পরিপূর্নতায় তুই Poripurnotay Tui
5th part..
লেখকঃ Arian Sumon..
এরপর আমরা ঢাকায় পৌছালাম। আমি আর সঞ্জিতা আমাদের বাড়ির সামনে নেমে গেলাম। রাকিব চলে গেল নিজের বাসায়।
আমার বাসায় ডুকতেই ভয় করছে। না জানি আম্মু সঞ্জিতাকে দেখে কি রিয়েক্ট করবে। হে আল্লাহ সব কিছু ভালোভাবে মেনেজ করে দিও।
বাসার ভেতরে ডুকতেই আম্মু হাজির।
আম্মুঃ কেমন আছিস
আমিঃ হুম ভালো তুমি ভালো আছো তো?
আম্মুঃ হুম। কই বউমা কোথায়?
আমিঃ সঞ্জিতা ভিতরে আসো
সঞ্জিতা ভেতরে ডুকতেই।।
আম্মুঃ সুমন আমার সাথে আয় তো একটু
আমিঃ কোথায়???
আম্মুঃ আয়
আম্মু আমার হাত টেনে ধরে ওনার রুমে নিয়া গেল।
আমিঃ কি হয়েছে বলবা তো
আম্মুঃ এটা তো সঞ্জিতা । এ মেয়ে তোকে ধোকা দিছে তারপরেও তুই ওরে বিয়ে করলি কিভাবে?
আমি; জানিনা আমি। আমি ওরে ভালোবাসি। অনেক বেশি ভালোবাসি।
আম্মুঃ ও কি তোকে ভালোবাসে???
আমিঃ না।
আম্মুঃ তো তুই ওর সাথে থাকবি কি করে??
আমিঃ এ নিয়া তুমি চিন্তা করোনা। সব ঠিক হয়ে যাবে।
আম্মুঃ আমি ভাবতে পারছিনা। মাথা ঘুরাচ্ছে।
আমি আম্মুকে জরিয়ে ধরলাম।
আমিঃ লক্ষি মা আমার সঞ্জিতা কে মেনে নাও। ওরে ছাড়া আমি থাকতে পারব না।
আম্মুঃ ওকে। শুধু তোর জন্যই মেনে নিলাম।
আমিঃ এই তো আমার লক্ষি আম্মু। উম্মাহহহ 😚😚😚
তারপর আম্মু এসে সঞ্জিতার সাথে কথা বলল। আমি সঞ্জিতাকে নিয়া রুমে ডুকলাম।
সঞ্জিতা রুমে ডুকতেই অভাক। কারন পুরো রুম টায় শুধু ওরই ছবি লাগানো। ও ভাবছে,,, ও বুঝতে পারছেনা কি করবে। একটা ছেলে এতটা ভালো কিভাবে বাসতে পারে। তাও আবার যে তাকে ধোকা দিছে তাকে।
আমিঃ কি ভাবছ??
উত্তর নেই। খালি ছবি গুলোর দিকেই তাকাচ্ছে।
আমিঃ এগুলো দেখে অভাক হবার কিছু নেই। প্রতিটা ছবি আমাদের ভালোবাসার একেকটা মুহুর্ত।
সঞ্জিতাঃ তুমি আমাকে এত ভালোবাসো কেন?
আমি; জানিনা। তবে অনেক বেশিই ভালোবাসি।
সঞ্জিতা ভাবছেঃ কি করব আমি? আমি তো ওরে মেনে নিতে পারব না। কখনই সম্ভব না। আমি তো প্রতারক ঠক ধোকাবাজ।
আমিঃ ধুর এত না ভেবে। ফ্রেশ হয়ে এসো।
সঞ্জিতাঃ হুম যাচ্ছি।
সঞ্জিতা ওয়াশরুমে গেল।।
কিছুক্ষন পর ওয়াশরুম থেকে বেড় হলো। তারপর আমি ডুকলাম। বেড় হয়ে দেখি ও বসে আছে।
আমিঃ কি হলো জামা কাপর গোছাও নি???
ও আমার দিকে তাকাল কিছু বলল না।
আমিঃ এই পুরো রুম টাই তোমার। আলমারি গুলোও তোমার। জামা কাপর রাখতে পারো। আমি কি নিষেধ করছি নাকি। ।
ও কিছু বলছে না। দেখে আমিই সব কিছু গুছিয়ে রাখলাম। কি করব বউ বলে কথা।
যাহোক তারপর ওরে নিয়ে খেতে আসলাম। এর মধ্যে আব্বুও অফিস থেকে চলে এসেছে। সবাই মিলে একসাথে খেলাম। কিন্তু সঞ্জিতার মধ্যে জড়তা কাজ করতেছে। কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা।
খাওয়া শেষে রুমে আসলাম।
বিকালে আড্ডা দিতে বেড় হলাম।
তুষারঃ কি অবস্থা বন্ধু?
আমি; চলছে।
তুষারঃ ঈদানিং তো আমাদের ভূলেই গেছিস।
আমিঃ ধুর কে বলছে । কাজের চাপে না আড্ডা দিতে আসতে পারিনা।
শাওনঃ বিশ্বাস হলো না ।
আমিঃ ধুর বাদ দে তো। অন্যকিছু বল।
শাওনঃ ট্রিট দে?
আমি; কেন?
শাওনঃ বিয়ে করলি ট্রিট দিবি না?
আমিঃ চল তাহলে তোদের পেট ভরিয়ে আসি।
আমরা রেষ্টুরেন্ট এ গেলাম। খাবার অর্ডার দিলাম।
অন্যদিকে সঞ্জিতা রুমে বসে আছে। ভাবছে কি করব আমি এখন? সুমন কে কি মেনে নিব? না তা কিভাবে হয়। আমি তো ওরে ধোকা দিছি। তারপরেও ও আমাকে ভালোবাসে। হে আল্লাহ তুমি আমাকে এ কোন পরিক্ষায় ফেললা? আমি কি করব তুমিই বলে দাও।
এমন সময়েই সুমনের আম্মু আসল রুমে।
আম্মুঃ বউ মা
সঞ্জিতাঃ জ্বী আম্মু বলেন
আম্মুঃ আমার ছেলেটাকে তুমি কেন ধোকা দিলে??
সঞ্জিতা মাথা নিচু করে নিল।
আম্মুঃ জানতাম এর কোনো উত্তর তুমি দিবেনা। তবে শুনো আমার ছেলেটা তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে। তুমি ওরে ধোকা দেওয়ার পর ওর কি হাল হয়েছিল তা আমরা দেখেছি। তখন যদি তুমি দেখতা তাহলে তুমিও হয়ত ( চোখের পানি ঝড়ে গেল।)
সঞ্জিতাঃ এ কি আম্মু আপনি কাদছেন কেন। প্লিজ কাদবেন না। আমি তখন বুঝতে পারি নি। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিন। ( সঞ্জিতা আম্মুর পায়ে ধরে বলল। ওর ও চোখ দিয়ে পানি বেড় হলো।
আম্মু সঞ্জিতাকে উঠাল।
আম্মুঃ কেদোনা । কি বলব তোমাকে বুঝতেছি না। তবে আমার ছেলেটাকে আর কষ্ট দিও না ।।
এই বলে আম্মু বেড় হয়ে গেল।।
সঞ্জিতা বসে পড়ল। কি করব আমি??? এ কোন ইয়ের মধ্যে পড়লাম। আমি তো পারব না সুমন কে ভালোবাসতে। প্রতারক কখনও কাউকে ভালোবাসতে পারেনা। এরা বুঝেনা কেন?
অন্যদিকে আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি ফিরে রুমে ডুকতেই দেখি সঞ্জিতা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।
আমার কি যেন হলো। আমি গিয়ে সঞ্জিতাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম।
সাথে সাথে ঠাসসসস।
সঞ্জিতা আর আমি মুখোমুখি। সঞ্জিতা আমাকে থাপ্পর দিল। ভাবতেই পারছিনা।
আমি আর রুমেই থাকলাম না। বেড় হয়ে গেলাম। ছাদে চলে গেলাম। সিগেরেট ধরলাম।
অন্যদিকে সঞ্জিতা ভাবছে। এ আমি কি করলাম। আমি ওর বউ আমাকে জরিয়ে ধরতেই পারে। এটা ওর হক। কিন্তু ও জড়িয়ে ধরাতে আমার এমন কেন লাগল। ইচ্ছে করছে ওরে বলি সারাজীবন এভাবেই জরিয়ে ধরে রাখো।
সুমন কিছুক্ষন পর ছাদ থেকে নামল। তারপর খেতে বসল। আম্মু গিয়ে সঞ্জিতাকে নিয়া আসল। সবাই একসাথেই রাতের খাবার খেল। সঞ্জিতা বার বার আমার দিকে তাকাল।
খাওয়া শেষে আবার ছাদে গেলাম। গিয়ে আবার সিগেরেট খেলাম।
কিছুক্ষন পর নেমে রুমে ডুকে দেখি সঞ্জিতা শুয়ে আছে। আমি গিয়ে বালিশ টা নিতেই। সঞ্জিতা আমার হাত ধরে বসল। আমি রিতিমত একটা শকড খেলাম। যে আমাকে সহ্য করতে পারেনা। সেই মেয়ে আমার হাত ধরেছে।
হাত সরিয়ে নিল।
সঞ্জিতাঃ I am sorry। আমি তখন বুঝতে পারিনি প্লিজ ক্ষমা করে দেও
আমিঃ ক্ষমা অনেক আগেই করে দিছি এ আর এমন কি?
সঞ্জিতাঃ প্লিজ সুমন
আমিঃ ওকে দিলাম ক্ষমা করে এবার ঘুমাও।
আমি বালিশ নিয়ে চলে আসলাম। তখনি,,,
সঞ্জিতাঃ এখানে ঘুমাতে পারো আমার সমস্যা নেই।
এটা শুনার পর আমাকে আর পায় কে? আমি শুয়ে পড়লাম। এসব হচ্ছে কি? তাহলে কি ও আমাকে ভালোবাসে? নাকি মিথ্যা অভিনয় করতেছে? না কিছু ভাবতে পারছিনা।
অন্যদিকে সঞ্জিতা ভাবতেছে। ছেলেটা এমন কেন? আমাকে কিছুই বলেনা। দেখে মনে হয় খুব কষ্টে আছে। কিন্তু তবুও কিছু বলেনা।
এসব ভাবতে ভাবতে দুজনেই ঘুমিয়ে যায়।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে। ফ্রেশ হয়ে আমি অফিস চলে গেলাম।
সঞ্জিতা লেট করে ঘুম থেকে উঠল। উঠে সুমন কে পেল না । রুম থেকে বেড়িয়ে গিয়ে দেখে আম্মু বসে আছে।
সঞ্জিতাঃ আম্মু সুমন কোথায়?
আম্মুঃ অফিস গেছে। তুমি ফ্রেশ হয়ে খেতে এসো। শাশুড়ি বউমা একসাথে খাব।
সঞ্জিতা অভাক হয়ে গেল কথা শুনে। আমি ওনার ছেলেকে এত কষ্ট দিলাম ওনি সব ভূলে গেল এত সহজেই। আসলেই আমি এত স্বার্থপর।
সঞ্জিতার চোখ দিয়ে পানি বেড় হয়ে গেল। কোনো রকমে আটকে রেখে সঞ্জিতা রুমে ডুকে গেল। ফ্রেশ হয়ে খেতে আসল।
আম্মু আর সঞ্জিতা একসাথে খেল।। খাওয়া শেষে।
আম্মুঃ যাও তুমি রুমে গিয়ে বিশ্রাম নাও।
সঞ্জিতাঃ না আমি আপনাকে কাজে একটু সাহাজ্য করব
আম্মুঃ না না। বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর হবে। তুমি গিয়ে বিশ্রাম নাও।
সঞ্জিতা যেতে চাইল না। আম্মু জোর করে পাঠাল।
সঞ্জিতা রুমে বসে ভাবছে। ওনারা এমন কেন? আমাকে এত ভালোবাসে কেন? আমি তো ওনাদের ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য নই.।
এসব ভাবতে ভাবতে ওর চোখ গেল টেবিলের উপর। সেখানে রাখা,,,
To be continue