পরিপূর্নতায় তুই Poripurnotay Tui
4th part.
লেখকঃ Arian Sumon
সঞ্জিতাঃ কি চাও তুমি???
আমি ওরে দেখতে লাগলাম। শাড়িতে ওরে কত সুন্দর লাগছে।
সঞ্জিতাঃ আমি কিছু জিগাসা করছি
আমি ওর দিকে তাকিয়েই আছি।
এর পর যা হলো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
সঞ্জিতা নিজের শাড়ির আচল খুলে ফেলল।
সঞ্জিতাঃ এটাই তো চাও? অবশ্য তোমরা ছেলেরা এর থেকে বেশি কি ই বা করতে পারো।
আমি তো ওর কাহিনি অভাক হয়ে গেলাম। আমি কখন বলছি এসব চাই।
সঞ্জিতাঃ কি হলো ভোগ করো আমাকে এসো।
আমি এগিয়ে গেলাম। তারপর ওর শাড়ির আচল টা তুলে দিলাম।
আমিঃ সব ছেলেরা একরকম নয়।
এই বলে আমি রুম থেকে বেড়িয়ে আসলাম। এসে ড্রয়িং রুমে শুয়ে পড়লাম।
আচ্ছা মেয়েরা এমন কেন? ছেলেদের সবসময় শুধু খারাপ বলে। কিন্তু ছেলেরা যে মূলত কার জন্য কিভাবে খারাপ হয় সেটা কি তারা জানে? না জানারই কথা। ওরা তো আর সত্যিকারের ভালোবাসতে জানেনা। জানে শুধু ধোকা আর মিথ্যা বলতে। একসাথে দশ পনেরো জনের সাথে প্রেম করতে।
ড্রয়িং রুমেই ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে ঘুম ভাঙল ফোনের আওয়াজে। রাকিব কল দিছে ।
রাকিবঃ কিরে আজ অফিস আসবি?
আমিঃ হুম আসব।
রাকিবঃ কি বলিস তাহলে ভাবি?
আমিঃ আজব বিয়ে করছি বলে কাজ ছেড়ে দিব নাকি?
রাকিবঃ তা না।
আমিঃ তো চুপ থাক। রাখলাম।
ফোন রেখে দিলাম। তারপর রুমে গিয়ে দেখলাম সঞ্জিতা ঘুমিয়ে আছে।
ঘুমন্ত অবস্থায় মেয়েদের এমনিতেই সুন্দর লাগে বন্ধুদের কাছে শুনছি। কিন্তু এই প্রথম দেখলাম। সঞ্জিতাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
আর কিছু করলাম না। বেড় হয়ে আসলাম। ফ্রেশ হলাম। তারপর সকালের খাবার রেডি করতে লাগলাম।
খাবার বানানো শেষ। রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি সঞ্জিতা বসে আছে।
আমিঃ ফ্রেশ হয়ে খেতে এসো।
সঞ্জিতা কিছু বলল না।
আমি আর কিছু বললাম না। চলে আসলাম। আমি খেয়ে নিলাম। তারপর খাবার নিয়ে রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি ও বসেই রয়েছে।
আমিঃ এই যে খাবার রেখে গেলাম। খেয়ে নিও। আমার উপর রাগ করে নিজেকে কষ্ট দিও না।
কিছুই বলল না।
আমি বেড় হয়ে গেলাম অফিসে যাওয়ার জন্য। তারপর অফিস চলে আসলাম।।
কাজ করতেছি এমন সময় রাকিব আসল,।।
রাকিবঃ কিরে সেই চলেই আসলি? ভাবি একা থাকতে পারবে?
আমিঃ সে কি কচি খুকি যে একা থাকতে পারবেনা।
রাকিবঃ থাক। পরশুদিন আমরা ঢাকায় ফিরছি।
আমিঃ ওহ। তাহলে তো ভালোই হয়।
রাকিবঃ হুম। তবে একটা কথা?
আমিঃ বল
রাকিবঃ ভাবি কিন্তু প্রেগন্যান্ট। বাসায় একা কি থাকতে পারবে?
এই বলে রাকিব চলে গেল।।
আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার মাথায় তো এটা ছিল না। কি যে আমি। এইটুকুও মাথায় ছিল না।
কোনোরকমে হাতের কাজগুলো সেরে বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম।
রাস্তায় একটা হোটেল থেকে বিড়িয়ানি কিনে নিলাম।
বাসার দরজার সামনে গেলাম। কলিং বেল দিচ্ছি দরজা খুলছেনা। অনেক ক্ষন দিলাম খুলছেই না। কিছু হলো না তো আবার।
নিজের কাছে চাবি ছিল সেটা দিয়াই দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলাম। গিয়ে সঞ্জিতাকে খুজতে লাগলাম। সব খুজলাম পেলাম না। কি হলো গেল কোথায়।
বারান্দায় চোখ পরতেই দেখি সঞ্জিতা বারান্দায় দাড়িয়ে আছে। বাচা গেল।
আমি গেলাম ওর কাছে। গিয়ে দেখলাম ও গভির ভাবে ভাবছে। কি ভাবছে তা তো বুঝলাম না। কিন্তু মনে হলো আমাকে নিয়াই ভাবতেছে।
আমি ওর কাধে হাত দিলাম। ও মনে হলো শকড খেল। ঘুরে আমার দিকে তাকালো।
আমিঃ কি ভাবছ??
সঞ্জিতা মুখ ঘুরিয়ে নিল।
আমিঃ কি হলো শরির অসুস্থ নাকি তোমার?
সঞ্জিতাঃ না।
আমিঃ তাহলে চলো আমার সাথে
সঞ্জিতাঃ কোথায়
আমিঃ দেখলাম তুমি খাবার খাও নি। চলো খেতে চলো
সঞ্জিতা কিছু বলল না।।
আমি ওরে নিয়া আসলাম খাবার টেবিলে।। তারপর প্যাকেট থেকে বিড়িয়ানি বেড় করে দিলাম। ও খেতে শুরু করল।
আমিঃ একটা ভালো খবর আছে
সঞ্জিতাঃ কি
আমিঃ আমরা পরশুদিন ঢাকায় যাচ্ছি।
সঞ্জিতাঃ মানে তোমার বাসায়?
আমিঃ হুম।
এটা শুনার পরেই সঞ্জিতা দাড়িয়ে গেল। আর না খেয়ে রুমে চলে গেল। আমি কিছুই বুঝলাম না। হলো কি ওর?
আমিও ওর পিছু পিছু রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি কাদতেছে।
আমিঃ কি হয়েছে কাদতেছ কেন?
সঞ্জিতাঃ....
আমিঃ বলবা তো কি হয়েছে
সঞ্জিতাঃ তুমি আমাকে ভালোবাসো???
আমিঃ হুম বাসি অনেক বেশি।
সঞ্জিতাঃ তাহলে আমাকে ডিবোর্স দিয়ে দাও
আমিঃ কেন
সঞ্জিতাঃ আমি পারব না তোমার সাথে থাকতে। আমি আমার পেটের সন্তান কে নিয়া একাই থাকতে চাই। চাই না কারো করুনা
আমিঃ আমি করুনা করছিনা। ভালোবেসেছিলাম সেটার মান রাখছি। তুমিও আমাকে ভালোবাসো। তাহলে এমন মনে হবেনা। আর তোমার পেটে যে সন্তান ওটা আমার সন্তান।
আর কিছু না বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে রাস্তায় চলে আসলাম। একটা চায়ের দোকানে বসে চা আর সিগেরেট নিলাম।
কি পাইছে ও? যখন যা খুশি তাই বলতেছে। ইচ্ছা করে থাপ্পর দিয়ে সব বুঝিয়ে দেই। তাও পারছিনা। কবে যে বুঝবে আমি সত্যিই ওরে খুব ভালোবাসি। এতটাই ভালোবাসি যে ওর জন্য নিজের জীবন টাও দিয়ে দিতে পারি।
চা সিগেরেট খেয়ে বাসায় ফিরলাম। জেদ টা একটু কমেছে। বাসায় ফিরে দেখি সঞ্জিতা ঘুমাচ্ছে। আমি রাতের জন্য খাবার তৈরি শুরু করলাম। খাবার বানাতে বানাতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। এতক্ষনে একবার ও সঞ্জিতাকে দেখি নাই।
ওরে দেখার জন্য রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি ও বসে আছে। আমি একটু দেখেই চলে আসলাম।
"
"
"
রাতে খাবার জন্য সঞ্জিতাকে ডাকলাম। কিন্তু এলোনা। তাই খাবার নিয়ে গেলাম ওর কাছে।
আমিঃ খেয়ে নাও
সঞ্জিতাঃ খাব না
আমিঃ আমি খাইয়ে দিচ্ছি হা করো
সঞ্জিতাঃ বলছি তো খাব না।
আমিঃ একদম চুপ। হা কর খাইয়ে দিচ্ছি ( ধমক দিয়ে)
ও চুপ হয়ে গেল। তারপর আমি খাইয়ে দিলাম। খাওয়া শেষে আমিও খেয়ে নিলাম।
তারপর ঘুমালাম।
অন্যদিকে সঞ্জিতা ভাবছে হে আল্লাহ তুমি আমাকে এ কোন পরিক্ষায় ফেললা। আমি তো এরকম চাইনি। আমি সুমন কে আপন করে নিতে পারব না। আমি জানি সুমন ও আমাকে ছাড়বেনা। প্লিজ আল্লাহ তুমি কিছু করো।
এসব ভাবতে ভাবতে সঞ্জিতা ঘুমিয়ে গেল।
তারপরের দিন টাও কোনোরকম ভাবে কেটে গেল।
আজকে বাড়ি ফিরব। তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সব কিছু গুছাতে লাগলাম। সঞ্জিতাকে জাগাইতে গেলাম।
আমিঃ সঞ্জি এই সঞ্জি উঠো।
ও উঠে বললল
সঞ্জিতাঃ কি হয়েছে
আমিঃ আজ তো আমরা ঢাকা যাব। ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নাও। রাকিব রিশা আমাদের জন্য অপেক্ষা করতেছে
সঞ্জিতা কিছু বলল না উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল।
আমি নিজের মত করে সব গুছিয়ে নিলাম।
রুম থেকে বেড় হলাম। ফিরে এসে দেখি সঞ্জিতা শাড়ি পরতেছে।
আমিঃ ওহ সরি সরি বুঝতে পারিনি।
এই বলে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলাম।
এর মধ্যে রাকিব রিশাও চলে আসল গাড়ি নিয়ে। একসাথে যাব আমরা।
রাকিবঃ কিরে হলো তোদের
আমিঃ আমার হয়ে গেছে। সঞ্জিতা রেডি হচ্ছে
রিশাঃ আচ্ছা আমি দেখছি।
তারপর সব কিছু গুছিয়ে রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। গাড়ির সামনে রিশা আর রাকিব। রাকিব ড্রাইভ করছে গাড়ি।
আর আমি আর সঞ্জিতা পেছন বসে আছি।
আমি ভাবছি আম্মু যখন দেখবে আমি যাকে বিয়ে করছি সে আর অন্য কেউ সঞ্জিতা। আম্মু সঞ্জিতাকে ভালোভাবেই চিনে। যার জন্য আমার জীবন নষ্ট হতে চলছিল। আম্মু কি সব কিছু ভূলে ওরে মেনে নিতে পারবে? এখন শুধু আল্লাহর উপরেই ভরসা।
অন্যদিকে সঞ্জিতা জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে। আর ভাবছে নিজেকে বড় অসহায় লাগছে। রিফাত কে কত ভালোবেসে ছিলাম। রিফাতের জন্য সুমন কে এত কষ্ট দিলাম। কিন্তু রিফাত আমাকে বিয়ে করল ঠিক। কিন্তু সুখ দিতে পারল না। ছয়টা মাস শুধু ঝগড়া আর ঝগড়া করেছে। অবশেষে নিজেই গত হয়ে গেল। কিন্তু সুমন আমি ওরে এত বড় ধোকা দিছি। হয়ত খুব কষ্টে ছিল। তবুও ও ওসব মাথায় না রেখে আমাকে আপন করে নিছে। হে আল্লাহ এখন আমার কি করা উচিত তুমিই বলে দাও??
এসব ভাবতে ভাবতে সঞ্জিতার চোখে পানি চলে আসে। সঞ্জিতা নিজেকে সামলে নেয়।
এরপর আমরা ঢাকায় পৌছালাম। আমি আর সঞ্জিতা আমাদের বাড়ির সামনে নেমে গেলাম। রাকিব চলে গেল নিজের বাসায়।
আমার বাসায় ডুকতেই ভয় করছে। না জানি আম্মু সঞ্জিতাকে দেখে কি রিয়েক্ট করবে। হে আল্লাহ সব কিছু ভালোভাবে মেনেজ করে দিও।
বাসার ভেতরে ডুকতেই আম্মু,,...??????
To be continue