পরিপূর্নতায় তুই (Poripurnotay Tui)
3rd part
লেখকঃ Arian Sumon..
আমি রুমে চলে আসলাম। খুব করে কান্না পাচ্ছে। একটা মেয়ে এভাবে আমার জীবন নিয়া খেলা করতে পারল। কিন্তু আমি তো সত্যিই ওরে ভালোবাসি এখনও বাসি। সারাজীবন বাসব। এ জন্যই ওর মনে এত কষ্ট। মুখে একটু হাসিও নাই। না আমার কিছু করতেই হবে। ওরে আবার স্বাভাবিক করে তুলতেই হবে।
পরদিন অফিস গেলাম। বিভিন্ন কাজ করলাম। হঠাৎ সঞ্জিতা আমার রুমে আসল।
সঞ্জিতাঃ এই নিন? ( একটা খাম এগিয়ে দিয়ে)
আমিঃ এটা কি???
সঞ্জিতাঃ আমি রিজাইন করলাম।
আমিঃ কিন্তু কেন?
সঞ্জিতাঃ তা জানার প্রয়োজন আপনার নেই। আমি গেলাম ভালো থাকবেন।
আমিঃ আরে শুনবা তো
ও কিছু না বলেই চলে গেল।
ও চলে যাওয়ার পর বুকের মধ্যে কেমন চিন চিন ব্যাথা শুরু হয়ে গেল। ইচ্ছে করছে ওরে আটকে রাখি। কিন্তু চাইলেও যে কিছু জিনিস পারা যায়না।
যাহোক কোনোমতে অফিস করে বাড়ি গেলাম।
এভাবে পাঁচ ছয়দিন চলে গেল। সঞ্জিতাকে ভিষন মিস করতেছি। সিদ্ধান্ত নিলাম আমি সঞ্জিতাকে বিয়ে করব। কেন করব জানা নেই। কিন্তু এইটুকু জানি আমি ওরে খুব ভালোবাসি। ও আমাকে ঠকিয়েছে। তাই বলে তো ওর বিপদের সময় নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারি না।
চলে গেলাম রাকিবের বাসায়। আলোচনার জন্য,,,
আমিঃ তোদের সাহাজ্য লাগবে
রাকিবঃ বল
আমিঃ ভাবি কোথায়? ডাক দে
রাকিব ডাক দিল। ও আসল
আমিঃ ওরে আমার আর সঞ্জিতার ব্যাপারে সব খুলে বল।
রাকিবঃ তুই কি চাচ্ছিস সেটা বল।
আমিঃ আচ্ছা তুই বলবি না আমি বলতেছি।
আমি সব খুলে বললাম রিশা কে।
রিশাঃ এত কিছু করেছে আপু আপনার সাথে?
রাকিবঃ তোমার আপু যে কত টা খারাপ বলার বাহিরে।
আমিঃ আহ রাকিব। তোকে এসব বলতে বলিনাই।
রিশাঃ তো ভাইয়া এখন বলুন কিভাবে সাহাজ্য করব আপনাকে
আমিঃ আমি সঞ্জিতাকে বিয়ে করতে চাই।
রাকিবঃ কিইই তুই পাগল হইছত?
আমি; হুম আমি পাগল হয়ে গেছি। ওর কষ্ট আমার সহ্য হচ্ছেনা।
রাকিবঃ সহ্য নাহলে সাহাজ্য কর তাই বইলা কি বিয়া করতে হবে নাকি।।
আমিঃ হুম আমি আগেও চাইতাম আমি ওর পাশে সারাজীবন থাকব। এখন ও চাই।
রাকিবঃ তুই পুরা পাগল হয়ে গেছিস। এটা সম্ভব না।
রিশাঃ আরে তুমি থামো। ভাইয়া বিয়া করবেন ভালো কথা। কিন্তু আপনার আব্বু আম্মু যদি মেনে না নেয়?
আমিঃ নিবে। এখনি জিগাসা করতেছি।
আমি দিলাম আম্মুকে ফোন।
আম্মুঃ কেমন আছিস বাবা
আমিঃ ভালো নেই আম্মু।
আম্মুঃ কি হয়েছে তোর?
আমিঃ আম্মু আমি যদি একজন প্রেগনেন্ট মেয়েকে বিয়ে করি তাহলে কি তোমার কোনো আপত্তি আছে???
আম্মুঃ আগে বল মেয়ে টা কি অসহায়??
আমিঃ হুম অসহায়।
আম্মুঃ তুই সুখে থাকতে পারবি তো???
আমিঃ পারব। তোমরা অনুমতি দিলে আমি বিয়ে করব।।
আম্মুঃ তুই যখন চাস তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
আমিঃ ওকে। ধন্যবাদ আম্মু।
তারপর
আমিঃ আব্বু আম্মুর আপত্তি নেই। তুমি তোমার আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলো
রিশাঃ হুম বলব। কালকে জানাব।
আমিঃ ওকে আমি এখন আসি।
রিশাঃ তা কি করে হয় খেয়ে তারপর যাবেন
আমিঃ না আজ নয় অন্য কোনোদিন।
রাকিবঃ ধুর বেটা চুপ করে বস। খেয়ে তারপর যাবি।
আর কিছু বলতে পারলাম না। ওদের ওখান থেকে খেয়ে বাসায় আসলাম। ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমালাম।
পরদিন আবার সন্ধ্যায় ওদের বাসায় গেলাম।।
রিশাঃ ভাইয়া আব্বু আম্মু রাজি কিন্তু সঞ্জিতা আপু রাজি হচ্ছে না।
আমিঃ সোজা পথে রাজি না হলে বাকা পথ ধরতে হবে।
রিশাঃ কি করবেন?
আমিঃ তাহলে শুনো। ওদের কে প্ল্যান টা ভালো ভাবে বুঝিয়ে বললাম।
রিশাঃ এভাবে করলে হবে তো??
আমিঃ হবেই হবে ১০০%।
রিশাঃ ওকে তাহলে আমিও আব্বু আম্মুকে জানিয়ে রাখছি।।
তারপর বাসায় এসে কাজি অফিসে ফোন দিলাম। সব ব্যবস্থা করে রাখতে বললাম।
পরদিন ভোর ভোর ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে গাড়ি নিয়া বেড় হলাম।
তারপর জায়গামত গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। ওর বোন বলছে প্রতিদিন এই পথ দিয়া যাওয়া আসা করে সঞ্জিতা।
অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন আসবে।
অবশেষে আসল। আমি গাড়ি থেকে ওর সামনে গেলাম।
সঞ্জিতা আমাকে দেখে মনে হলো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেছে।
সঞ্জিতাঃ আপনি এখানে???
আমি; হুম আমি এখানে নিতে এলাম তোমাকে
সঞ্জিতাঃ মানে
আমিঃ মানে হলো। তুমি আমাকে ভালো বাসোনা কিন্তু আমি তো বাসি। অনেক বেশি।
সঞ্জিতাঃ পথ ছাড়ুন।।
আমিঃ আমি বিয়ের প্রস্তাব দিলাম রাজি হলা না কেন
সঞ্জিতাঃ কারন আমি বিয়ে করব না।
আমিঃ বিয়ে তো তোমার করতেই হবে।
আমি সঞ্জিতার হাত ধরলাম।
সঞ্জিতাঃ কি হচ্ছে কি হাত ছাড়ুন।
আমিঃ না চল আমার সাথে
আমি সঞ্জিতাকে টানতে টানতে গাড়িতে বসলাম। তারপর গাড়ি লক করে দিলাম।
আমি গিয়ে গাড়িতে বসলাম।
সঞ্জিতাঃ আমাকে যেতে দিবা নাকি আমি চিৎকার করব
আমিঃ চিৎকার করবা??দাড়াও দেখাচ্ছি।
তারপর মোবাইলের ভিডিও টা অন করে দিলাম।
ও দেখেই অভাক এবং কান্না করে দিল।
সঞ্জিতাঃ রিশা
আমিঃ হুম রিশা। তুমি যদি আমাকে বিয়ে না করো তাহলে আমার লোক রিশা কে খতম করে দিবে। আর করলে প্রানে বেচে যাবে। এখন দেখ তোমার মর্জি।
সঞ্জিতাঃ না না প্লিজ রিশার কোনো ক্ষতি করোনা। আমি বিয়ে করব তোমাকেই করব।
আমিঃ good girl...
সঞ্জিতাঃ রিশাকে ছেড়ে দাও।
আমিঃ বিয়ে টা সেড়ে নেই। তারপর
সঞ্জিতা কাদতে লাগল।
কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা কাজি অফিস পৌছে গেলাম।
আমিঃ কান্না কাটি থামাও। কেউ যাতে না বুঝে আমি তোমাকে জোর করে বিয়ে করতেছি।
সঞ্জিতা কেদেই চলছে
আমিঃ কান্না থামাতে বলছি তো ( ধমক দিয়ে)
কান্না থামল।
আমরা গাড়ি থেকে নেমে কাজি অফিসের ভেতরে ডুকলাম। সেখানে রাকিব সব ব্যবস্থা করে রেখেছে।
সঞ্জিতা রাকিব কে দেখে চমকে গেল। ওর বোনের জামাই। ওর বোন বিপদে আর ও এখন এখানে কি করে। তাহলে কি ওর বোনের জামাই সহ এর সাথে জড়িত।
কিছুক্ষনের মধ্যেই সব ফর্মালিটি শেষ করে বিয়ে হয়ে গেল। এখন আমি আর সঞ্জিতা স্বামী স্ত্রী।
রাকিবঃ অভিনন্দন দোস্ত এবং ভাবি
আমিঃ ধন্যবাদ। তোরা না থাকলে হয়ত পারতাম না।
রাকিবঃ ধুর চল এখন বাসায়।। সবাই অপেক্ষা করতেছে।
তারপর গাড়ি নিয়ে চলে গেলাম বাসাতে। বাসার ভেতরে ডুকতেই রিশা এসে হাজির।
সঞ্জিতা রিশাকে দেখে চমকে গেল।
সঞ্জিতাঃ তুই এখানে?? তাহলে
রিশাঃ ধুর। ওসব কিছু না। তুই বিয়েতে রাজি হচ্ছি লি না। তাই এই নাটক। জানিস সুমন ভাইয়া না তোকে খুব ভালোবাসে।
আমিঃ রিশা তোমার আব্বু আম্মু কোথায়?
এর মধ্যেই ওর আব্বু আম্মু আসল। আমি সালাম করলাম। সঞ্জিতা আরো চমকে গেল। সবাই ওর সাথে নাটক করল। সঞ্জিতা চুপ হয়ে গেল।
আমি আর রাকিব মেয়েদের মাঝ থেকে চলে গেলাম।
রিশা সঞ্জিতাকে বউ সাজিয়ে দিল।
সবকিছু শেষ করে। যে যার মত বাসায় চলে গেল। এখন শুধু বাসায় আমি আর সঞ্জিতা।
সঞ্জিতা বাসর ঘরে বসে আছে।
হয়ত ভাবছে সবাই ওর সাথেই কেন এমন করল। নিজের বাবা মা বোন ও এর সাথে শামিল।
আমি রুমে ডুকতেই
সঞ্জিতাঃ কি চাও তুমি???
আমি ওরে দেখতে লাগলাম। শাড়িতে ওরে কত সুন্দর লাগছে।
সঞ্জিতাঃ আমি কিছু জিগাসা করছি
আমি ওর দিকে তাকিয়েই আছি।
এর পর যা হলো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
To be continue