লেডি কুইন পর্ব ৪ | Leady Queen part 4 | Bangla Romantic Love Story - storyBD.xyz

লেডি কুইন Lady Queen

পর্ব ৪ 

লেখা: Meherab Kabbo 




আরোহী বাইক চালিয়ে ভার্সিটিতে ঢুকলো৷  পিছনে আরোহীর বান্ধবীরা।  সবার যে চোখ সামনে দিকে একজনের উপর রয়েছে তা আরোহী লক্ষ্য করলো৷  কারণ আরোহী যে ক্যাম্পাসে ঢুকছে সেদিকে খেয়াল নেয় কারো।  




 মেহেরাবের সামনে নেহা দাড়িয়ে পড়লো।  মেহেরাব নেহাকে দেখে অবাক হয়ে গেলো।  নেহা মেহেরাবের সামনে দাঁড়িয়ে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখলো তারপর 

-তুই আমাদের ভার্সিটিতে ক্যাম্পাসে ঢোকার সাহস পেলি কিভাবে।  তাও এই অবস্থায়।  কখনো আয়নায় নিজেকে দেখেছিস।  তোকে তো পুরোই সাকার্স লাগছে।  খেলা দেখাতে আসছিস৷ নাকি কিছু বিক্রি করতে আসছিস।  

-না মানে আমি এখানে 

-হয়েছে বুঝছি।  তুই যে মানুষ ঠকাস তা বুঝতে পেরিছি।  তোদের মতো গাইয়াদের একটাই সমস্যা। কি জানিস রাস্তা ঘাটে কাউকে দেখলেই তাকে তোদের পরিচিত মনে হয় আর তাদেরকে ভূলিয়ে টাকা ছিনতাই করিস।  

-আপনি আমাকে ভূল বুঝছেন।  আসলে 


মেহেরাবের পুরো কথা আটকিয়ে আরোহী পিছন থেকে এসে 

-কি হয়েছে নেহা। 

-আর বলিস না এই ক্ষেতকে দেখলাম ফুটপাতের ওপরে কি বিক্রি করছে আর এখন এই গ্যাইয়া মার্কায় ক্যাম্পাসে।  

-ঠিক আছে তুই ক্লাসে আমি দেখতাছি।  

-আস্ত মতো টাইট দিছ।  যাতে এই ভার্সিটিতে ঢোকার আগে দুইবার ভেবে নেয়।  নেহা চলে গেলো।  মেহেরাব আরেহীর কন্ঠ শুনে মনে মনে বলতে লাগছিলো  আজকে যে কপালে কি আছে জানিনা।  মেহেরাব সামনে ফিরতেই মেহেরাবকে দেখে হেসে উঠলো








লেডি কুইন পর্ব চার 


হাসবেই না বা কেন এমন পোশাকে আসলে অবশ্যই সবাই হাসবে। পায়ে স্যান্ডেল, ঢিলা প্যান্ট,হাঁটুর একটু উপর পর্যন্ত শার্ট, চোখে বাচ্চাদের কালো সানগ্লাস। চুলগুলো স্পাইক করা তাও চুলে ধুলো পড়া।  
আরোহী তো বলেই বসলো 
-এটা কোন সার্কাসের জোকার রে বাবা।  আমার লাইফে এর মতো সার্কাস প্রথম দেখলাম।  
মেহেরাব আরোহীর কথা শুনে মাথাটা নিচু করলো।  সবাই তো হেসেই যাচ্ছে। 

কুহু নাক ছিটকিয়ে মেহেরাবের চুলে হাত দিয়ে চুল গুলো টেনে নিচু করলো।  হাত মেলতেই, লিমন বলে উঠলো 
-এই কুহু তোর হাতে তো তেল লেগে গেলো। "
কুহু হাতের তেলের দিকে তাকিয়ে
-ওয়াক ছিঃ তেল দিয়ে স্পাইক করছে৷  
কুহু হাত টা মেহেরাবের শার্টে মুছে নিলো।  আরোহী মেহেরাবের কাধে হাত রেখে 
-বাচ্চাদের স্বভাবটা রয়ে গেলো।  পুরো গ্রাম্য ক্ষ্যাত।  এসব পোশাকে ভার্সিটিতে আসিছ কেন?  এই লিমন এই গাইয়াটাকে কিছু টাকা দিয়ে দে ভালো পোশাক কিনে পড়বে।  

মেহেরাব আরোহীর মুখের দিকে তাকিয়ে পড়লো।   কুহু বলে উঠলো 
-দোস্ত এভাবে তো দেওয়া যায় না।  ওকে বসতে বল আর হাত দুটো পাড়তে বল। 

সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।  সবাই মিলে মেহেরাবকে যে যার মতো করে অপমান করতে লাগলো৷  মেহেরাবের চোখের কোণে পানি জমাট বেঁধে গেছে।  মেহেরাব ওদের সামনে থেকে চলে গেলো।  আর মনে মনে বলছে সবাই পঁচা ।  এরা এভাবে অপমান করলো আমাকে পুরো ভার্সিটির সবার সামনে। আজ গরীব বলে এমন করলো।  মেহেরাব ব্যাগ থেকে একটা ভাঙ্গা আয়না বের করে দেখছে আর বলছে। আমাকে কতসুন্দর হিরো হিরো লাগছে। আমার চুলগুলোর কি অবস্থা করলো।  চুলগুলো ঠিক করেনি।  মেহেরাব চুলগুলো ঠিক করে ক্লাসের দিকে পা বাড়ালো৷   ক্লাসের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে  
-স্যার আসবো।  

স্যার ক্লাসে  এসে ক্লাস নিচ্ছিলো। মেহেরাবে কথা শুনে স্যার মেহেরাবের দিকে ফিরলো।  মেহেরাবের মুখে হাসি ফুটে আছে।  ক্লাসের সবাই দরজার দিকে তাকিয়ে পড়লো।  সবাই থ হয়ে রয়েছে।  স্যার তো অবাক। মেহেরাব আবার বললো 
-স্যার আসবো।  
-কে তুমি।  আর এই পোশাকে এখানে কেন?  যাও এখান থেকে কেউ সার্কাস খেলা দেখবে না।  আর তোমাকে ভার্সিটিতে ঢুকতে দিলো কে?  

স্যারের কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো৷ মেহেরাবের মুখটা কালো হয়ে গেলো।  

একজন তো উঠে দাঁড়িয়ে 
-স্যার আজকে ক্লাস নিয়েন না।  আমরা একটু সার্কাস দেখি।  
-স্যার এমন সুযোগ হয়তো আর পাবো না। " 
স্যার ধমক দিয়ে বললো 
-সাইলেন্ট ।  এই ছেলে তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন যাও না কেন? 

পিছনে বেঞ্চ থেকে আরোহী বলে উঠলো 
-স্যার  ছেলেটা সার্কাস খেলা দেখিয়ে টাকা রোজগার করতে আসছে ।  
নেহা ও বলে উঠলো 
-স্যার এই ছেলে এক এক টাইম এক এক কাজ করে।  সেদিন দেখছি ফুতপাতের দোকানের পাশে৷ আর এখন সার্কাস দেখাতে আসছে।  

সবাই আবার ও হেসে উঠলো  ওদের কথা শুনে।  শুভ্র আর আশফা সবার কথা শুনে দরজার দিকে উঁকি মারলো।  মেহেরাব মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে৷ আশফা আর শুভ্র তো অবাক। স্যার সবাইকে আবারো ধমক দিলো।  পুরো ক্লাস সাইলেন্ট শুভ্র বলে উঠলো 
-মেহেরাব তুই। 
মেহেরাব মাথা উচু করে শুভ্রর দিকে তাকালো।  স্যার মেহেরাব নামটা শুনে অবাক হলো।   শুভ্র বলে উঠলো
-স্যার ও এই ভার্সিটিতে পড়ে। ক্লাস খুজে পাচ্ছে না হয়তো তাই আমার কাছে আসছে।  
স্যার শুভ্রকে থামিয়ে দিয়ে 
-তুমি মেহেরাব৷  
-জ্বী স্যার। 
-প্রথমে বললে না কেন ?  আর এই পোশাকে কেন ভার্সিটিতে আসছো।  
-আসলে স্যার সবাই বলতো ভার্সিটিতে নাকি আনকমন কোন ড্রেস পড়ে যেতে হয়।  তাই আমি ও আসছি আনকমন পড়ে৷  
 
মেহেরাবের এমন কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো ।  
স্যার সবাইকে থামিয়ে 
-ভেতরে এসো।  
মেহেরাব ভেতরে ঢুকলো স্যার ওকে পাশে দাঁড়িয়ে 
-ছেলেটাকে নিয়ে সবাই হাসাহাসিতে ব্যস্ত।  কিন্তু ও সবার কথা শুনে যাচ্ছে। কারণ ও ক্ষ্যাত।  তাই তো।  

নেহা বলে উঠলো 
- পোশাক দেখলে তো বোঝায় যাচ্ছে।  আবার চোখে বাচ্চাদের কালো চশমা।  
-নেহা মামনি তোমার তো দামি দামি পোশাক তাহলে তুমি পড়াশোনায় এত খারাপ কেন?  ঠিক মতো তো পড়াই বলতে পারো না।  
স্যারের কথা শুনে নেহা মাথা নিচু করে বসে পড়লো।   স্যার মেহেরাবকে বললো 
-তোমার ছুটি তো গতপরশু দিন পর্যন্ত ছিলো।  গতকাল আসোনি কেন? 
 শুভ্র উঠে দাড়িয়ে 
-স্যার ও আসছিলো কিন্তু জানেন তো নবীনরা আসলে 
-হুম বুঝেছি।  যায় হোক সবার সাথে পরিচয় করাই দি।  
আরোহী উঠে দাঁড়িয়ে 
-স্যার আমি ওর সাথে পরিচয় বিনিময় করবো না।  আমাকে যেতে হবে।  

আরেহীর সাথে নেহা সহ অনেকে দাঁড়িয়ে পড়লো৷  স্যার বলে উঠলো 
-সবাই বসো ।  


স্যার যে কথাটা বললো সেটা শুনে সবাই হা করে পড়লো 

(Waiting for next part)

Post a Comment

Thanks for your Support 💖

Previous Post Next Post