লেডি কুইন পর্ব ২৫ | Leady Queen part 25| storyBD.xyz

 লেডি কুইন 

পর্ব ২৫ 

লেখা: Meherab Kabbo 



কুহুর হঠাৎ বসে পড়াতে সবাই হা হয়ে গেলো।  সামনের দিকে তাকিয়ে থ হয়ে গেলো সবাই।  বাচ্চাগুলো সিরিয়াল দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো মাঝখানে লিমন হাঁটু গিড়ি দিয়ে বসে হাতে রিং নিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো 

পিছনের বাচ্চাগুলো হাতে কাগজে বড় বড় করে লেখা 

I Love you কুহু৷  কুহু মুখে হাতে বসে আছে।  লিমন ও বসে আছে

 (দর্শকতো আমরা দেখতাছি। প্রপোজাল কেমনে করে।  আমার তো লজ্জা লাগছে এমন দৃশ্য দেখে)


মেহেরাব পাশ থেকে বেরিয়ে এসে দাড়িয়ে 

-কুহু বসে থাকলে কাজ তো হবে না৷  এতদিনের দেখা স্বপ্ন তো আজ পূর্ণতা পেলো।  আর দেরি কেন?  হাতটা বাড়িয়ে দেন। 


কুহু উঠে দাঁড়িয়ে বাম হাত বাড়িয়ে দিলো।  লিমন রিংটা আঙ্গুলে পড়িয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মেহেরাবকে জরিয়ে ধরে 

-ধন্যবাদ।  

আরোহীরা সবাই অবাক হয়ে গেলো।  কি হলো মাথায় কিছুই ঢুকছে না।  কুহুর চোখ দিয়ে পানি ঝরলো।  মেহেরাবের সামনে দাঁড়িয়ে 

-আপনি কিভাবে এতকিছু  জানলেন? 

-আমি তো অনেক কিছুই জানি।  তবে সুযোগটা যখন পেয়েছি কাজে তো লাগিয়েছি।  

-আমি পুরো সারপ্রাইজ।  এতসুন্দর একটা মুহূর্ত আমি পাবো কখনো ভাবতে পারিনি।   কিভাবে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না।  


আরোহী বলে উঠলো 

-লিমন এটা তোর কাজ ছিলো। অথচ আমাকে বললি না।  

-তুই যেটা ভাবছিস ঐটা না।  আমি আসার পথে মেহেরাবের সাথে দেখা হয়।  আমি ওকে ওভারটেক করে চলে যাচ্ছিলাম তখন ও আমাকে বললো 

(

-লিমন ভাইয়া শোনেন 

লিমন থেমে যেয়ে 

-কি বলবি বল? 

-আপনার মুখটা আজকে শুকনো।  মন খারাপ।  কিছু কি হয়েছে ? 

-তোকে কেন বলবো।  আমার মন ভালো আছে।  

-ভাইয়া এত উত্তেজিত হবেন না।  আমাকে বলতে পারেন।  

-আমার কাজ আছে।  

লিমন কথাটা বলে চলে যেতে লাগবে তখন মেহেরাবে লিমনের সামনে দাড়ালো। লিমন রাগে মেহেরাবকে ডাক্কা মেরে 

-তোর সমস্যা কি? বলছি না আমার কাজ আছে।  

লিমন চলে যেতে লাগলো মেহেরাব বলে উঠলো 

-অরিনের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে বলে কি কষ্ট পেেয়েছেন।  আপনাকে যে অন্য একজন ভালোবাসে তার কথাটা তো চিন্তা করতে হবে৷  কি দরকার নিজেকে শেষ করার।  

লিমন থমকে দাড়িয়ে পিছনে তাকিয়ে 

-তুই কিভাবে এতকিছু জানলি।  আর আমাকে কেউ ভালোবাসে না৷ আমার রাস্তায় আমি ঠিক আছি।  

-একটা ভূল সিদ্ধান্তে কিন্তু সারাজীবন পস্তাতে হয়।  বাসায় মা বাবা ভাই বোন কত আশা করে আছে তার ভাইটি একদিন মানুষের মতো হবে। কিন্তু আপনি তো ভূল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন। 

-এই শোন তোকে কেউ ঙ্গান দিতে বলেনি।  


লিমন কথাটা বলে চলে যাচ্ছিলো।  মেহেরাব আবার ও বলে উঠলো 

-ব্রিজের উপর পুলিশ আছে কোনো লাভ নেই সেখানে যেয়ে। পুলিশে জেলে ভরে দিবে।  ফ্যামিলির মানুষ ছাড়া তো আপনাকে নিয়ে সংসার বাঁধার স্বপ্ন যে একজন দেখে তার কি হবে ভেবে দেখেছেন? 

লিমন মেহেরাবের কথায় পুরো থ হয়ে গেলো।  মেহেরাবের কাছে এগিয়ে এসে 

-তুই এতকিছু জানিস কি করে?

-জানি জানি ।  কম বেশি অনেক কিছুই।  এসব চিন্তা বাদ দিয়ে নতুন করে সেই মানুষটাকে আপন করে নিন যে আপনাকে ভালোবাসে 

লিমন অবাক হয়ে 

-কে? 

-কুহু 

-কি বলছিস তুই? কুহু আমাকে।

-হ্যা ঠিকি বলছি।  

-যদি মিথ্যে হয়। 

-মিথ্যে তো কিছু নেই।  কুহু কি অতিরিক্ত কেয়ারিং করছে আপনাকে। যা অরিন করেনি। 

-হ্যা করেছে কিন্তু তাই বলে যে ভালোবাসবে তা তো না। 

-ভালো না বাসলে কখনো অতিরিক্ত কেয়ারিং শাসন কেউ করতো না।  

-তোর কথা যদি মিথ্যে হয়?

-যা ইচ্ছা করেন।  কুহুর নাম্বারটা দেন আর আমার সাথে চলুন।  

বাকীটা তো সবাই জানেন) 



আরোহী বলে উঠলো 

-তুই আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলি। 

-হুম।  

আরেহী লিমনের গালে ঠাস ঠাস করে চড় বসিয়ে দিয়ে 

-কিভাবে পারলি এমন একটা ডিসিশন নিতে।  আমাদের সবার কথা ভূলে গেছিস।  


সবাই থ হয়ে গেলো।  লিমন বলে উঠলো 

-সরি।  আমি জানতাম না।  মেহেরাব ছিলো তোদের মাঝে আসছি৷ নাই আজ আমি। 

-চুপ একদম।  


আরোহী মেহেরাবের হাত ধরে টেনে নিয়ে পাশে যেয়ে 

-তুই এতকিছু জানলি কিভাবে? সত্যি সত্যি উত্তর দিবি। 

-আসলে কুহুর কেয়ারিং শাসন রাগ অভিমান দেখে আমি বুঝতে পারি কুহু লিমনকে ভালোবাসে।  কিন্তু মাঝখানে অরিন।  অরিন ভালোবাসতো কানাডার ঐ ছেলেকে।  লিমন তা জানতো না।  কিন্তু না জেনেই ভালবেসেছে।  ভূল তো মানুষ মাত্রই করে।  

-অরিন কানাডার ছেলের সাথে রিলেশন করে তুই জানলি কিভাবে?  আর ও যে আত্মহত্যা করবে এটা জানলি কিভাবে। 

-একদিন ভার্সিটিতে আসার পথে অরিনের কিছু কথা কানে আসে।  ওর মামা ওর বিয়ের জন্য ছেলে দেখছে।  ও জেনো তাড়াতাড়ি এসে ওর মামার সাথে কথা বলে বিয়ে ঠিক করে জেনো। না হলে ও আত্নহত্যা করবে।  

-আর লিমনেরটা 

-ওর একটা বন্ধু কাকে ফোন দিয়ে বলছিলো লিমনের অরিনের তো বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।  লিমন যদি ভূল কিছু করে বসে।  আজ তো  ব্রিজে যাবে। 

আরোহী মেহেরাবকে জরিয়ে ধরে ছেড়ে দিয়ে 

-তুই আমাদের কতবড় উপকার করলি তোকে বোঝাতে পারবো না।  ধন্যবাদ তোকে।  


মেহেরাব পুরোই থ হয়ে গেলো।  আরোহী মনে মনে বলছে। গাধা তুই যদি আমাকে এমন করে সারপ্রাইজ করতি তাহলে আমার থেকে বড় পাওয়া হয়তো কেউ পেতো না।  তোকে যে করেই হোক আমার করে নিতাম কিন্তু তুই তো আমাকে ভালোই বাসিস না।  থাক না কিছু কথা বুকে জমা।  ভালো থাক তুই এটাই সবসময় চাওয়া আমার।

লেডি কুইন পর্ব ২৫ 


আরোহী মনটা খারাপ করে পাশে চলে গেলো৷  


শুভ্র আশফা হৃদয় নেহা মেহেরাবের পাশে এসে 

-এত বুদ্ধি নিয়ে থাকিস কিভাবে।  আমাদের ও তো দিতে পারিস।  তাইলে যদি একটু রক্ষা পায়। 

-কেন ?  কি হয়েছে? 

-কি আর হবে? কত কথা শোনালো।  চুন্নিতে।  


আশফা বললো

-কিহ আমি চুন্নি।  করছো কখনো রোমান্টিক ভাবে প্রপোজ৷ 

-তো কে করছিলো। 

-তুই তো করছিলি কলেজের পিছনে চিপায় বসে প্রপোজ।  

শুভ্র লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে নিয়ে 

-আমার মান সম্মানের হালুয়া বানাই ছাড়লা।  

-তাইলে বলো কেন?  ভীতু একটা।  

নেহা বলে উঠলো  

-শুভ্র তো তাও চিপায় নিয়ে প্রপোজ করছিলো আর হৃদয় তো এখন ও আমাকে প্রপোজ করেনি।  আমার তো মনে হয় আমাকে ভালোইবাসে না।  


হৃদয় নেহার কথাশুনে হাঁটু গেড়ে বসে হাত দুটো মেলে দিয়ে 

-মেরি জান তুমি ছাড়া এই হৃদয় শূন্য, তোমাকে ছাড়া এক মুহুর্ত পারি না থাকতে।  আমি যে তোমাকে চায় সবসময়।  এক কাপে ঠোঁট ভিজিয়ে খাবে তো চা । 

হৃদয়ের কথাগুলো শুনে সবাই মুচকি হাসছে। হৃদয় ভ্রু কুচকে 

-ভালো হয়নি প্রপোজ টা। 

নেহা হৃদয়ের হাত ধরে উঠিয়ে 

-খুব সুন্দর হয়েছে মেরি জান।  কিন্তু গরম চায়ের কাপে তো ঠোঁট পুড়ে যাবে কিভাবে খাবে।  

-বুঝো না ফু দিয়ে ঠান্ডা বানিয়ে।  

সবাই হেসে উঠলো ।  


কুহু লিমনকে বলে উঠলো 

-তুমি এমন কাজটা করতে গেছিলে কেন? 

-একাকিত্ব বোধ করছিলাম৷  কি ডিসিশন নিবো ভেবে পাচ্ছিলাম না৷  হতাশ হয়ে গেছিলাম ।  সময়মতো মেহেরাব বোঝালো সবকিছু।  

-হুম।  মেহেরাবকে আমরা কত অপমান করি।  কিন্তু ও সব কিছু সহ্য করে নেয় কিভাবে।  


শুভ্র হৃদয় আরোহীর পাশে দাঁড়িয়ে 

-কি দেখাবি বলে নিয়ে আসলি কিছু তো দেখালি না।  

-যেটা দেখলি তারপর ও আবার দেখতে চাইছিস। 

-তুই আগে থেকে জানতি৷ 

-না।  মেহেরাব প্রতিদিন এই বাচ্চাগুলোকে নিয়ে গোল হয়ে বসে ওদের সাথে গল্প করে৷ 

-হোয়াইট? তুই কিভাবে জানলি। 

-আমি জানি কোন এক ভাবে।  ছাড় চল যাওয়া যাক।  

-হ্যা চল।  


আরোহীর গার্ডসরা বিরিয়ানি এনে বাচ্চাগুলোকে দিলো বিরিয়ানি।  বাচ্চাগুলো সবাই খুব খুশি একজন বলে বসলো 

-একবার খেয়ে পেট ভরেছি।  আবার বিরিয়ানি। 


বাচ্চাটার কথা শুনে আরোহী তাকিয়ে পড়ে কাছে যেয়ে 

-কে দিছে বিরিয়ানি 

-কেন ঐ যে মেহেরাব ভাইয়া।  আমাদের সব ফুল গুলো কিনে নিয়ে আমাদের বসিয়ে গল্প করে। তারপর বিরিয়ানি খাওয়ায়।  বাসায় ও দেয়।  

আরোহী অবাক হয়ে গেলো।  

সবাই পার্ক থেকে চলে গেলো।  


এভাবে কেটে গেলো আরো ৬ দিন।  মর্জিনা খান দেশে ফিরলো।  আরোহী বেশ খুশি হলে ও মনটা খারাপ। কারণ তার বিয়ের জন্য দেশে এসেছে।   আশরাফ চৌধুরী ও দেশে এসেছে।  মর্জিনা খান নীলের কথা জিঙ্গেস করলে বলে। দু দিন পর আসবে।  একদিন রাতে মিটিং শেষ করে ফিরছিলো মর্জিনা খান আশরাফ চৌধুরী।  সাথে আরোহী কুহু ও ছিলো।  হঠাৎ করেই সামনে গাড়ি ব্রেক কষলো।  কালো রংয়ের গাড়ি সামনে দাড়ানো৷  মর্জিনা খান বলে উঠলো 

-ব্রেক করলে কেন? 

-ম্যাডাম সামনে জেনো কারা।  

মর্জিনা খান পিছনে তাকায় গার্ডসের কারো ফোন কলের সাথে কন্ট্রাক্ট করা যাচ্ছে না।  পিছনে তাকাতে দেখলো গাড়ি একটা ছাড়া কোনো গাড়ি নেই ।  ড্রাইভার মুচকি হেসে গাড়ি থেকে গেলো৷  মর্জিনা খান আরোহী আশরাফ চৌধুরী রীতিমতো অবাক৷  গাড়ির চারপাশে কার জেনে হাতে বন্ধুক নিয়ে দাড়িয়ে আছে।  সবাইকে কালো মানকি টুপি পড়িয়ে নিয়ে গেলো।  



বেশ বড় ফাকা জায়গা মাঝখানে চেয়ারে বসে আছে আশরাফ চৌধুরী, মর্জিনা খান, আরোহী। মুখ থেকে মানকি টুপি সরাতে অবাক হয়ে গেলো।  শুভ্র আশফা হৃদয় নেহা কুহু লিমন। শুভ্রের  মা সবাই এখানে চেয়ারে বাঁধা৷ 



(waiting for next part)

Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post