয়ে গেলো।  ছেলেমেয়েগুলো সরে যেতে কুহু হাঁটু মুড়ে বসে পড়লো। 



(Waiting for next part)

Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post