লেডি কুইন Lady Queen
পর্ব ১৫
লেখা: Meherab Kabbo
কুহু লিমনকে বললো
-ওদের কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কি করছে এসব।
-আমি ও তো কিছুই বুঝতে পারছি না। যতদূর জানি এসব করে ছোট ছেলেমেয়েরা।
-তাহলে এরা কেন? আরে ঐ তো আরোহী ও পিছনে কি হলো।
-চল তো এগিয়ে দেখি।
জোড়ে টানার ফলে পিছন থেকে মেহেরাব টুস করে পড়ে গেলো। মেহেরাব কিছু ধরা ছিলো না। তাল সামলাতে না পেরে পিছন থেকে পড়ে যায়। আরোহীকে নিয়ে সামনে কিছুদূর এগিয়ে গেলো। আশফা শুভ্র হাসতে লাগলো। মেহেরাব বসে ওদের দিকে চেয়ে আছে। আরোহী ও হাসছে। শুভ্র এগিয়ে যেয়ে
-উঠ উঠ। আগে তো আমি পড়ে যেতাম তুই মজা নিতি আজ তুই পড়লি। আমার তো বিশ্বাসি হচ্ছে না।
-হ্যা আমি তো কিছু ধরা ছিলাম তার জন্য পড়ছি ক।
-হয়েছে হয়েছে। উঠ।
মেহেরাব উঠে দাড়ায়। মেহেরাবের হাতের কেনুর উপর থেকে কিছুটা ছিলে গেছে৷ রক্ত ও পড়ছে। আরোহী দেখে
-এ কি হলো৷ শুভ্র ওকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে চল।
-না লাগবে না যাওয়া আমি ঠিক আছি।
শুভ্র হেসে দিয়ে
-এটা কোনো ব্যাপার নাকি। এর ওষুধ তো আছে।
কুহু লিমন এগিয়ে এসে
-কি হয়েছে।
-ও পড়ে যেয়ে হাত ছিলে নিছে।
-এগুলো তো বাচ্চারা করে তোর কি হলো।
-এটা ও এক ধরনের গাড়ি। কি যে মজা চড়তে। তোরা কখনো চড়ছিস নাকি যে মজা বুঝবি।
শুভ্র রাস্তার পাশে গেলো। রাস্তার পাশ ঘেঁষে কিছু দুবলো ঘাস দেখতে পেলো। তা শুভ্র উঠিয়ে আনে আশফা এটা দেখে
-এ দিয়ে কি করবা।
-এটা তো ওষুধ।
সবাই অবাক হয়ে চেয়ে পড়ে। মেহেরাব হাসছে। শুভ্র ঘাসগুলো মুখের ভেতর নিলো। আশফা লিমন আরোহী কুহু হা হয়ে পড়লো। আশফা বলে উঠলো
-তুমি কি গরু নাকি যে ঘাস চিবাচ্ছো।
শুভ্র ঘাসগুলো চিবাচ্ছে আর বলে
-এগুলো কি শুধু গরু ছাগলে খায় নাকি এটি যে মানুষের উপকারে আসে।
শুভ্র মুখ থেকে বের করে মেহেরাবের কাটা জায়গায় লাগিয়ে দিয়ে
-ছোট বেলায় তুই এটা করতি আজ আমি সুযোগ পেয়ে করলাম।
-জ্বলছে তো।
-তো বোঝ আমি কেন চিৎকার দিতাম আর তুই তো মজা নিতি।
সবাই হেসে উঠলো । এবার সবাই এক এক জন করে বসছে সবাই মিলে টানছে। খুব মজাই হচ্ছে ওদের৷ এভাবে চড়তে৷
(কোনো জায়গা যদি কেটে যেতো তাহলে দূবলো ঘাস বা জরমোনী লতা বেটে কাটা বা চিবিয়ে কাটা অংশে লাগাতো। হয়তো অনেকে এসব চিনে না জানে ও না। নতুন লাগছে এগুলো। )
প্রিন্সিপাল স্যার ওদের কান্ড দেখে এগিয়ে যেয়ে
-তোমরা দেখি বাচ্চায় রয়ে গেলা। আগে ভাইবোন ছেলে মেয়েরা এভাবে খেলা করতো। কাঁঠাল পাতা দিয়ে টাকা বানিয়ে গাড়ি ভাড়া দিতো। বলা হতো ঐ পর্যন্ত টেনে নিবে এত টাকা দিতে হবে৷
-হুম তখনকার টাইমটা খেলাধুলায় বেশ আনন্দ দায়ক ছিলো।
-এখন তো চোখেই পড়ে না। সব বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তোমাদেরটা দেখে ছোটকালের সৃতি মনে পড়ে গেলো। আবার যদি ফিরে যেতে পারতাম ছোটবেলার দিনগুলোতে।
স্যার সহ সবাই হেসে দিলো। প্রিন্সিপাল স্যার চলে গেলো।
শুভ্র মেহেরাবকে বললো
-দোস্ত চল আমরা ও ছোটবেলায় চলে যায়।
-কিভাবে যাবি। এখন আর তো সম্ভব না।
একে অপরকে টানতে টানতে খোলা এক পর্যায়ে ক্ষয় হয়ে ফুতো হয়ে গেলো। এটা দিয়ে আর কাজ হবে না। তাই ফেলে দিলো।
সবাই ক্লাসে চলে গেলো।
কুহু আরোহীকে বললো
-সেই লেভেলের আনন্দ পেলাম। এত মজা চড়তে ভাবতে পারিনি। উফ আবার যদি চড়তে পারতাম।
-শুধু কি আর তোর মন চায় আমার ও তো ইচ্ছা হচ্ছে। এগুলো তো কিনতে পাওয়া যায় গ্রামে। গ্রাম থেকে এনে প্রতিদিন চড়বো।
-আইডিয়াটা খারাপ না।
ক্লাস শেষ এ যে যার মতো করে বেরিয়ে পড়লো। আরোহী পিছন থেকে মেহেরাবকে ডাক দিলো মেহেরাব থেমে গেলো। আরোহী বললো
-আজ সাইকেল আনিসনি৷
- না। আপনি কেমন আছেন।
আরোহী ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো মেহেরাবের কথা শুনে।
-ভালো না থাকলে তো আর আসতাম না। তাহলে তো বাসায় শুয়ে থাকতাম।
-না মানে আপনি তো ব্যথা পেয়েছেন মাথায় তাই।
-ও আচ্ছা আগের থেকে ভালো। তো আবার মারবি নাকি ডাক্কা।
-না।
-তোর সাইকেল কই।
-সাইকেলটা গ্যারেজ ওয়ালা বিক্রি করে দিছে।
-কেন?
-ঠিক করতে দিছিলাম নেওয়ার কথা ছিলো আর তো নেওয়া হয়নি। অনেক দিন তো চলে গেলো তার কাছে রাখার জায়গা নেই তাই আমাকে না পেয়ে বিক্রি করে দিছে।
-কোন গ্যারেজ। চল তো।
-না। তার বিপদ তো উদ্ধার হয়েছে।
-মানে।
-তার মেয়ে হাসপাতালে ছিলো টাকা লাগবে জোগাড় হয়নি কোন উপায় না পেয়ে সাইকেল বিক্রি করছে। একজন বলছিলো। গ্যারেজ ওয়ালা টাকা দিতে চাইছিলো টাকা নি নাই আমি।
মেহেরাব কথাটা বলে চলে গেলো৷ আরোহী অবাক হয়ে চেয়ে থাকলো।
বিকাল টাইম আরোহীর ফোনে ফোন আসলো। ফোনটা কেটে দিয়েই বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো। আরোহীর সাথে সব গাডর্সরা পিছনে আর সামনে৷ আরোহীর গাড়ি মাঝখানে। যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। গাড়িগুলো ক্লাবের সামনে এসে দাঁড়ালো৷ গার্ডসরা আগে নেমে চারপাশ দেখে নিলো। তারপর আরোহী গাড়ি থেকে নামলো। নেমে ক্লাবের ভেতরে ঢুকে গেলো৷ ক্লাবের ভেতর বসে আছে রায়হান চৌধুরী। যার কল পেয়ে আরোহী ছুটে আসছে। আরোহী তার সামনে চেয়ার এ বসলো
-welcome leady Queen
-tnx
-তোমার মা কে দেশে আসতে বলো।"
আরোহী অবাক হয়ে
-হঠাৎ মাম্মিকে কেন দেশে আসতে হবে।
-তোমার মা ছাড়া এই ডিলটাই তারা রাজি না।
-কেন? আমার কথা কি তারা শুনে নি।
রায়হান চৌধুরী হেসে দিয়ে
-হ্যা শুনেছে। তবে তোমার ডিল এ তারা রাজি নন। শুনলাম তোমাকে আকমাল নদীর পাড়ে আক্রমণ করেছিলো।
আরোহী অবাক হয়ে
-কই আমি তো কিছু জানি না।
-তোমার সাথে নদীর পাড়ে একটা ছেলে ছিলো। ও যদি তোমাকে ডাক্কা না দিতো তাহলে তোমার আর এই পৃথিবীর আলো আর দেখতে হতো না। তারা সবটা জানে তাই তারা কোনো রিক্স নিতে চায় না। সো তোমার মাম্মিকে আসতে বলো। তাহলে আমি বৈঠক এর ব্যবস্থা করি।
আরোহী কথাটা শুনে হা হয়ে গেলো। আরোহী বলে উঠলো
-আমি তো ঐদিন বেহুশ হয়ে গেছিলাম তাহলে কে বাঁচালো আমাকে?
-এটা আমার অজানা। তবে শত্রু পক্ষের কারো কোন চিহ্ন নেই। তুমি সাবধানে চলফেরা করো।
-ঠিক আছে। আপনি বৈঠকের ব্যবস্থা করেন। আমি মাম্মিকে ফোন করে বলে দিচ্ছি।
এমন সময় ওয়েটার এসে ওদের টেবিলে কফি রাখলো৷ আরোহী ওয়েটারকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। আরোহী বলে উঠলো
-মেহেরাব তুই এখানে
মেহেরাব আরোহীকে দেখে ভূত দেখার মতো অবস্থা। মেহেরাব চলে যেতে যাবে তখনি আরোহী
-কই যাচ্ছিস। তোর সাথে কথা আছে।
-ম্যাডাম আপনার কিছু লাগবে ?
আরোহী অবাক হয়ে
-মানে। এই তুই কাকে ম্যাডাম বলছিস।
-আপনাকে। আমি এখানের সামান্য একজন কর্মচারী। ওয়েটার এর কাজ করি৷
আরোহী চোখমুখ পাকিয়ে চিল্লিয়ে
-ক্লাবের ম্যানেজার কোথায়?
আরোহীর চিল্লানো শুনে ম্যানেজার এসে হাজির হয়ে
-কি হয়েছে আরোহী মামনি।
-এই ছেলে এখানে কি করে?
-ও তো এখানে চাকরি করে। ও কি কিছু করছে?
-ওকে এক্ষণি এখান থেকে বের করে দিবেন। আর যেনো দেখি না ও এখানে কাজ করছে।
-এই মেহেরাব তুই কি বেয়াদবি করছিস হ্যা। তুই তাকে চিনিস। না চিনেই। তোকে আর এখানে কাজ করতে হবে না। বের হয়ে যা।
আর তাকে সরি বল।
মেহেরাব অবাক হয়ে গেলো। মেহেরাব আরোহীকে সরি বলে ক্লাব থেকে বেরিয়ে গেলো। ম্যানেজার বললো
-মামনি ও অনেক গরীব একটা ছেলে। ওর ভূলের জন্য আমি ওর হয়ে মাফ চেয়ে নিচ্ছি।
-ঠিক আছে।
ম্যানেজার চলে গেলো। আরোহী বলে উঠলো
-আঙ্কেল আমার একটু কাজ আছে৷ আপনি সবকিছুর আয়েজন করেন। উঠি এখন।
-ছেলেটা কে ?
-ঐ যে নদীর পাড়ে যে ডাক্কা মেরেছিলো সে।
-তাহলে তুমি ওর সাথে এমন ব্যবহার করলে কেন? ওকে তো তোমার ধন্যবাদ দেওয়া উচিত।
-ও আমার সাথে ভাব নিতে গেছে তাই৷ করেছি। সাহস কত আমাকে বলে ম্যাডাম। বের করছি ওর ভাব।
আরোহী ক্লাব থেকে বেরিয়ে গেলো।
মেহেরাব রাস্তা দিয়ে হাটছে আর ভাবছে, অনেক কষ্ট করে একটা চাকরি জোগাড় করছিলাম। তাও ঐ চুন্নির জন্য চলে গেলো। আমি এখন কাজ পাই কই।
মেহেরাবের সামনে কিছু গাড়ি এসে ব্রেক করলো। মেহেরাব ভয় পেয়ে লাফিয়ে উঠে। ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসলো।
(Waiting for next part)
Bangla Golpo
Bhuter Golpo
Bangla cartoon
Bangla Golpo pdf download
Bangla premer golpo
Pratilipi bangla golpo
Bangla golpo love story
Bangla choti golpo
Bangla golpo Lyrics
Bengali story reading
Bangla Love Story 2021
Valobasar golpo in bengali
Romantic love story bangla
New bangla love story 2021